বিডিংয়ে অতিমূল্যায়িত ওয়ালটনের কাট-অফ প্রাইস
এই অবস্থায় জনস্বার্থে এ কোম্পানির বিডিং বাতিল হওয়া নিয়ে গুঞ্জন উঠেছে। এছাড়া বিডিং বাতিল হতে পারে বলে এরইমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।
ওয়ালটন বুক বিল্ডিং পদ্ধতির নিলামে প্রতিটি শেয়ার সর্বোচ্চ ২১১ টাকা দরে ইস্যু করার যোগ্যতা রাখে। আর পূণ:মূল্যায়ন সম্পদ বিবেচনায় হয় ২৬৪ টাকা। তবে নিলামে যোগ্য নামের কারসাঁজিকর বিনিয়োগকারীরা সেটাকে ৩১৫ টাকায় মূল্যায়ন করেছে। এক্ষেত্রে কোম্পানিটি শুরুতেই ৪৯ শতাংশ অতিমূল্যায়ন করেছে। যা পূন:মূল্যায়নকৃত সম্পদ বিবেচনায় নিলেও ১৯ শতাংশ অতিমূল্যায়ন করা হয়েছে। এই অতিমূল্যায়নের কারনে আগের কোম্পানিগুলো এখন কাট-অফ প্রাইস থেকে অনেক নিচে অবস্থান করছে। তবে ওইসব নামধারী যোগ্য বিনিয়োগকারীরা এখন সেইসব শেয়ারে আগ্রহ দেখায় না।
শেয়ারবাজারের স্বার্থে বুক বিল্ডিং পদ্ধতি ২০১৬ সালের শুরু থেকে চালু করা হলেও এরইমধ্যে তার অপব্যবহার শুরু হয়ে গেছে। এক্ষেত্রে শেয়ারের কাট-অফ প্রাইস নির্ধারনে এরইমধ্যে কোম্পানিগুলো ও যোগ্য বিনিয়োগকারীরা কারসাজিতে জড়িয়ে পড়েছে। এ পদ্ধতিতে শেয়ারবাজারে আসতে চাওয়া কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর যোগ্যতার তুলনায় বেশি করার জন্য এই কারসাজি করছে এবং এক্ষেত্রে সফল হচ্ছেন কারসাজিকারীরা।
২০১৬ সালে চালু হওয়ার পরে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ৭টি কোম্পানি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে। এই কোম্পানিগুলোর শেয়ারে যোগ্য নামের অযোগ্য বিনিয়োগকারীরা গড়ে ৫৬.২৮ টাকা কাট-অফ প্রাইস নির্ধারন করে। তবে কোম্পানিগুলোর বর্তমানে গড় বাজার দর নেমে এসেছে ৩৬.৩০ টাকায়। যা যোগ্য বিনিয়োগকারীদের মূল্যায়িত দরের তুলনায় ১৯.৯৮ টাকা বা ৩৫.৫০ শতাংশ কম। এছাড়া বুক বিল্ডিংয়ে সর্বশেষ তালিকাভুক্ত হওয়া এডিএন টেলিকম ছাড়া বাকি কোম্পানিগুলোর দর কাট-অফ প্রাইসের নিচে চলে এসেছে।
বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে যেকোন কোম্পানির শেয়ার দর বিবেচনায় ‘হিস্ট্রোরিকাল আর্নিংস বেজড ভ্যালু পার শেয়ার’পদ্ধতিকে সর্বোচ্চ বিবেচনায় নেওয়া হয়। এক্ষেত্রে প্রথমে কোম্পানির শেষ ৫ বছরের ওয়েটেড শেয়ারপ্রতি মুনাফাকে (ইপিএস) মূল্য-আয় অনুপাত (পিই রেশিও) হিসাবে ১০ দিয়ে গুণ করা হয়। এরপরে শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ (এনএভিপিএস) যোগ করার পরে ২ দিয়ে ভাগ করে এই দর নির্ধারন করা হয়। এ পদ্ধতিতে ওয়ালটনে শেয়ার দর হয় ২১১ টাকা এবং পূণ:মূল্যায়নসহ ২৬৪ টাকা।
ওয়ালটনের রেড হেরিং প্রসপেক্টাস অনুযায়ী, কোম্পানিটির গত ৫ বছরের ওয়েটেড ইপিএস ২৮ টাকা ৪২ পয়সা। আর এনএভিপিএস রয়েছে (পুনঃমূল্যায়নসহ) ২৪৩ টাকা ১৬ পয়সা। এ ক্ষেত্রে কোম্পানিটির ‘হিস্ট্রোরিকাল আর্নিংস বেজড ভ্যালু পার শেয়ার’ পদ্ধতিতে শেয়ারের দাম মূল্যায়ন হয় ২৬৩ টাকা ৬৮ পয়সা। আর পুনঃমূল্যায়ন ছাড়া ১৩৮ টাকা ৫৩ পয়সা এনএভিপিএসের ক্ষেত্রে শেয়ারের দাম হয় ২১১ টাকা ৩৬ পয়সা। তবে যোগ্য নামের অযোগ্য বিনিয়োগকারীরা কারসাজির মাধ্যমে ঠিক করেছে ৩১৫ টাকা।
বিএসইসির চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন বলেন, প্রিমিয়ামের ক্ষেত্রে কোম্পানিগুলোর জন্য বুক বিল্ডিং সিষ্টেমস বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বুক বিল্ডিং পদ্ধতির অপব্যবহার হচ্ছে। আর এই অপব্যবহার রোধে বিএসইসি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে বলে যোগ করেন। প্রয়োজনে বুক বিল্ডিং পদ্ধতি স্থগিত বা বন্ধ করা হবে বলেও হুশিয়ারি দেন। বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) আয়োজিত এক সেমিনার ও ‘বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ’ এর উদ্বোধনীতে তিনি এসব কথা বলেন।
বুক বিল্ডিং পদ্ধতির আগে ইস্যু ম্যানেজাররা ‘হিস্ট্রোরিকাল আর্নিংস বেজড ভ্যালু পার শেয়ার’ পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে কোম্পানির শেয়ার ইস্যু করার জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) আবেদন করতেন। এবং এর আলোকে কমিশন প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) অনুমোদন দিত। যদিও এখন প্রিমিয়ামে আসতে হলে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে আসতে হয়। সেক্ষেত্রে দর নির্ধারনে যোগ্য বিনিয়োগকারীরা মূল ভূমিকা রাখেন। তবে এখনো কোম্পানিগুলোকে ‘হিস্ট্রোরিকাল আর্নিংস বেজড ভ্যালু পার শেয়ার’পদ্ধতিতে দর গণনা করে দেখাতে হয়।
বুক বিল্ডিং পদ্ধতি চালুর আগে সব কোম্পানিকেই ‘হিস্ট্রোরিকাল আর্নিংস বেজড ভ্যালু পার শেয়ার’ পদ্ধতির যোগ্যতার চেয়ে কম দরে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) অনুমোদন দিয়েছে বিএসইসি। দেখা গেছে, ২০১৫ সালে ৮টি কোম্পানি প্রিমিয়ামে শেয়ার ইস্যু করে। তবে সব কয়টি কোম্পানি‘হিস্ট্রোরিকাল আর্নিংস বেজড ভ্যালু পার শেয়ার’পদ্ধতিতে নির্ধারিত দরের চেয়ে কম দরে শেয়ার ইস্যু করেছে। এরমধ্যে রিজেন্ট টেক্সটাইল ৩১ টাকা পাওয়ার যোগ্য হলেও ২৫ টাকা দরে শেয়ার ইস্যু করে। এছাড়া সিমটেক্স ৩৩ টাকার বিপরীতে ২০ টাকায়, কেডিএস এক্সেসরিজ ৩৪ টাকার বিপরীতে ২০ টাকায়, আমান ফিড ৮৬ টাকার বিপরীতে ৩৬ টাকায়, তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ ২৮ টাকার বিপরীতে ২৬ টাকায়, বাংলাদেশ স্টিল রি-রোলিং মিলস ৬৬ টাকার বিপরীতে ৩৫ টাকায়, শাশা ডেনিমস ৫৪ টাকার বিপরীতে ৩৫ টাকায় এবং ইফাদ অটোস ৬৩ টাকার বিপরীতে ৩০ টাকা দরে শেয়ার ইস্যু করেছে।
এদিকে ২০১৬ সালে একমাত্র প্রিমিয়ামে শেয়ার ইস্যু করা ডরিন পাওয়ার জেনারেশন ‘হিস্ট্রোরিকাল আর্নিংস বেজড ভ্যালু পার শেয়ার’ পদ্ধতিতে ৩৭ টাকা পাওয়ার যোগ্য ছিল। তবে ২৯ টাকা দরে শেয়ার ইস্যু করার অনুমোদন পেয়েছে।
২০১৭ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে বিবিএস ক্যাবলস ‘হিস্ট্রোরিকাল আর্নিংস বেজড ভ্যালু পার শেয়ার’পদ্ধতিতে শেয়ারপ্রতি ৩২ টাকা পাওয়ার যোগ্য। এছাড়া নাহি অ্যালুমিনিয়াম ২৪ টাকা, ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোডস ৩১ টাকা, প্যাসিফিক ডেনিমস ২০ টাকা, শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ ১৪ টাকা, নূরানি ডাইং অ্যান্ড সোয়েটার ১৩ টাকা পাওয়ার যোগ্য। তবে কোম্পানিগুলো শুধুমাত্র অভিহিত মূল্য ১০ টাকা দরে শেয়ার ইস্যু করার অনুমোদন পায়।
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- আইপিএল নিলাম: ২কোটি ৭০লাখ রুপিতে যে দলে সাকিব, দেখেনিন মুস্তাফিজ ও তাসকিনের অবস্থান
- দেশে টাকা পাঠানোর উত্তম সময়: সৌদি রিয়াল রেটের অবিশ্বাস্য লাফ, দেখেনিন আজকের রেট কত
- সৌদি রিয়াল রেটের বিশাল পতন, দেখেনিন আজকের রেট কত
- ব্রেকিং নিউজ: আইপিএল নিলামে ঝড় তুললেন নাহিদ রানা
- IPL নিলামে ঝড় তুলেছেন তাসকিন, ৫ কোটি রুপিতে যে দলে তাসকিন, দেখেনিন সাকিবের অবস্থান
- IPL 2025 Auction: ৫ কোটি রুপিতে যে দলে তাসকিন, দেখেনিন মুস্তাফিজের অবস্থান
- আজকে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে পাল্টে গেল বাংলাদেশের ১৮ বছরের ইতিহাস
- টি-টেন লিগে আকাশ ছোয়া মুল্যে দল পেলেন সৌম্য সরকার, দেখেনিন যে দলের হয়ে খেলবেন
- প্রথম দিনেই কঠিন হুঁশিয়ারি দিলেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী চারে দিকে উঠলো প্রশংসার ঝড়
- ৩ পরিবর্তন নিয়ে শেষ ওয়ানডে ম্যাচের জন্য শক্তিশালী একাদশ ঘোষণা করলো বাংলাদেশ
- অনেক দিন পর সাব্বিরের ব্যাটে চার ছক্কার ঝড়
- যে কারণে সাকিবকে বাতিল ঘোষণা করলো আইসিসি
- ব্রেকিং নিউজ: নাজমুল হোসেন শান্তকে হারালো বাংলাদেশ
- খেলার মোড় ঘোরালেন নাসুম আর ম্যাচে ম্যাচ সেরা হলেন অন্য যে ক্রিকেটার
- ব্রেকিং নিউজ: বাতিল ঘোষণা করলো আইসিসি, মুখ খুললেন সাকিব