ঢাকা, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

এমপি, হঠাৎ মেয়র হওয়ার আগ্রহ কেন

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০১৯ ডিসেম্বর ২৮ ২১:২৩:০৬
এমপি, হঠাৎ মেয়র হওয়ার আগ্রহ কেন

তাপস বলেন, সততার সঙ্গে কাজ করলে সিটির যে কোনো সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। ইচ্ছা থাকলে দ্রুত সময়ের মধ্যে অনেক সমস্যার সমাধান সম্ভব। যেটা করেছিলেন উত্তরের প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক। আমি মনে করি, সবার সমর্থন পেলে আমিও সেটা করতে সক্ষম হব।

শনিবার রাজধানীর গ্রীন রোডে রূপায়ন টাওয়ারে তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবও দেন।

‘আপনি ঢাকা-১০ আসনের এমপি। হঠাৎ মেয়র হওয়ার আগ্রহ কেন জাগল?’

এমন প্রশ্নে জবাবে তাপস বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়তে চান। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সেই উন্নত বাংলাদেশের উন্নত রাজধানী বিনির্মাণ করা অত্যন্ত আবশ্যক। সেই বিবেচনা করেই তিনি (প্রধানমন্ত্রী) সিটি কর্পোরেশনকে দুইভাগে বিভক্ত করলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমরা দেখছি যে, দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মানুষ কিন্তু এখনও অবহেলিত। তাদের মৌলিক সুবিধাগুলো এখনও পাচ্ছে না। এই বিষয়গুলো আমাকে হতাশ করেছে এবং পীড়া দিয়েছে। সেই চিন্তা-চেতনা থেকেই আমি ভাবলাম যে, আরেকটু বৃহত্তর পরিসরে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে মেয়র পদে আমাকে মনোনয়ন করে এবং জনগণ যদি নির্বাচিত করে, তাহলে আমি এ কাজগুলো করতে পারব।

‘বর্তমান মেয়র ঢাকার ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করেছেন। কিন্ত তার কার্যক্রমে নাগরিকরা হতাশ। আপনি সে হতাশা কাটাতে পারবেন কি?’

এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি যে আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে কাজ করলে সবই সম্ভব। একটা মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করে ঐতিহ্যবাহী ঢাকার স্বকীয়তা, বৈশিষ্ট্য আর স্বমহিমায় যে সৌন্দর্য ছিল সেটাকে আবার পুনরুদ্ধার করা এবং প্রস্ফুটিত করা। এখন চিন্তা করলে মনে হবে এটা খুব কঠিন কাজ, অবশ্যই এটা কঠিন কাজ। তবে এই নজির আমাদের ঢাকা উত্তরের প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক সাহেব দেখিয়েছেন, যে অল্প সময়ের মধ্যে চাইলে পরিবর্তন আনা যায়। আমি মনে করি, সবার সমর্থন পেলে আমিও সেটা করতে সক্ষম হবো।’

অভিবক্ত ঢাকার প্রথম মেয়র প্রয়াত হানিফ বিভিন্ন সময় সিটি কর্পোরেশনকে কার্যকর করতে ‘সিটি গভর্নমেন্ট’ বাস্তবায়নের কথা বলেছিলেন। আসলে কি ‘সিটি গভর্নমেন্ট’ এর প্রয়োজন আছে?’

এ প্রশ্নের উত্তরে আপনি ঢাকা-১০ আসনের এই এমপি বলেন, আমি দেখেছি যে সিটি কর্পোরেশনের যে কার্য পরিধি, সেখানে যথেষ্ট ক্ষমতা ও কার্যাবলি দেয়া আছে। সেগুলো যদি সম্পূর্ণরূপে পালন করা যায়, তাহলে সিটি গভর্নমেন্টের প্রয়োজন হয় না। আমার চেষ্টা থাকবে কার্যাবলিগুলো বাস্তবায়ন করার। সুষ্ঠুভাবে দ্রুততার সঙ্গে যদি সম্পূর্ণ দুর্নীতিমুক্তভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, তাহলে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হবে।

‘ঢাকা তীব্র যানজটের শহর। মেয়র নির্বাচিত হলে যানজট নিরসনে কী করবেন?’ এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যানজটতো আমাদের বড় সমস্যা। প্রধানমন্ত্রী মেট্রোরেলের কাজ শুরু করেছেন। সেটা শেষ হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। সে ক্ষেত্রে এখন ঢাকার যানজটের যে পরিস্থিতি, এটাতো আসলে অসহনীয় অবস্থা। সেখানেতো খুব দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। তখন আবার বলতে হয় প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক সাহেব কিছু পরিকল্পনা নিয়েছিলেন, আমি চেষ্টা করব তার মডেলগুলো অনুসরণ করা এবং সেটাকে যদি আরেকটু সংস্কার করতে হয় সেটা করব।

‘দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে পুরান ঢাকার ঘিঞ্জি এলাকার কারণে অগ্নিকাণ্ডসহ মানুষের চলাচলে অনেক সমস্যা হয়, এগুলোর সমাধান কী?’

জবাবে তাপস বলেন, পুরান ঢাকার ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করে..., ঘিঞ্জি রাস্তা কিন্তু বিদেশেও আছে কিন্তু সেখানে সবরকম যানবাহন চলে না। কোন রাস্তায় কোন যানবাহন চলবে সেটার সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করতে হবে। সেই অনুযায়ী সেই রাস্তাগুলোকে সংরক্ষণ ও সংস্কার করতে হবে। সেভাবে যদি করা যায়, তাহলে দেখবেন পুরান ঢাকা স্বমহিমায়, স্বকীয়তায় তার সৌন্দর্যে প্রস্ফুটিত হবে। আমি চিন্তা করছি, এক সময়ে ঐতিহ্যবাহী ঢাকায় ঘোড়ার গাড়ির বড় প্রচলন ছিল। সেটা যেন সুষ্ঠুভাবে চলতে পারে সেই পরিকল্পনাও আমাদের নিতে হবে।

‘বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়হীনতার কারণে উন্নয়ন কাজ ব্যাহত হয়, এমন অভিযোগ সাবেক মেয়রদের। আপনি কী করবেন?’

এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশনের আইনে কিন্তু সিটি কর্পোরেশনকে প্রধান্য দেয়া আছে। সিটি কর্পোরেশনের আইনুযায়ী অন্যদের তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার নির্দেশনা দেয়া আছে। তাই এসব সংস্থাকে সিটি কর্পোরেশন আইন ও নিয়মনীতি মেনে কাজ করতে হবে। আমরা এখানে ব্যাপক ব্যতয় দেখে এসেছি। এই ব্যতয়গুলো কোনোভাবে গ্রহণ করা হবে না। আমাদের সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা থাকবে। সেই কর্ম পরিকল্পনা ও নীতিমালা অনুযায়ী একদম সুষ্ঠু সময়ে কাজগুলো সম্পন্ন করতে হবে। আমি চাইব, ৩০ বছরের দীর্ঘমেয়াদি একটা মহাপরিকল্পনা করতে ২০৪১ কে সামনে রেখে।

‘অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে বিএনপির সংশয় রয়েছে। আপনি কী মনে করেন?’

জবাবে ডিএসসিসি নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আমি খুবই আশাবাদী। জনগণের যে প্রতিক্রিয়া পাচ্ছি, আমি মনে করি, তারাও ভোটের দিন অংশগ্রহণ করবেন। আমি মনে করি, এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন হবেই।

মনোনয়ন পেলে জনগণের ব্যাপক সমর্থন নিয়ে জয়ের ব্যাপারেও তিনি আশাবাদী বলে জানান সাংবাদিকদের। সুত্রঃ জাগোনিউজ২৪

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে