ঢাকা, বুধবার, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩১

বিসিবি পরিচালক হতে তামিমের সামনে যেসব বাধা ও নিয়ম কানুন অপেক্ষা করছে

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৪ সেপ্টেম্বর ১৪ ১১:৪৮:১০
বিসিবি পরিচালক হতে তামিমের সামনে যেসব বাধা ও নিয়ম কানুন অপেক্ষা করছে

বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালকে নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে যে জল্পনা-কল্পনা চলছে, তা মূলত তার ক্রিকেট খেলা চালিয়ে যাওয়া নাকি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) প্রশাসনিক দায়িত্বে যুক্ত হওয়া নিয়ে। তামিম ইকবালের ক্রিকেটীয় ক্যারিয়ার যেমন বর্ণাঢ্য, তেমনি তার নেতৃত্বগুণ এবং ক্রিকেট নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বিসিবির প্রশাসনিক পরিসরে তার ভূমিকা নিয়ে আগ্রহ বাড়িয়েছে। তবে বিসিবির পরিচালক হওয়ার পথ তামিমের জন্য সরল নয়। এখানে বিসিবির গঠনতন্ত্র ও প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার বেশ কিছু ধাপ রয়েছে, যা তাকে অতিক্রম করতে হবে।

তামিমের সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়ে আলোচনা

সম্প্রতি বিসিবির কিছু কর্মকর্তার বক্তব্য থেকে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে যে তারা তামিমকে আরও কিছুদিন ক্রিকেটে দেখতে চান। তবে এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলেছে তামিমের বিসিবির পরিচালকের দায়িত্বে আসার গুঞ্জন। তামিম বেশ কয়েকবার বিসিবির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে বৈঠক করেছেন, যার ফলে এই আলোচনাটি আরও উসকে উঠেছে। বিশেষ করে, জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে বিসিবি চেয়ারম্যানের বৈঠকে তামিমের উপস্থিতি এই ধারণা আরও শক্তিশালী করেছে যে তিনি ক্রিকেটের বাইরেও ভূমিকা নিতে পারেন।

বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পরিচালক হওয়ার ধাপ

বিসিবির পরিচালকের পদে আসার জন্য কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। প্রথমত, তামিমকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্রিকেট থেকে অবসর নিতে হবে, কারণ একজন সক্রিয় ক্রিকেটার হিসেবে তিনি এই পদে নির্বাচিত হতে পারবেন না। এরপর তাকে বিসিবির কাউন্সিলর হতে হবে। কাউন্সিলরশিপ হচ্ছে একটি প্রাথমিক ধাপ, যা বিসিবির নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের যোগ্যতা দেয়।

বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, কাউন্সিলর হওয়া বেশ জটিল একটি প্রক্রিয়া। কাউন্সিলর হতে হলে তাকে তিনটি ক্যাটাগরির মধ্যে যে কোনো একটির আওতায় থাকতে হবে:

1. বিভাগীয় বা জেলা কাউন্সিলর: বিভাগীয় বা জেলা ক্রীড়া সংস্থার অন্তর্ভুক্ত কাউন্সিলর হতে হলে সংশ্লিষ্ট জেলা বা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি বা প্রতিনিধির সুপারিশ প্রয়োজন। তামিম চট্টগ্রাম বিভাগের ক্রিকেটার হওয়ায়, এই ক্যাটাগরি থেকে কাউন্সিলরশিপ পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে এর জন্য কোনো শূন্যপদ তৈরি হতে হবে, অর্থাৎ বর্তমান কাউন্সিলরকে পদত্যাগ করতে হবে।

2. জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (NSC) মনোনীত কাউন্সিলর: বিসিবি পরিচালকদের নির্বাচনেও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (NSC) মনোনীত কাউন্সিলর হিসেবে তামিমের স্থান পেতে পারেন। তবে এটি নির্ভর করবে বর্তমান কাউন্সিলরদের পদত্যাগ বা শূন্যপদ তৈরি হওয়ার উপর।

3. প্রাক্তন খেলোয়াড় ক্যাটাগরি: বিসিবির ‘সি’ ক্যাটাগরির কাউন্সিলর হিসেবে প্রাক্তন জাতীয় খেলোয়াড়দের মনোনীত করা হয়। যেহেতু তামিম একজন প্রাক্তন অধিনায়ক, তিনি এই ক্যাটাগরিতেও মনোনীত হতে পারেন। তবে এখানেও কাউন্সিলরশিপের জন্য শূন্যপদের প্রয়োজন হবে।

পরিচালকের দায়িত্ব ও শূন্যপদ

বিসিবিতে বর্তমানে কিছু পরিচালকের পদ শূন্য রয়েছে বা শূন্য হওয়ার পথে। যেমন, খালিদ মাহমুদ সুজন ও নাইমুর রহমান দুর্জয় সম্প্রতি পদত্যাগ করেছেন। তবে এগুলোর যেকোনো একটি পদের জন্য তামিমের নির্বাচিত হওয়া নির্ভর করবে বিসিবির সিদ্ধান্তের উপর। বিসিবি যদি এগুলো পূরণ করতে উপ-নির্বাচনের আয়োজন করে, তামিমকে প্রথমে ওই ক্যাটাগরির কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হতে হবে। এরপর পরিচালকের পদের জন্য নির্বাচন করতে হবে।

তামিমের জন্য আরও একটি সম্ভাবনা হতে পারে ক্লাব ক্যাটাগরির কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচন করা, তবে এখানেও প্রক্রিয়া একই। কাউন্সিলরশিপের জন্য একটি শূন্যপদের প্রয়োজন হবে এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে।

সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ ও জটিলতা

তামিম যদি ক্রিকেট খেলা চালিয়ে যেতে চান, তাহলে বিসিবির প্রশাসনিক দায়িত্বে আসার এই সব আলোচনা আপাতত স্থগিত হয়ে যাবে। কারণ একজন সক্রিয় খেলোয়াড় হিসেবে বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পরিচালক হওয়া সম্ভব নয়। তাছাড়া, বিসিবির পরিচালকের দায়িত্ব নিতে হলে তাকে একটি পরিষ্কার প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে, যা শুধু তার সিদ্ধান্তের উপর নয়, বিসিবির অভ্যন্তরীণ নীতি ও পলিসির উপরও নির্ভর করবে।

বিসিবির বর্তমান বোর্ডের মেয়াদ আর এক বছর বাকি থাকায়, তামিমকে যদি পরিচালকের দায়িত্বে আনতে হয়, তবে তাকে দ্রুত প্রক্রিয়াটি শুরু করতে হবে। অন্যথায়, বর্তমান আলোচনা চলমান থাকলেও তিনি হয়তো সরাসরি প্রশাসনিক দায়িত্বে আসতে পারবেন না।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে