ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

করোনা নিয়ে নতুন দুঃসংবাদঃ উপসর্গ ছাড়াও হতে পারে করোনাভাইরাস

লাইফস্টাইল ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২০ এপ্রিল ১৩ ১১:৪৯:৩৫
করোনা নিয়ে নতুন দুঃসংবাদঃ উপসর্গ ছাড়াও হতে পারে করোনাভাইরাস

কারণ, ৫০ ভাগ মানুষ জানতে পারে না বা বুঝতে পারে না কারণ তাদের ক্ষেত্রে এ উপসর্গগুলো খুব একটা থাকে না। সামান্য যে উপসর্গগুলো থাকে তা হয়তো মামুলি গলা ব্যাথা, অরুচি বা ডায়রিয়া। এগুলো হলো নন-রেসপিরেটরি সিমটম বা উপসর্গ।

করোনাভাইরাস সংক্রমণে দেহে রেসপিরেটরি (শ্বাস-প্রশ্বাস) এবং নন রেসপিরেটরি সিমটম উপসর্গ দেখা দেয়। রেসপিরেটরি সিমটম হচ্ছে ফুসফুস প্রদাহের ফলে উপসর্গ, যেমন হাঁচি, কাশি, তীব্র শ্বাস কষ্ট। নন-রেসপিরেটিরি সিমটম মানে সর্দিকাশি, হাঁচি, শ্বাসকষ্ট এসব ছাড়া অন্যান্য সিমটম বা উপসর্গ।

তার মানে জ্বর,সর্দি, কাশি, হাঁচি, শ্বাসকষ্ট ছাড়াও কোভিড-১৯ হতে পারে? হ্যাঁ। হতে পারে। সেটাও গবেষণায় উঠে আসছে। এবং এর জন্যে রোগ কোভিড-১৯ রোগ মারাত্মকভাবে ছড়ায়।

নন-রেসপিরেটরি সিমটমগুলো কী কী?

মাথা ব্যাথা, খাবারে অরুচি, খাবারের স্বাদ টের না পাওয়া, ঘ্রাণ শক্তি বিনাশ হওয়া, ডায়রিয়া, শরীর ব্যথা, অচেতন হওয়া, খিচুনি এগুলোই হলো নন-রেস্পিরেটরি সিমটম। কোন কোন ক্ষেত্রে এসব উপসর্গ খুব সামান্য আকারে ক'দিন থাকতে পারে, নাও থাকতে পারে আবার থেকেও কোন রুপ ক্ষতি সাধন বা জানান না দিয়েই রোগী স্বাভাবিক হয়ে যায়। রোগী টেরই পায় না যে তার করোনাভাইরাস হয়ে গেছে।

এতে কেন এত ভয়ের কারণ?

ভয়ের কারণ হলো, এই এসিমটোম্যাটিক রোগীরা নিজের অজান্তে এসিমটোম্যাটিক ভাইরাস ক্যারিয়ার হিসাবে কাজ করেন এবং তারা সে ভাইরাস তাদের পরিবার, বন্ধু বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন সবার কাছে অনবরত ছড়াতে থাকেন। ফলে সবার করোনাভাইরাস সংক্রমণ অগোচরে হয়ে যায়।

আর সবার ক্ষেত্রেই যে করোনাভাইরাস মামুলি প্রদাহ সৃষ্টি করবে তা নয়, অনেকের ক্ষেত্রে ভয়াবহ রেসপিরেটরি সিমটম করে জীবননাশ করে। এটা হয় ঘরের বৃদ্ধ মুরুব্বীদের ক্ষেত্রে। তাদের শরীরে ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ কম থাকায় রেসপিরেটরি কম্পলিকেশনের ফলে সৃষ্ট মাল্টি অর্গান ফেইলর হয়ে এদের অনেকেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে পারেন। এমনকি কম বয়সীরাও ইদানীং মারা যাচ্ছেন করোনাভাইরাসে।

উপসর্গহীন করোনাভাইরাস, করণীয় কী?

সেজন্যই সবার উচিত লকডাউন এবং সোশ্যাল ডিসটেন্স শতকরা একশত ভাগ মেনে চলা। সোশ্যাল ডিসটেন্স হলো বাহিরের কারো হতে নিরাপদ দূরে থাকা। আপনি জানেন না বাইরে আপনার পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া লোকটি হয়তো এসিমটোম্যাটিক ক্যারিয়ার (উপসর্গবিহীন রোগী)। তার কথায়, কাশি, হাঁচি ও সর্দির মাধ্যমে মুক্ত বাতাসে ভাইরাস ছেড়ে দিচ্ছে। আর আপনি সে ভাইরাস নিয়ে নিচ্ছেন অজান্তে নিজ দেহে এবং অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

মাস্কের সঙ্গে কেন চিকিৎসকরা চশমা পরেন?

করোনাভাইরাস কেবল মুখ আর নাক দিয়ে দেহে ঢুকে, তা নয়। এই ভাইরাস কোষের উপরে থাকা যরিসেপ্টর ( ACE-2) এর মাধ্যমে ঢুকে। মুখ ও নাকের আবরনী কোষে সে রিসেপ্টর থাকে। এ ছাড়াও চোখের কনজাংটিভার কোষে এই ACE-2 রিসেপ্টর থাকে। ফলে, ভাইরাস চোখ থেকে নেত্রনালী হয়ে প্রথমে নাক এবং পরে ফুসফুসে যায়।

আর আমাদের ফুসফুসে কোষ 'এলভ্যুলিতে' প্রচুর পরিমানে ACE-2 রিসেপ্টর থাকে। ফলে ফুসফুসে তীব্র প্রদাহ বা নিউমোনিয়া হয় করোনাভাইরাসের আক্রমনে।

সেজন্যে নিতান্ত প্রয়োজনে চলাফেরায় মাস্কের পাশাপাশি চশমা ব্যবহার করা ভালো। যে রকম চশমা করোনাভাইরাস সেবাদানকারী ডাক্তার বা নার্সরা পরেন।

করোনাভাইরাস যেভাবে নষ্ট হয়

ভাইরাস হাতের সংস্পর্শে এসে নাকে মুখে ঢুকে তাই হাত সাবান দিয়ে ধুতে বলা হয়। হাতে তেল জাতীয় পদার্থ লাগলে যেমন সাবান দিয়ে হাত ধোতে হয় তেমনি হাতের করোনাভাইরাস নষ্ট করতে সাবান দিয়ে হাত ধোতে হয়। কারণ করোনাভাইরাসের গায়ে তৈল জাতিয় পদার্থের একটি আবরণ থাকে যা সাবানের ছোঁয়ায় নষ্ট হয়ে যায়, ফলে হাতে লেগে থাকা করোনাভাইরাস সঙ্গে সঙ্গেই ধ্বংস হয়ে যায়।

লেখক: ডা. মোহাম্মদ সাঈদ এনাম

সহকারী অধ্যাপক, সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ।তথ্য সুত্রঃ যুগান্তর

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে