করোনা রোধে মাস্ক না পরা একটি ‘বড় ভুল’
![করোনা রোধে মাস্ক না পরা একটি ‘বড় ভুল’](https://www.24updatenews.com/thum/article_images/2020/03/31/cina.jpg&w=315&h=195)
সে জন্যই মিডিয়াগুলোর অনুরোধে সাড়া দেওয়া, বিশেষত বিদেশি সাংবাদিকদের সুযোগ দিতে পারেননি তারা। গত দুই মাস ধরে ‘সায়েন্স জার্নাল’ চীনের সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) মহাপরিচালক জর্জ গাও-এর সাক্ষাৎকার নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। গত সপ্তাহে তিনি তাদের অনুরোধে সাড়া দিলেন। ২৭ মার্চ সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয় সায়েন্স জার্নালের অনলাইন ভার্সনে। জাগো নিউজের পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটি অনুবাদ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মাহমুদা কবির শাওন। এতে সহযোগিতা করেছেন একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মুশতাক ইবনে আয়ূব—
ড. জর্জ গাও-এর তত্ত্বাবধানে ২০০০ গবেষক ও বিজ্ঞানী কাজ করেন। তিনি নিজেও একজন গবেষক বটে। জানুয়ারিতে চীনের যে গবেষক দল সর্বপ্রথম করোনাভাইরাসকে (সার্স-কভ-২) আলাদা করে এর জিন বিন্যাস (সিকোয়েন্সিং) করেন, গাও সেই দলেরই একজন ছিলেন। কোভিড-১৯ নিয়ে প্রকাশিত পেপারগুলোর মধ্যে ‘দা নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন’ এ প্রকাশিত হওয়া সর্বাধিক পঠিত দুইটি পেপার; যেগুলো সর্বপ্রথম কোভিড-১৯ এর মহামারী সংক্রান্তবিদ্যা এবং ক্লিনিক্যাল বৈশিষ্ট্যগুলো সম্পর্কে আলোকপাত করে। সেখানে তিনি কো-অথর (সহ লেখক বা সহ রচয়িতা) হিসেবে ছিলেন। এছাড়াও ‘দা ল্যানসেট’ জার্নালে কোভিড-১৯ নিয়ে তাঁর আরও ৩টি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
এ মহামারীর প্রতিক্রিয়া বোঝার জন্য চীন এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যৌথ উদ্যোগে চীনা গবেষক এবং আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের একটি দল পুরো চীনের বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করেন এবং এ মহামারী সংক্রান্ত একটি যুগান্তকারী প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। গাও-এর গবেষকদল এ প্রতিবেদনে অনেক তথ্য দিয়ে সাহায্য করেন।
জর্জ গাও প্রথমে পশু-চিকিৎসক হিসেবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হলেও পরবর্তীতে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণরসায়নে (বায়োকেমিস্ট্রি) পিএইচডি করেন। এছাড়া ইম্যুনোলজি এবং ভাইরোলজি নিয়ে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পোস্টডক করেন। তিনি মূলত দুর্বল লিপিড ঝিল্লি দিয়ে আবৃত ভাইরাস নিয়ে–বিশেষত কোষের মধ্যে এসব ভাইরাসের প্রবেশ এবং এক প্রজাতি থেকে অন্য প্রজাতিতে এদের স্থানান্তর কীভাবে হয়, সেই বিষয়ে গবেষণা করেন। নতুন করোনাভাইরাস এ দুর্বল লিপিড ঝিল্লিযুক্ত ভাইরাস গ্রুপের মধ্যে পড়ে।
সায়েন্স’র সাক্ষাৎকারের প্রশ্নগুলো গাও বেশকিছুদিন ধরে মেসেজ, ভয়েস মেইল এবং ফোন কলের মাধ্যমে দিয়েছেন। পাঠকের সুবিধার জন্য সাক্ষাৎকারটি স্পষ্ট এবং সংক্ষিপ্তরূপে প্রকাশ করেছে সায়েন্স। নিচে তার বঙ্গানুবাদ দেওয়া হলো—
প্রশ্ন: চীন যেভাবে কোভিড-১৯ এর মোকাবেলা করেছে, সেখান থেকে অন্যান্য দেশগুলো কী শিখতে পারে?ড. জর্জ গাও: যেকোনো ধরনের সংক্রামক রোগ মোকাবেলার জন্য সামাজিক দূরত্বায়ন একটি আবশ্যিক কৌশল, বিশেষত রোগটি যদি শ্বসনতন্ত্রের সংক্রমণ হয়ে থাকে। সর্বপ্রথম আমরা ওষুধবিহীন কৌশলগুলো ব্যবহার করি। কারণ কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে কোনো নির্দিষ্ট বাঁধাদানকারী বা ওষুধ নেই, এমনকি কোনো ভ্যাকসিনও নেই। দ্বিতীয়ত, আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে আপনি প্রতিটি আক্রান্ত ব্যক্তিকে আলাদা করেছেন। তৃতীয়ত, আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংস্পর্শে যারা এসেছে তাদেরকে অবশ্যই কোয়ারেন্টাইন বা আলাদা করে রাখতে হবে, আক্রান্ত ব্যক্তিদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগে যারা এসেছে তাদেরকে খুঁজে বের করতে এবং কোয়ারেন্টাইনে আলাদা করতে আমরা অনেক সময় ব্যয় করেছি। চতুর্থত, সব জনসমাগম স্থগিত করুন। চলাচল সীমিত করে দিন, আর সীমাবদ্ধ চলাচলের জন্যই লকডাউন করা হয়-ফরাসি ভাষায় যাকে cordon sanitaire বলা হয়।
প্রশ্ন: চীনে লকডাউন শুরু হয় ২৩ জানুয়ারি থেকে প্রথম উহান শহরে। পরবর্তীতে এটি হুবেই প্রদেশের উহানের প্রতিবেশী শহরগুলোতেও প্রসারিত হয়। অন্যান্য প্রদেশগুলোতে এ নিষেধাজ্ঞা সীমিত ছিল। এ সব বিষয় কিভাবে সমন্বয় করা হয়েছিল এবং এ ক্ষেত্রে পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলোর প্রচেষ্টা পর্যবেক্ষণে ‘তত্ত্বাবধায়নকারীদের’ ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল?ড. জর্জ গাও: এ ক্ষেত্রে অবশ্যই নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং একতা থাকতে হবে। সে জন্য প্রয়োজন আঞ্চলিক এবং জাতীয় পর্যায়ে দৃঢ় নেতৃত্ব। জনগণের খুব কাছে থেকে কাজ করে এমন তত্ত্বাবধায়ক এবং সমন্বয়কারী খুবই দরকার। তত্ত্বাবধায়কদের জানতে হবে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ এবং সন্দেহভাজন আক্রান্ত ব্যক্তি কে হতে পারে। আঞ্চলিক তত্ত্বাবধায়কদের অবশ্যই খুব সতর্ক থাকতে হবে। তারাই হলো মূল চাবি।
প্রশ্ন: অন্য দেশগুলো কী ভুল করছে?ড. জর্জ গাও: আমার মতে, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপ সবচেয়ে বড় যে ভুলটি করছে, সেটি হলো মাস্ক না পরা। করোনাভাইরাস ড্রপলেট (বাতাসের ক্ষুদ্র কণা) এবং ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায়। এ ভাইরাসের বিস্তার লাভে ড্রপলেট খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। কেননা আমরা যখন কথা বলি; তখন সব সময় আমাদের মুখ থেকে ড্রপলেট বের হয়। অনেকেরই উপসর্গহীন এবং প্রাথমিক উপসর্গসহ সংক্রমণ রয়েছে। তারা মাস্ক পরিধান করলে মুখ থেকে ভাইরাস সম্বলিত এ ড্রপলেটগুলো বের হওয়া এবং অন্যদেরকে সংক্রমণ করা রোধ করতে পারবে।
প্রশ্ন: অন্যান্য নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কী হতে পারে? যেমন চায়না বিভিন্ন স্টোর, বাড়ি এবং গণপরিবহনের স্টেশনের প্রবেশপথে থার্মোমিটারের বহুল ব্যবহার করছে।ড. জর্জ গাও: হ্যাঁ। চায়নার ভেতরে আপনি যেখানেই যান না কেন থার্মোমিটার দেখতে পাবেন। আপনাকে যতবার সম্ভব মানুষের তাপমাত্রা নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। যাতে খুব বেশি জ্বরে আক্রান্ত লোককে অবশ্যই আলাদা করা যায় এবং জনসমাগমে প্রবেশ থেকে বাধা দেওয়া যায়। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বিশেষভাবে লক্ষণীয় একটি প্রশ্ন হলো- ভাইরাসটি পরিবেশে ঠিক কতটা স্থিতিশীল। এটি লিপিড আবরণীযুক্ত ভাইরাস হওয়ায় মানুষ ভাবছে এটি দুর্বল বা ক্ষণস্থায়ী এবং বিশেষ করে পৃষ্ঠের তাপমাত্রা বা আর্দ্রতার প্রতি সংবেদনশীল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ফলাফল এবং চীনের পর্যবেক্ষণ উভয় থেকেই দেখা যায়, ভাইরাসটি কোনো কিছুর পৃষ্ঠে নিজের ধ্বংস হওয়া প্রতিরোধ করে টিকে থাকতে পারে।। ভাইরাসটি অনেক পরিবেশেই বাঁচতে সক্ষম। এ বিষয়ে এখনো আমাদের বিজ্ঞান ভিত্তিক উত্তর দরকার।
প্রশ্ন: চীনের উহানে কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তিদের, এমনকি মৃদু উপসর্গযুক্ত ব্যক্তিদেরও বৃহৎ ব্যবস্থাপনায় নেওয়া হয়েছে এবং পরিবারের সাথে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। বিষয়টি কি অন্য দেশগুলোর বিবেচনায় নেওয়া উচিত?ড. জর্জ গাও: আক্রান্ত ব্যক্তিদের অবশ্যই আলাদা করতে হবে। এ বিচ্ছিন্নকরণ সর্বত্র হওয়া উচিত। কোভিড-১৯ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ তখনই সম্ভব হবে; যখন সংক্রমণের উৎসকে আলাদা করা সম্ভব হবে। আর এজন্যই আমরা আলাদা হাসপাতাল তৈরি করেছি এবং স্টেডিয়ামগুলোকে হাসপাতালে রূপান্তরিত করেছি।
প্রশ্ন: চীনে কোভিড-১৯ সংক্রমণের উৎস নিয়ে অনেক জিজ্ঞাসা আছে। চীনা গবেষকগণের প্রতিবেদন অনুযায়ী সর্বপ্রথম কোভিড-১৯ ধরা পড়ে ২০১৯ সালের ১ ডিসেম্বর। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন সরকারের তথ্য অনুযায়ী ২০১৯ সালের নভেম্বরেই কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী পাওয়া গিয়েছিল এবং প্রথম কেস ছিল ১৭ নভেম্বর ২০১৯। এ প্রতিবেদনের বিষয়ে আপনি কী মনে করেন?ড. জর্জ গাও: নভেম্বরে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়ে এখনো কোনো শক্ত প্রমাণ নেই। আমরা এখনো ভাইরাসটির উৎস ভালোভাবে বোঝার চেষ্টা করে যাচ্ছি।
প্রশ্ন: উহানের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা হুয়ানান সামুদ্রিক খাবারের বাজারের সাথে আক্রান্ত ব্যক্তিদের একটি বড় অংশের সম্পৃক্ততা বের করতে পেরেছিলেন এবং ১ জানুয়ারি সেটি বন্ধ করে দেন। তাদের ধারণা ছিল বাজারে বিক্রি করা এবং নৃশংসভাবে হত্যা করা কোনো প্রাণি থেকে ভাইরাসটি মানুষের মাঝে সংক্রমিত হয়েছে। কিন্তু এনইজেএমে আপনার প্রকাশিত পেপার, যেখানে কেসগুলোর পূর্বাপর ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ অন্তর্ভুক্ত ছিল। সেখানে আপনি বলেছেন, প্রথম পাঁচজন আক্রান্ত ব্যক্তির চারজনের সাথেই হুয়ানান সামুদ্রিক খাবারের বাজারের কোনো সম্পর্ক নেই। আপনার কি মনে হয়, এ সামুদ্রিক খাবারের বাজার এ ভাইরাসের সম্ভাব্য উৎস হতে পারে? নাকি এটি কেবলই একটি বিভ্রান্তিমূলক তথ্য-একটি বিবর্ধিত ফ্যাক্টর কিন্তু মূল উৎস নয়?ড. জর্জ গাও: খুবই ভালো প্রশ্ন। একদম শুরু থেকে সবাই বাজারটিকে ভাইরাসের উৎস হিসেবে ভেবেছে। এ মুহূর্তে আমি ভাবছি বাজারটি সংক্রমণের প্রাথমিক স্থান হতে পারে অথবা হতে পারে এখানে সংক্রমণের বিবর্ধন হয়েছে। তার মানে এটি একটি বৈজ্ঞানিক প্রশ্ন এবং এ ক্ষেত্রে দুটি সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রশ্ন: ভাইরাসটির জিন বিন্যাস (সিকোয়েন্স) সাথে সাথে প্রকাশ না করায় চীন সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছিল। দি ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে ৮ জানুয়ারি নতুন করোনাভাইরাস নিয়ে একটি লেখা প্রকাশিত হয়। কিন্তু এটি চীনা সরকারের বিজ্ঞানীদের থেকে আসেনি। কেন এমনটি হলো?ড. জর্জ গাও: দি ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের খুবই ভালো অনুমান ছিল এটি। জিন বিন্যাস সম্পর্কে হু’কে জানানো হয়েছিল এবং আমার মনে হয় নিবন্ধটি প্রকাশিত হওয়া এবং সরকারিভাবে সিকোয়েন্স শেয়ার করার মধ্যকার সময়ের পার্থক্য কেবল কয়েক ঘণ্টা। আমি মনে করি না, একদিনের বেশি পার্থক্য আছে এর মাঝে।
প্রশ্ন: কিন্তু ভাইরাল সিকোয়েন্সের একটি পাবলিক ডাটাবেজ অনুযায়ী পরবর্তীতে জানা যায় যে, ৫ জানুয়ারি প্রথম সিকোয়েন্সটি চীনা গবেষকরা জমা দিয়েছিলেন। সুতরাং এর মাঝে কমপক্ষে ৩ দিন ছিল; যার মাঝে আপনারা এ নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে জানতেন। যদিও প্রশ্নটি মহামারীর গতিপথ বদলাবে না। কিন্তু সত্যি কথা বলতে, সিকোয়েন্সটি প্রকাশ্যে জানানোর আগে কিছু একটা ঘটেছিল।ড. জর্জ গাও: আমার তা মনে হয় না। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে বৈজ্ঞানিক সহকর্মীদের সাথে তথ্যটি শেয়ার করেছি। তবে এটি জনস্বাস্থ্যের সাথে সম্পর্কিত বলে নীতিনির্ধারকদের মাধ্যমে এটি জনসম্মুখে প্রকাশ করার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হয়েছিল। আপনি নিশ্চয়ই জনসাধারণকে আতঙ্কিত করতে চান না, তাই না? কোনো দেশের কোনো মানুষই ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারেনি যে, ভাইরাসটি মহামারী সৃষ্টি করবে। এটি এখন পর্যন্ত প্রথম নন-ইনফ্লুয়েঞ্জা মহামারী।
প্রশ্ন: মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণের সুস্পষ্ট প্রমাণ সম্পর্কে চীনা বিজ্ঞানীরা ২০ জানুয়ারির আগে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিতে পারেননি। এটি যে মহামারী হবে তা কি বুঝতে চীনের বিজ্ঞানীদের অসুবিধা হয়েছিল? এ বিষয়ে আপনি কী ভাবেন?ড. জর্জ গাও: তখন পর্যন্ত মহামারী সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। প্রথম থেকে আমরা খুবই উন্মত্ত এবং অজানা একটি ভাইরাসের মুখোমুখি হয়েছি। ইতালি, ইউরোপের অন্যান্য জায়গায় এবং যুক্তরাষ্ট্রেও একই অবস্থা। একদম শুরু থেকেই বিজ্ঞানীরা, জনসাধারণ সবাই ভেবেছে- ‘ঠিক আছে, এটি তো কেবল একটি ভাইরাস।’
প্রশ্ন: চীনে সংক্রমণের হার এখন কমে খুবই ধীর হয়ে গিয়েছে এবং নতুন আক্রান্ত ব্যক্তিদের সবাই মূলত দেশে প্রবেশকারী, এ তথ্য কি সঠিক?ড. জর্জ গাও: হ্যাঁ। এ মুহূর্তে চীনে কোনো আঞ্চলিক সংক্রমণ নেই। কিন্তু চীনের জন্য এখন নতুন সমস্যা হচ্ছে আগমনকারী আক্রান্ত ব্যক্তি। অনেক আক্রান্ত ভ্রমণকারী ব্যক্তি চীনে আসছে।
প্রশ্ন: তবে চীন যখন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে; তখন কী হবে? আপনি কি ভাবেন যে, এখন পর্যন্ত পর্যাপ্ত লোক সংক্রমিত হয়েছে। যাতে herd immunity ভাইরাসটিকে দূরে রাখতে পারে?ড. জর্জ গাও: এখনো অবশ্যই আমাদের herd immunity নেই। কিন্তু আমরা অ্যান্টিবডি পরীক্ষা থেকে আরও সুনির্দিষ্ট ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছি। যাতে প্রকৃতপক্ষে কত লোক সংক্রমিত হয়েছে, তা জানতে পারি।
প্রশ্ন: তাহলে বর্তমানে কৌশল কী হবে? কার্যকর ওষুধ খুঁজে বের করতে সময় নেওয়া?ড. জর্জ গাও: হ্যাঁ। আমাদের বিজ্ঞানীরা ভ্যাকসিন এবং ওষুধ-দু’টো নিয়েই কাজ করছে।
প্রশ্ন: এখন পর্যন্ত পরীক্ষিত সব ওষুধের মধ্যে রেমডেসিভিরকে বিজ্ঞানীরা এ ভাইরাসের বিরুদ্ধে সবচেয়ে কার্যকর মনে করছেন। ঠিক কবে নাগাদ চীনে এ ওষুধের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তথ্য আসবে বলে মনে করেন আপনি?ড. জর্জ গাও: এপ্রিলে।
প্রশ্ন: চীনের বিজ্ঞানীরা কি এমন কোনো প্রাণির মডেল তৈরি করেছেন, যা প্যাথোজেনেসিস অধ্যয়ন এবং ওষুধ ও ভ্যাকসিন পরীক্ষার ক্ষেত্রে যথেষ্ট শক্তিশালী হবে বলে আপনি মনে করেন?ড. জর্জ গাও: এ মুহূর্তে আমরা বানর এবং ট্রান্সজেনিক ইঁদুর-উভয় মডেলই ব্যবহার করছি। এদের ACE2 (মানুষের দেহে ভাইরাসের যে রিসেপ্টর) জিন আছে। ইঁদুর মডেল চায়নাতে ওষুধ এবং ভ্যাকসিন তৈরিতে প্রচুর ব্যবহৃত হয়। আমার মনে হয়, বানর মডেলের উপর গবেষণার বেশ কিছু পেপার শিগগিরই সামনে আসছে। আমদের বানর মডেল আসলেই কাজ করে এ বিষয়ে আমি আপনাকে নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে পারি।
প্রশ্ন: প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন করোনাভাইরাসকে ‘চায়না ভাইরাস’ বা ‘চাইনিজ ভাইরাস’ হিসেবে উল্লেখ করার বিষয়ে আপনার মতামত কী?ড. জর্জ গাও: একে ‘চাইনিজ ভাইরাস’ বলা অবশ্যই খুব একটা ভালো বিষয় নয়। ভাইরাসটি এ পৃথিবীর অন্তর্ভুক্ত। এটি সবার জন্যই সাধারণ শত্রু, কোনো ব্যক্তি বা দেশ বিশেষের নয়।
মূল সাক্ষাৎকার: জন কোহেন
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- এক নজরে দেখেনিন কে কত টাকা পুরস্কার পেলেন
- ১৪৪ ধারা জারি
- বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে যুক্ত হচ্ছে আরও ৪ ক্রিকেটার
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আহত সারজিস আলম
- বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্কোয়াড ঘোষণা করলো বিসিবি
- আজকের ১৮ ক্যারেট, ২১ ক্যারেট, ২২ ক্যারেট সোনা ও রুপার দাম
- সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের কথায় নতুন বার্তা
- বিপিএল শেষ, বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্কোয়াডে আসছে দুই পরিবর্তন
- আজকের ১৮ ক্যারেট, ২১ ক্যারেট, ২২ ক্যারেট সোনা ও রুপার দাম
- ধানমন্ডির ৩২ নম্বর ও দেশজুড়ে ভাঙচুরের পর আজহারী স্ট্যাটাস
- গণধোলাইয়ের পর পুলিশের হাতে সোপর্দ সাকিব
- ভিসা বন্ধ ঘোষণা
- লাখ টাকা পারিশ্রমিক নিলেন জেমি নিশাম
- বিপিএল ফাইনাল ম্যাচের সময় সূচি
- ফাইনাল ম্যাচের জন্য ফরচুন বরিশালের একাদশ