ঢাকা, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

করোনায় ভয়াবাহ হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম, একদিনেই আক্রান্ত ৫৯

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২০ মে ০৮ ১৪:১৪:৪২
করোনায় ভয়াবাহ হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম, একদিনেই আক্রান্ত ৫৯

বৃহস্পতিবার রাতে সিভাসু থেকে এ রিপোর্ট হাতে আসার পর মুহুর্তের জন্য স্তব্ধ হয়ে যান চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। বারবার চেক ক্রসচেক করে শুক্রবার বেলা ১টা ৫ মিনিটে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রামে বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির।

বৃহস্পতিবার ( ৮ মে ) চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেজে (বিআইটিআইডি) ১৯৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে নমুনায় করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় ১৯ জনের।

এছাড়া চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) ল্যাবে এদিন ৬১টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে মোট ৪০ জনের। যা চট্টগ্রামে এযাবৎ কালের রেকর্ড করোনা শনাক্ত। এছাড়া কক্সবাজারে চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার এক রোগীর করোনা শনাক্ত হয়েছেন। সব মিলিয়ে বৃহস্পতিবার একদিনেই চট্টগ্রামে ৫৯ জনের করোনা সনাক্ত হলো।

ক্রমাগতই বাড়ছিল আক্রান্তের সংখ্যাস্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ৩ মে চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটে বিআইটিআইডিতে ১৮৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এসব নমুনায় করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় ৫ জনের। এ ছাড়া সিভাসু ল্যাবে পরীক্ষায় আরও ৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়। সব মিলিয়ে এদিন মোট ১৩ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয় চট্টগ্রামে।

৪ মে বিআইটিআইডি ল্যাবে নতুন ২৪৩টি নমুনা পরীক্ষায় ২২ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। তাদের মধ্যে ১৬ জনই চট্টগ্রামের বাসিন্দা। পরদিন ৫ মে বিআইটিআইডি ল্যাবে আরও নতুন ২৩৯টি নমুনা পরীক্ষায় ৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়।

কিন্তু কারিগরি ত্রুটির কারণে এ দুইদিন কোনো ফল জানাতে পারেনি সিভাসু ল্যাব। ৬ মে সিভাসু ল্যাবের আগের দুই দিনে (৪ ও ৫ মে) পরীক্ষিত ১২২টি নমুনার ২২টি নমুনা পজিটিভ হয়। এর মধ্যে ১২ জন চট্টগ্রামের।

ওই রাতে চট্টগ্রামের বিশেষায়িত হাসপাতাল বিআইটিআইডিতে ১৯০ নমুনা পরীক্ষায় আরও নতুন ১২ জন করোনা রোগী শনাক্ত হন। তাদের মধ্যে ১১ জন চট্টগ্রামের বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। সবমিলিয়ে বৃহস্পতিবারের আগের চারদিনেই নতুন করে শনাক্ত হন ৫৮ রোগী

পাঁচ দিনে আট মৃত্যুশুধু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাই বাড়ছে না চট্টগ্রামে। গত চারদিনের তথ্যগুলো যাচাই করতে গিয়ে জানা গেছে, এই দিনগুলোতে শনাক্ত ৫৮ রোগীর ৬ জন এখন আর বেঁচে নেই। ৩ মে চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটে বিআইটিআইডিতে ১৮৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে যে ৫ জনের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছিল তাদের একজন আগেই মারা যান বলে সেদিন জানায় স্বাস্থ্য বিভাগ।

পরদিন ৪ মে সকালে জ্বর-শ্বাসকষ্টসহ করোনা উপসর্গ নিয়ে নগরের এনায়েত বাজারে এক প্রবাসীর মৃত্যু হয়। পরে সেদিন রাতেই বিআইটিআইডি থেকে তার করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসে।

৬ মে বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এসকান্দর উল্লাহ নামের এক বিএনপি নেতার মৃত্যু হয়।

সর্বশেষ ৮ মে চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেজে (বিআইটিআইডি) যে ১৯ জনের করেনা শনাক্ত হয়েছে তার দুজন এখন বেঁচে নেই। এছাড়া সিভাসুতে শনাক্ত ৪০ জনের কতজন মারা গেছে তা এখনো নির্ণয় করা যায়নি।

সবমিলিয়ে চট্টগ্রামে এখন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৯৭ জন। এর মধ্যে ঢাকা, রাজবাড়ী, কুমিল্লা ও কক্সবাজারে শনাক্ত ৭ ব্যক্তিও রয়েছেন।

এ নিয়ে চট্টগ্রামে এক শিশুসহ মোট ১৪জন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এ ছাড়া আইসোলেশনে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ছয়জন। মৃত্যুর পর তাদের মধ্যে পাঁচজনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষায় করোনা নেগেটিভ পাওয়া যায়।

এ ছাড়া সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন মোট ৩২ জন। তাদের মধ্যে পাঁচ পুলিশ সদস্যও রয়েছেন। বর্তমানে ১৭৭ জন রোগী আইসোলেশনে আছেন। হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন ২০৩ জন।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে