ঢাকা, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বাঁচতে চায় তারা

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২০ এপ্রিল ১৫ ১৩:১৯:২২
বাঁচতে চায় তারা

এই প্রতিষ্ঠানের এসব রাস্তায় পরিত্যক্ত অবস্থায় কুড়িয়ে পাওয়া প্রবীণ ও শিশুদের খাবার চিকিৎসাসহ যাবতীয় খরচ মূলত আসে বিভিন্ন মানুষের ভালোবাসা অর্থাৎ ব্যক্তিগত দান বা সাহায্য থেকে। কিন্তু বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে এতজন মানুষের খাদ্য সরবরাহ করাটাই কঠিন হয়ে পড়েছে সামাদ্দারের পক্ষে।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন নেওয়া অলাভজনক এবং একক ব্যক্তি উদ্যোগে গঠিত এ কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী ও তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মিল্টন সমাদ্দার। নিজস্ব আয় এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরের ব্যক্তি উদ্যোগ ও সহায়তায় মিল্টন সমাদ্দার কেন্দ্রটি পরিচালনা করেন। একজন চিকিৎসক, হুজুর, রান্না ও পরিচর্যাসহ এখানে কর্মী আছেন প্রায় ২৫ জন।facebook.com/childandoldagecare.org/ এই ফেইজবুক পেইজটির মাধ্যমে সামাদ্দার নিয়মিত দিয়ে যাচ্ছেন তার কার্যক্রমের সকল আপডেট।

এ বিষয়ে মিল্টন সামাদ্দার বলেন, 'বর্তমানে দেশের করোনা পরিস্থিতিতে খুবই খারাপ অবস্থার মধ্যে আছি আমরা। যদিও আমার ব্যক্তিগত ব্যবসা, নার্সিং এজেন্সি রয়েছে কিন্তু জানেন তো সব এখন বন্ধ। এছাড়া আমাদের প্রতিষ্ঠান পরিচালনার খরচের বড় একটা অংশ আসতো ফেইসবুক শুভাকাঙ্ক্ষীদের থেকে পাওয়া স্বেচ্ছা দান থেকে। সেটিও এখন আসছে প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য। কিন্তু বর্তমানে সবকিছু মিলিয়ে আশ্রম পরিচালনায় ব্যয় হচ্ছে ১১ লাখ টাকা।'

বর্তমান অবস্থায় দেশের হৃদয়বান অর্থশালী ব্যক্তিদের সহযোগিতায় চান সমাদ্দার। তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাবা-মা ও শিশুদের সঠিকভাবে খাবার-চিকিৎসা দিয়ে সুস্থভাবে বাঁচিয়ে রাখতে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। সেটা না পাওয়া গেলে সকলকে নিয়ে কি পরিস্থিতিতে পড়তে হবে সেটা ভাবতেই দু'চোখে অন্ধকার দেখছি।

মিল্টন সমাদ্দার বলেন, 'এখানে এখন পর্যন্ত কারও শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। কিন্তু প্রবীণদের অনেকের শরীরেই ঘা, পচন তো আগে থেকেই আছে। আর করোনা সতর্কতার জন্যও মাসিক বাজেট বেড়ে যাচ্ছে ৩/৪ লাখ টাকা।'

তার প্রতিষ্ঠানে মিল্টন মূলত আশ্রয় দেন পরিচয়হীন, পরিত্যাগ বা পরিবার থেকে বিতাড়িত অসহায় বৃদ্ধ বাবা-মাকে। করোনাকালেও প্রবীণের আসা বন্ধ হয়নি কেন্দ্রটিতে। করোনাকালেই মিরপুরের একটি সড়কে পড়ে থাকা ৮৫ বছর বয়সের জাহানারাকে নিয়ে এসেছেন তারা।

কল্যাণপুরের (বাড়ি: ৪৬২, সড়ক: ০৮ দক্ষিণ পাইকপাড়া) দুটি বাড়িতে মিল্টন সামাদ্দারের ভালোবাসা নিয়ে ১৬টি কক্ষে থাকেন ৬৬ জন প্রবীণ ও ৬টি শিশু। বর্তমানে মোট ৭২ জন নিয়ে তার ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’। প্রবীণদের বাবা-মা এবং শিশুদের সন্তানের মতোই আদর-স্নেহে রেখেছেন মিল্টন।

এই প্রতিষ্ঠানের এসব রাস্তায় পরিত্যক্ত অবস্থায় কুড়িয়ে পাওয়া প্রবীণ ও শিশুদের খাবার চিকিৎসাসহ যাবতীয় খরচ মূলত আসে বিভিন্ন মানুষের ভালোবাসা অর্থাৎ ব্যক্তিগত দান বা সাহায্য থেকে। কিন্তু বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে এতজন মানুষের খাদ্য সরবরাহ করাটাই কঠিন হয়ে পড়েছে সামাদ্দারের পক্ষে।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন নেওয়া অলাভজনক এবং একক ব্যক্তি উদ্যোগে গঠিত এ কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী ও তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মিল্টন সমাদ্দার। নিজস্ব আয় এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরের ব্যক্তি উদ্যোগ ও সহায়তায় মিল্টন সমাদ্দার কেন্দ্রটি পরিচালনা করেন। একজন চিকিৎসক, হুজুর, রান্না ও পরিচর্যাসহ এখানে কর্মী আছেন প্রায় ২৫ জন।https://www.facebook.com/childandoldagecare.org/ এই ফেইজবুক পেইজটির মাধ্যমে সামাদ্দার নিয়মিত দিয়ে যাচ্ছেন তার কার্যক্রমের সকল আপডেট।

এ বিষয়ে মিল্টন সামাদ্দার বলেন, 'বর্তমানে দেশের করোনা পরিস্থিতিতে খুবই খারাপ অবস্থার মধ্যে আছি আমরা। যদিও আমার ব্যক্তিগত ব্যবসা, নার্সিং এজেন্সি রয়েছে কিন্তু জানেন তো সব এখন বন্ধ। এছাড়া আমাদের প্রতিষ্ঠান পরিচালনার খরচের বড় একটা অংশ আসতো ফেইসবুক শুভাকাঙ্ক্ষীদের থেকে পাওয়া স্বেচ্ছা দান থেকে। সেটিও এখন আসছে প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য। কিন্তু বর্তমানে সবকিছু মিলিয়ে আশ্রম পরিচালনায় ব্যয় হচ্ছে ১১ লাখ টাকা।'

বর্তমান অবস্থায় দেশের হৃদয়বান অর্থশালী ব্যক্তিদের সহযোগিতায় চান সমাদ্দার। তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাবা-মা ও শিশুদের সঠিকভাবে খাবার-চিকিৎসা দিয়ে সুস্থভাবে বাঁচিয়ে রাখতে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। সেটা না পাওয়া গেলে সকলকে নিয়ে কি পরিস্থিতিতে পড়তে হবে সেটা ভাবতেই দু'চোখে অন্ধকার দেখছি।

মিল্টন সমাদ্দার বলেন, 'এখানে এখন পর্যন্ত কারও শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। কিন্তু প্রবীণদের অনেকের শরীরেই ঘা, পচন তো আগে থেকেই আছে। আর করোনা সতর্কতার জন্যও মাসিক বাজেট বেড়ে যাচ্ছে ৩/৪ লাখ টাকা।'

তার প্রতিষ্ঠানে মিল্টন মূলত আশ্রয় দেন পরিচয়হীন, পরিত্যাগ বা পরিবার থেকে বিতাড়িত অসহায় বৃদ্ধ বাবা-মাকে। করোনাকালেও প্রবীণের আসা বন্ধ হয়নি কেন্দ্রটিতে। করোনাকালেই মিরপুরের একটি সড়কে পড়ে থাকা ৮৫ বছর বয়সের জাহানারাকে নিয়ে এসেছেন তারা।

মিল্টন জানান, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিরপুরেই জাহানারার ৬ তলা বাড়ি আছে। স্বামী প্রবাসী। সন্তানদের সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি, তবে তিনি আত্মীয়দের সঙ্গে থাকতেন।

এখানে যারা আছেন তাঁদের প্রায় প্রত্যেকেরই এ ধরনের একটি করে জীবনের গল্প আছে। থানায় প্রত্যেকের নামে সব তথ্য দিয়ে সাধারণ ডায়েরি করা আছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছবি বা জীবনের গল্পগুলো দিলে কারও কারও সন্তান বা আত্মীয়রা এসে নিজেদের কাছে নিয়েও যান, তবে সে সংখ্যাটা খুবই কম।

তবে প্রবীণ সঙ্গে এখানে আশ্রয় পেয়েছে ময়না, টিয়া, রাতুল , সোয়াত, তৈয়বা ও সৃষ্টি। একদম ছোটজনের বয়স মাত্র ৩ বছর। সবাই প্রতিবন্ধী নয়, তবে সবাই অভিভাবকহীন। কেউ এসেছে থানার মাধ্যমে আবার কেউ এসেছে মানবাধিকার সংগঠনের সহায়তায়। কাউকে কাউকে রাস্তা থেকে তুলে আনা হয়েছে।

‘বাবা-মা তো আর আইলো না! এখন আমি কি করাম।’ কথাগুলো বলতেই চোখে জমতে থাকা বিন্দু বিন্দু জলে নিষ্পাপ শিশুর বুকফাটা কান্নায় স্বাভাবিক থাকা প্রায় অসম্ভব কোনো সুস্থ মানুষের পক্ষে।

আবেগী কথাগুলো বলছিল কল্যাণপুর চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ারের আশ্রয়ে থাকা ৫ বছর বয়সী শিশু রাতুল। যার মা তাকে কোনো এক অজানা কারণে ফেলে রেখে যায় রাস্তায় এক চায়ের দোকানে। রাতুলের ভাষ্যমতে, তার বাড়ি বরিশালের কোনো এক গ্রামে। মা বলেছিলেন, বেড়াতে নিয়ে যাবে ঢাকা। আর সেই মতো ঢাকা বেড়াতে আসা। শিশুপার্কে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশে মায়ের সঙ্গে যাত্রা রাতুলের। কিন্তু মাঝপথে মা রাতুলকে বলেছিল, বাবা তুমি এখানে একটু বসো, আমি চিপস নিয়ে আসছি। একটা চায়ের দোকানে বসিয়ে রেখে, সেই যে মা গেছে আর ফেরেনি। তারপর চা দোকানির মাধ্যমে থানা এবং থানার মাধ্যমে তার স্থান হয়েছে মিলটন সামাদ্দারের চাইল্ড কেয়ারে।

রাতুলের কোনো অভিমান বা রাগ নেই তাদের ওপর। এখনো বিশ্বাস করে বাবা-মা তাকে এসে নিয়ে যাবে। বড় হয়ে ডাক্তার হতে চায় রাতুল। ডাক্তার হয়ে চেম্বার বন্ধ করে মায়ের জন্য ভাত আর মাছের ঝোল কিনে নিয়ে যাবে, মা প্রাণ ভরে খাবে আর সে মাকে আদর করবে।

এ ধরনের অসংখ্য অমানবিকতার গল্প লুকিয়ে রয়েছে মিলটন সামাদ্দারের চাইল্ড কেয়ারে। আড়াই বছরের নিষ্পাপ ফুটফুটে শিশু সোয়াদ। এই নিষ্ঠুর পৃথিবীতে তার আগমনটাই ছিল কিছু পুরুষরূপী পশুর বুনো লালসার কারণে। তার মা পাচার হয়ে যান ভারতে। আর এভাবেই এক সময় জন্ম নেয় মায়াবী চেহারার শিশু সোয়াদ। তবে সোয়াদের মাও জীবনভর পাপের দায় নিয়ে চলতে নারাজ। তিনিও গ্রহণ করেননি সোয়াদকে। তাই তার ঠিকানা এখন মিলটন সামাদ্দারের চাইল্ড কেয়ারে। সোয়াদ বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী। তবে দেড় লাখ টাকা হলে শ্রবণ যন্ত্র বসিয়ে পুরো স্বাভাবিক করে তোলা সম্ভব তাকে। এই শিশুটির কি অদ্ভুত একটা যাদু আছে। দ্রুত সে নিজেকে অন্যের ভালোবাসার পাত্র করে নিতে পারে।

অন্য শিশুগুলোর গল্পও কিন্তু ভিন্ন নয়। এখানে থাকা ৩ বছর বয়সী ময়নাকে পাওয়া গেছে পলিব্যাগে মোড়া অবস্থায় ডাস্টবিনে। আর ১ বছর বয়সী টিয়ার মা হাসপাতালের বেডে রেখে পালিয়েছে। আর একটি ৩ বছরের মেয়ে বাচ্চা যার মা তাকে রিকশায় বসিয়ে রেখে চিপস কিনে নিয়ে আসার কথা বলে আর ফেরেনি। কারো বাবা-মা পলিথিনে ফেলে গেছে ডাস্টবিনে, কাউকে রিকশায় বসিয়ে পালিয়েছে না, কাউকে বেড়াতে যাওয়ার নাম করে ফেলে গেছে।

এসব শিশু ও প্রবীণদের আস্তাকুঁড়ে থেকে কুড়িয়ে বুকে টেনে নিয়েছেন, দিয়েছেন আশ্রয়, পিতৃস্নেহে তাদের বড় করছেন মিল্টন। আর তিনি তার জীবনকেই উৎসর্গ করতে চান পরিত্যক্ত বা অভিভাবকহীন বৃদ্ধ ও শিশুদের জন্য। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে তার একার পক্ষে এ সংগ্রামে সফল হওয়া কঠিন। এ জন্য প্রয়োজন সবার মানবিকতা বোধকে জাগ্রত করে যার যার স্থান থেকে একটু এগিয়ে আসা। তথ্য সুত্রঃ সময় সংবাদ

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে