ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

করোনার মেসেজ শেয়ার করলেই গ্রেফতার

২০২০ এপ্রিল ০৩ ১০:৪৯:৩৭
করোনার মেসেজ শেয়ার করলেই গ্রেফতার

কিছুদিন হল হোয়াটস‌অ্যাপে ঘুরছে এমনই মেসেজ। কখনও ইংরেজিতে, আবার কখনও বাংলায়। তবে এই মেসেজের বক্তব্য সঠিক নয়। করোনাভাইরাস নিয়ে তথ্য আদান প্রদান দণ্ডনীয় অপরাধ নয়।

গত ২৪ মার্চ রাত আটটায় জাতির উদ্দেশে বার্তায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেন। ওই দিন রাতেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে ২০০৫ সালের বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের ৬ ধারার ২ (আই) অনুচ্ছেদ বলবৎ করে। কেন্দ্র ও রাজ্যের সমস্ত বিভাগকে এই আইন কার্যকর করতে বলে।

কী বলছে বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের ৬ (২)(আই) অনুচ্ছেদ?এই আইন অনুযায়ী সাধারণ মানুষের ঘরের বাইরে বেরনোর উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও পরিষেবা ছাড়া সমস্ত অফিস, কারখানা, দোকানপাট বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়। করোনাভাইরাসের গোষ্ঠী সংক্রমণ ঠেকাতে এই আইন প্রয়োগ করা হয়। এই অনুচ্ছেদে কোনও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে রকম তথ্য আদান প্রদানের বিষয়ে কিছু বলা নেই। এ বার আসা যাক ওই হোয়াটস‌অ্যাপ মেসেজের শেষের অংশে। মেসেজটিতে ৬৮, ১৪০ এবং ১৮৮ ধারার কথা বলা হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের ৬৮ ধারায় এই আইন সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশ অনুমোদনের বিষয়ে বলা হয়েছে। এখানে শাস্তির কোনও উল্লেখ নেই। বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে সব মিলিয়ে রয়েছে ৭৯টি ধারা, তাই ১৪০ বা ১৮৮ ধারার ব্যাপারটাও ঠিক নয়।

অনেকের মনে হতেই পারে ভারতীয় দণ্ডবিধিতে এই ধারাগুলি তো রয়েছে। কিন্তু সেই ধারাগুলিতে সোশ্যাল মিডিয়া মেসেজ ছড়ানোর ক্ষেত্রে কোনও সাজার কথা বলা আছে কি?

ভারতীয় দণ্ডবিধি বা ফৌজদারি আচরণ বিধি, কোনওটির ১৪০ নম্বর ধারাই এই সংক্রান্ত বিষয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। পড়ে থাকল ১৮৮ নম্বর ধারাটি। ভারতীয় দণ্ডবিধির এই ধারাটিও সোশ্যাল মিডিয়ায় তথ্য আদান প্রদানের ক্ষেত্রে কোনও বিধি নিষেধের কথা বলে না।

তা হলে শাস্তি কখন হতে পারে?বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের ৫৪ নম্বর ধারা অনুযায়ী, আতঙ্ক তৈরি করতে পারে, কেউ বিপর্যয় সংক্রান্তএমন কোনও ভুয়া তথ্য ছড়ালে তা দণ্ডনীয় অপরাধ হবে। সে ক্ষেত্রে এক বছর পর্যন্ত জেল অথবা জরিমানা অথবা দুটোই হতে পারে। এই ক্ষেত্রে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৫ ধারার ১(বি) অনুযায়ীও আপনার বিরুদ্ধে মামলা রুজু হতে পারে।

ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৫ ধারার ১(বি)অনুচ্ছেদ বলে কেউ যদি কোনও ব্যক্তিকে আতঙ্কিত করার চেষ্টা করেন, কোনও গোষ্ঠীকে আতঙ্কিত করেন, বা এমন কোনও অপরাধে ইন্ধন জোগান যার ফলে সমাজের সম্প্রীতি নষ্ট হয় বা রাষ্ট্র ব্যবস্থার উপর আঘাত আসে, তবে এই ধারায় অভিযুক্ত করা হবে। দোষী ব্যক্তির ছ’বছর পর্যন্ত জেল এবং জরিমানা হতে পারে।

সূত্র: আনন্দবাজার

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে