ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১

করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে ফলাফল জানালেন চীনের গবেষকরা

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২০ এপ্রিল ২৬ ১৩:২১:১৯
করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে ফলাফল জানালেন চীনের গবেষকরা

চীনে সাম্প্রতিক একটি ট্রায়ালে এইচআইভি ও ফ্লুয়ের কয়েকটি ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছিল করোনা রোগীদের ওপর। কিন্তু ফলাফল তাতে কোনও কাজ হয়নি। বরং দেখা গেছে, ওই ওষুধগুলোর পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া রোগীকে ঝুকিত্র ফেলে দিচ্ছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল অনলাইন এ খবর প্রকাশ করেছে।

ডেইলি মেইলের খবরে বলা হয়, ৮৬ জন করোনা রোগীর ওপর প্রয়োগ করা হয়েছিল এইচআইভির দুটি ওষুধ ‘লোপিনাভির’ ও ‘রিতোনাভির’। গবেষণা চালিয়েছেন গুয়াংঝাউ প্রদেশের সেন্টার ফর ইনফেকশাস ডিজিজেস অফ গুয়াংঝাউ এইটথ পিপল্স হসপিটালের চিকিৎসকেরা।

ওই ট্রায়ালে ফ্লুয়ের ওষুধ ‘আরবিডল’ নিয়েও পরীক্ষানিরীক্ষা চালানো হয়। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে বানানো এই ওষুধের চল রয়েছে এখন শুধুই চিন ও রাশিয়ায়। কিন্তু তিনটি ওষুধই কোভিড রোগীদের সারিয়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছে।

যাদের ওপর ওষুধগুলো প্রয়োগ করা হয়েছিল, দেখা গেছে পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ায় তাদের কারও হয়েছে ডায়রিয়া বা কেউ তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছেন। আবার কারও খিদে কমে গেছে। ট্রায়ালের পর গবেষকরা জানিয়েছেন, কোভিড-১৯ রোগীদের সারিয়ে তুলতে এই ওষুধগুলি ব্যবহার না করাই ভাল। এর আগে অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগ ‘রেমডেসিভির’ও কোভিড-১৯ রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।

সহযোগী গবেষক লিংহুয়া লি বলেছেন, আমরা দেখেছি, লোপিনাভির, রিতোনাভির বা আরবিডল কোনওটাই কাজ করছে না কোভিড-১৯ রোগীদের ক্ষেত্রে। বরং ওই সব ওষুধ প্রয়োগের ফলে নানা ধরনের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার শিকার হতে হয়েছে রোগীদের।

গবেষকরা অবশ্য এও জানিয়েছেন, তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছেন যারা সবে বা দিনকয়েক হলো আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়। তবে যে সব করোনা রোগী প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেছেন, তাদের ওপর এ সব ওষুধ হয়তো বা কার্যকর হতে পারে।

এর আগে একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, ‘লোপিনাভির’ ও ‘রিতোনাভির’ গবেষণাগারে কোভিড-১৯ ভাইরাসের বংশবৃদ্ধি রুখতে পারে।

এই ওষুধগুলো কোভিড-১৯ রোগীদের সারিয়ে তুলতে পারে কি না, তা খতিয়ে দেখতে ব্রিটেনেও চলছে একটি ট্রায়াল, যার নেতৃত্বে রয়েছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। যে ট্রায়ালের নাম দেয়া হয়েছে ‘রিকভারি’।

চীনা গবেষকরা ৮৬ জন করোনা রোগীকে তিনটি দলে ভাগ করেছিলেন। একটি দলে ছিলেন ৩৪ জন। তাদের ওপর প্রয়োগ করা হয়েছিল লোপিনাভির ও রিতোনাভির। ৩৫ জনের আর একটি দলের ওপর প্রয়োগ করা হয়েছিল আরবিডল। বাকি ১৭ জনকে দেয়া হয়েছিল অন্যান্য ওষুধ। ১৪ দিন পর তিনটি দলের রোগীদের ক্ষেত্রেই ফলাফল হয়েছে একই রকমের।

গবেষকরা জানিয়েছেন, লোপিনাভির, রিতোনাভির বা আরবিডলের প্রয়োগে করোনা রোগীদের জ্বর বা কফ কমতে দেখা যায়নি। দেখা যায়নি ফুসফুসের প্রদাহ কমতেও। এর আগে ব্রিটিশ দৈনিক ‘ফিনান্সিয়াল টাইমস’-এর একটি রিপোর্টে জানানো হয়েছিল, ‘রেমডেসিভির’ চীনের ২৩৭ জন চীনের রোগীর ওপর প্রয়োগ করা হয়েছিল। তার মধ্যে ১৫৮ জনকে সরাসরি ওষুধ দেয়া হয়েছিল এবং ৭৯ জনকে একটি নিয়ন্ত্রিত দলে রেখে প্রয়োগ করা হয়েছিল।

অর্থাৎ এই ৭৯ জনকে দু’তিনটি দলে ভাগ করে একটি দলকে রেমডেসিভির এবং অন্য দলগুলিকে প্রচিলত ওষুধ দিয়ে বা কোনও ওষুধ না দিয়ে পার্থক্য বোঝার চেষ্টা হয়েছিল। এক মাস পর দেখা যায়, নতুন ওষুধ দেয়া ব্যক্তিদের মধ্যে মৃত্যুর হার বেশি। মৃত্যুর হার ১২.৮ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৩.৯ শতাংশ হয়ে যায়। এ ছাড়া ১৮ জন রোগীর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়ায় তাদের ওষুধ প্রয়োগ করা বন্ধ করে দেয়া হয়। সেই কারণেই এই টিকা ব্যর্থ বলে ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে