ঢাকা, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

৬ ছেলে বাড়ি থেকে বের করে দিল বৃদ্ধা মাকে

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২০ এপ্রিল ০৩ ২৩:৪৬:২১
৬ ছেলে বাড়ি থেকে বের করে দিল বৃদ্ধা মাকে

কিন্তু বর্তমানে ছেলেমেয়েদের কেউ তাকে ভাত-কাপড় দেয় না। উল্টো জমি লিখে নেয়ার পাশাপাশি একমাত্র শোবার ঘরটিও দখলে নিয়ে তারা বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন এই অসহায় বৃদ্ধাকে। বৃহস্পতিবার বিকালে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।

গড়মাটি গ্রামের মাতব্বর বাবুল হোসেন বলেন, হাজির উদ্দিন স্বচ্ছল মানুষ ছিলেন। প্রায় আট বছর আগে হাজির উদ্দিন মারা যান। বিধবা স্ত্রী স্বামীর রেখে যাওয়া একটি ঘরে বসবাস করতেন। জায়গাজমি বর্গা দিয়ে যা আসত, তা দিয়ে ভালোই চলত। বাবার মৃত্যুর বছর না ঘুরতেই ছয় ছেলে বাবার জমি ভাগাভাগি করে আলাদা হয়ে যান। মেয়ের বিয়ে হওয়ায় শ্বশুরবাড়িতে চলে যায়। তবু বুঞ্জনী বেওয়ার সময়টা ভালোই কাটছিল। তবে কয়েক বছরের মধ্যে ছেলেমেয়েরা নানা প্রলোভনে তার সব জমি নিজেদের নামে রেজিস্ট্রি করে নেন।

থাকার একমাত্র ঘরটিও পঞ্চম ছেলে শহিদুল দখল করে নেন। এতে তিনি পুরোপুরি ছেলেদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। ভাত কাপড়ে টান পড়ে তার। বয়সের ভারে চলতে পারেন না। এক ছেলের বাড়িতে সপ্তাহ না যেতেই তাকে অন্য ছেলের বাড়িতে ঠেলে দেয়া হয়।

সবশেষে বৃহস্পতিবার চতুর্থ ছেলে লুৎফর রহমান তার মাকে সাফ জানিয়ে দেন, তাকে খাওয়ানোর মতো খাবার তার ঘরে নেই। তিনি একটা ভ্যান ডেকে ব্যবহারের কিছু জিনিসপত্রসহ তার মাকে গ্রামের দফাদার ইয়াসিন আলীর বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।

ইয়াসিন আলী বলেন, বুঞ্জনী বেওয়ার সব ছেলেমেয়ে মোটামুটি শিক্ষিত ও সচ্ছল। বড় ছেলে মতিউর রহমান গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য। অন্যরা ব্যবসা ও কৃষিকাজ করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। অথচ বৃদ্ধার মুখে তিন বেলা খাবার জোটে না। পরনের কাপড়, ওষুধ কেনার টাকা চাইতে হয় অন্যের কাছে।

বুঞ্জনী বেওয়া বলেন, আমি সব জমি ফিরে চাই। জমি না থাকায় ওরা আমাকে ভাত দেয় না। মরে গেলে তো ওই জমি তোরাই পাবি।

বড় ছেলে মতিউর রহমান বলেন, মায়ের সম্পত্তি শেষ হওয়ার পর ভাই ও তাদের বউরা ভাতকাপড় দেয়া নিয়ে পরস্পরের মধ্যে ঠেলাঠেলি শুরু করেছেন। এ কারণে মা বিচারের আশায় বাড়ি থেকে বের হয়েছেন। পালা করে ভরণপোষণের দায়িত্ব দিলে তিনি তা পালন করবেন। অন্য ভাইয়েরা তা মানবেন কি না, তা নিয়ে তিনি পারিবারিক সভা করবেন বলে জানান।

উপজেলা চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, গড়মাটি গ্রামে গিয়ে ওই বৃদ্ধার সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছি। ইউএনওকে বলেছি, এ ব্যাপারে আইনগত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে।

ইউএনও আনোয়ার পারভেজ বলেন, ঘটনাটি মেনে নেয়ার মতো না। শেষ পর্যন্ত করোনার ভয় দেখিয়ে শুক্রবার বড় ছেলের কাছে মাকে রেখে আসা হয়েছে। ১১ এপ্রিল ছয় ছেলে ও তাদের বউদের সবাইকে আমার কার্যালয়ে ডেকেছি। সমাধান না হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে