ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১

ব্যাপক প্রমাণ রয়েছে, চীনের গবেষণাগার থেকে করোনা উৎপত্তি

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২০ মে ০৪ ১৩:৫৯:৫৫
ব্যাপক প্রমাণ রয়েছে, চীনের গবেষণাগার থেকে করোনা উৎপত্তি

এর আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি অত্যন্ত আত্মবিশ্বাস নিয়ে বলতে পারেন, বিশ্বব্যাপী মহামারি সৃষ্টিকারী ভাইরাসটি চীনের পরীক্ষাগার (ল্যাব) থেকে এসেছে।

সোমবার (৪ মে) বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে জাননো হয়, করোনাভাইরাসের ব্যবস্থাপনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এই দোষারোপ বেইজিংয়ের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের উত্তাপ ছড়াচ্ছে।

পম্পেওর এই মন্তব্য এমন সময়ে করেছেন, যে সময়টিতে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অংশ সতর্কতার সঙ্গে ভাইরাসের লকডাউন তুলতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। আর বিভিন্ন দেশের সরকার অর্থনীতি পুনরায় চালু করার চেষ্টা করছে।

বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২ লাখ ৪৫ হাজার মানুষ মারা গেছেন। ৩৪ লাখ মানুষ এতে সংক্রমিত। বিশ্বের অর্ধেকের মতো মানুষ এতে লকডাউনে চলে গেছে এবং বৈশ্বিক অর্থনীতি মহামন্দার পর সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছে।

ডিসেম্বরে উহান শহরে প্রথম প্রাদুর্ভাব ঘটা ভাইরাসটি সম্পর্কে ক্রমাগত চীনের সমালোচনা করে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। সম্প্রতি তিনি অভিযোগ করেন, তার পুনর্নির্বাচিত কর্মসূচি ভন্ডুল করতেই চীন আগেভাগে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেনি।

বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন, ভাইরাসটি প্রাণী থেকে মানুষে প্রবেশ করেছে। এটি উহানের একটি বাজার থেকে ছড়ায়, যেখানে বিভিন্ন বন্য প্রাণীর মাংস বিক্রি করা হয়ে থাকে।

মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা অফিসের পরিচালক বলেন, বিশ্লেষকেরা এখনো এই প্রকোপের প্রকৃত উৎস নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছেন।

সিআইএর সাবেক প্রধান পম্পেও এবিসিকে বলেন, কোভিড -১৯ ভাইরাস যে মানবসৃষ্ট নয়, এতে তিনি একমত। তবে তিনি ট্রাম্পের চেয়ে একধাপ এগিয়ে মন্তব্য করেছেন, উহান ল্যাব থেকে যে এটি ছড়িয়েছে, এর যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। তবে এ প্রমাণ তিনি হাজির করতে পারেননি।

পম্পেও বলেন, আমি মনে করি, পুরো বিশ্ব বিষয়টা এখন দেখতে পাবে। মনে রাখবেন, বিশ্বকে সংক্রমিত করার এবং নিম্নমানের পরীক্ষাগার চালানোর ইতিহাস চীনের রয়েছে। শুরুতে এ ভাইরাসকে খাটো করে দেখার প্রয়াসটি ছিল কমিউনিস্টদের গুজব বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা, যা প্রচুর ঝুঁকি তৈরি করেছিল। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অত্যন্ত চতুর। আমরা এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের দায়বদ্ধ করে রাখব।

একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্প মার্কিন গোয়েন্দাদের ভাইরাসটির উৎপত্তি সম্পর্কে আরও সুনিশ্চিত হওয়ার নির্দেশ দেন।

গত সোমবার ট্রাম্প সতর্ক করেন, চীনকে দায়ী করার অনেক পথ রয়েছে। আমরা তাদের ওপর খুশি নই। আমরা পুরো পরিস্থিতি নিয়ে সন্তুষ্ট নই। কারণ, আমরা বিশ্বাস করি, এটি উৎস থেকে বন্ধ করা যেত।

এদিকে, ‘ফাইভ আইস’ নামে গোয়েন্দা জোটের একটি প্রতিবেদন প্রকাশে বলা হয়েছে প্রাণঘাতী এ ভাইরাস চীনের ল্যাব থেকে ছড়িয়েছে।

ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, চীন ভাইরাসটির উৎস সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে মিথ্যা বলেছে। ভাইরাসে সংক্রমণ সম্পর্কে প্রথমে যারা কথা বলেছিলেন তারা অদৃশ্য হয়ে গেছে এবং পশ্চিমারা যাতে ভ্যাকসিন তৈরি করতে না পারে সেজন্য ভাইরাসের নমুনা হস্তান্তর করতে অস্বীকার করেছিল।

১৫ পৃষ্ঠার বিস্ফোরক এই প্রতিবেদনে এমন ইঙ্গিতও দেয়া হয়েছে যে, ভাইরাসটি উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি থেকেই ছড়িয়েছে। তবে এই দাবিটি প্রাথমিকভাবে একটি ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হিসেবে প্রত্যাখ্যান করেছে চীন। তারা জোর দিয়ে বলেছে ভাইরাসটি স্থানীয় সামুদ্রিক মাছের বাজার থেকে এসেছে।

একই সময়ে, একটি সিনিয়র গোয়েন্দা সূত্র ফক্স নিউজকে বলেছে যে, বেশিরভাগ গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিশ্বাস করে কভিড-১৯ উহান ল্যাবেই সৃষ্টি হয়েছিল, তবে এটি দুর্ঘটনাক্রমে বাইরে ছড়িয়ে পড়েছে বলে ধারণা তাদের।

ইংলিশ ভাষী শীর্ষস্থানীয় পাঁচটি দেশ- আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং কানাডার গোয়েন্দাদের একটি সম্মিলিত জোট 'ফাইভ আইস'।

তারা নিজেদের মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি করে থাকে। জোটের প্রতিবেদনে ভাইরাসটি ছড়ানোর বিষয়ে চীনকে দায়ী করা হয়েছে এবং এটাকে 'আন্তর্জাতিক স্বচ্ছতার উপর হামলা' বলে অভিহিত করা হয়েছে।

চীন কিভাবে সারা বিশ্বে এই মহামারিটি ছড়িয়ে দিয়েছিল সে সম্পর্কে প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, চীন শুরু থেকেই ভাইরাসটি সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। ভাইরাসটি যে মানব সংক্রামক সেটা লুকিয়েছে। ফলে এটা দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পেরেছে। ভাইরাসটির অসম্পূর্ণ বাহকগুলোর বর্তমান প্রমাণকেও সেন্সর করেছে এবং অন্যান্য দেশগুলোর কাছে নমুনা হস্তান্তরের বিষয়ে অস্বীকার করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেইজিং ভাইরাস সম্পর্কিত তথ্য ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করতে ডিসেম্বরের প্রথম দিকে সার্চ ইঞ্জিনগুলো সেন্সর করা শুরু করেছিল।

এদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চীনের দাবির সাথে একমত ছিল। প্রতিবেশি দেশগুলোর উদ্বেগ সত্ত্বেও ভাইরাসটির মানব-থেকে মানবিক সংক্রমণকে অস্বীকার করেছে।

গোয়েন্দাদের সম্মিলিত এই জোট দেখেছে যে, চীনের কাছে ডিসেম্বরের প্রথম দিক থেকে ভাইরাসটির মানব সংক্রমণের প্রমাণ রয়েছে। তবুও বেইজিং ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত এটা অস্বীকার করে গেছে।

নথিতে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, চীন দেশজুড়ে অভ্যন্তরীণ ভ্রমণকারীদের উপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, কিন্তু বিশ্বের অন্যান্য দেশে ভ্রমণ অব্যাহত রাখতে বলেছে। এটা ভাইরাসটি ছড়িয়ে দেয়ার সুস্পষ্ট ইচ্ছের প্রমাণ।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে