সৌদির ‘ফ্রি’ ভিসার ফাঁদ হতে সাবধান
![সৌদির ‘ফ্রি’ ভিসার ফাঁদ হতে সাবধান](https://www.24updatenews.com/thum/article_images/2019/11/29/Vabna-Inner-1.jpg&w=315&h=195)
তিনি বলেন, ”আরেক দোকানের সামনে থেকে আমাকে ধরে নিয়ে এলো। আমার দোকানের সামনেও যেতে পারি নাই। প্রায় ৪০ লাখ টাকার মালামাল ছিল দোকানে, কিছুইতো আনতে পারি নাই। কেবল ফোনটা ফেরত দিয়েছে।”
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের হিসাব বলছে, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরব থেকে চলতি বছরের প্রথম দশ মাসেই ২০ হাজার ৬৯২ জনকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
আর সৌদি আরবের জেদ্দা কনস্যুলেটের শ্রম উইংয়ের হিসাবে গত দশ মাসে প্রতিদিন গড়ে ১০৬ জন প্রবাসী দেশে ফিরেছেন।
অভিবাসন নিয়ে গবেষণা ও প্রবাসী কল্যাণে কাজ করা সংস্থগুলো বলছে, মন্দার কারণে সৌদি আরবে কর্মক্ষেত্রে নিজেদের নাগরিক বাড়ানোর ওপর জোর দিচ্ছে তেলসমৃদ্ধ দেশটির সরকার।
এর অংশ হিসেবে আইনের কঠোর বাস্তবায়ন করতে গিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে নিয়মভঙ্গের অভিযোগে প্রবাসী শ্রমিকদের দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে তারা।
ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসানের মতে, সৌদি আরব থেকে শ্রমিকদের ফিরে আসার সবচেয়ে বড় কারণ তথাকথিত ফ্রি ভিসার নামে সেখানে গিয়ে অবৈধ হয়ে পড়া।
পাশাপাশি অনেক পেশায় সৌদিকরণের ফলে প্রবাসী শ্রমিকরা সেখানে থাকার সুযোগ হারাচ্ছেন।
শরিফুল বলেন, “যে ৬-৭ লাখ টাকা খরচ করে শ্রমিকরা বিদেশে যায়, সেখানে কাজ করে সেই টাকা ওঠানো অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব হয় না। এ কারণে অনেকে কর্মক্ষেত্র পরিবর্তন করে ফেলে। কিন্তু নির্দিষ্ট কফিল বা নিয়োগকর্তার বাইরে কাজ করার সুযোগ সৌদি আরবের আইনে নাই।”
’ফ্রি ভিসা মানে মরণ’
নির্দিষ্ট কাজে না গিয়ে ‘ফ্রি ভিসায়’ গিয়ে যে কোনো কাজ করতে পারার একটি পদ্ধতি দীর্ঘদিন ধরে চালু আছে সৌদি আরবে বাংলাদেশি শ্রমিকদের মধ্যে।
সৌদি আরবের আইনে ‘ফ্রি ভিসা’ বলে কিছু নেই। তবে আত্মীয়-স্বজন কিংবা রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে অনেক শ্রমিক সেখানে যায়।
‘ফ্রি ভিসার’ ধারণাটি কীভাবে কাজ করে, সে বিষয়ে জানতে চাইলে সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ্ বলেন, “দেখা যায়, সৌদি আরবের কোনো ছোট কোম্পানি, তাদের সক্ষমতা নেই লোক নিয়োগের, কিন্তু সে কয়েকজন লোকের চাকরির অনুমোদন নেয়। তখন তার নামে শ্রমিকদের জন্য ভিসা ইস্যু হয়। এরপর ওই ব্যক্তির কাছ থেকে ইকামা নিয়ে শ্রমিকরা অন্য জায়গায় কাজ করে।”
এরকম এক ভিসায় ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে সৌদি আরবে যান ভোলার ফুয়াদ হোসেন। ছয় লাখ টাকা খরচ করে বিদেশ গিয়ে গত সপ্তাহে রিক্ত হাতে ফিরতে হয়েছে তাকে।
প্রথমে গিয়ে টাকার বিনিময়ে ইকামার ব্যবস্থা হলেও মেয়াদ শেষে খরচ আর ওঠেনি। অবৈধ অবস্থায় কাজ করার পর ধরা পড়ে আট দিন আটক থাকতে হয় ফুয়াদকে।
আক্ষেপের সুরে তিনি বলেন,”ফ্রি ভিসা মানে মরণ রে ভাই! ফ্রি ভিসায় গেলেও কোনো কাজ নাই। আবার ইকামার দাম ১০-১২ হাজার রিয়াল। এই টাকা যোগাড় করাও সম্ভব হয় না। এখন ধরে ধরে পাঠায়ে দিচ্ছে ওরা।”
যারা কাজ নিয়ে সৌদি আরবে যেতে আগ্রহী, তাদের উদ্দেশে রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ বলেন, “আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, ফ্রি ভিসা বলতে আসলে কিছু নেই। এখানে কাজ করতে হলে ইকামা থাকতে হবে এবং নির্দিষ্ট নিয়োগকর্তার অধীনে কাজ করতে হবে। এর বাইরে গেলে অবৈধ হয়ে যেতে হয়। তখন মেয়াদ থাকলেও ফেরত পাঠানো হবে।”
নতুন শ্রম আইন, কঠোর সৌদি আরব
রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসের এক কর্মকর্তা জানান, ২০১৭ সালের শেষ দিকে নাগরিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে ১২টি খাতে কেবল সৌদি নাগরিকদের নিয়োগের ঘোষণা দেয় দেশটির সরকার।
গাড়ি ও মোটর সাইকেল শোরুম, তৈরি পোশাক ও পুরুষ আর শিশুদের পোশাক, গৃহস্থালি পণ্যের শোরুম, গৃহস্থালি তৈজসপত্রের শোরুম, গাড়ির যন্ত্রাংশ, ঘড়ির দোকান, চশমার দোকান, চিকিৎসা পণ্যের দোকান, আবাসন উপকরণের দোকান, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ও বিদ্যুৎ–চালিত সামগ্রীর দোকান, কার্পেটের দোকান এবং কনফেকশনারি দোকান রয়েছে এই ১২টি সেক্টরের মধ্যে।
রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ বলেন, “হয়ত বসবাসের অনুমতি আছে, কিন্তু এসব সেক্টরে কাজ করা অবস্থায় কোনো বিদেশি ধরা পড়লেও দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে সৌদি সরকার। ফলে সেখানে অবৈধ প্রবাসীদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।”
এসব ক্ষেত্রে দূতাবাস কী করছে জানতে চাইলে গোলাম মসিহ বলেন, “যারা অবৈধ হয়ে পড়েন, তাদের বিষয়ে আমাদের আসলে করার কিছু থাকে না। এটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমরা তখন তাদের ট্র্যাভেল পারমিটের ব্যবস্থা করি।
”কিন্তু কাউকে অন্যায়ভাবে বা বেআইনিভাবে আটক করলে আমরা তার প্রতিকারের চেষ্টা করি।”
সৌদি প্রবাসীদের ফেরত পাঠানো ঠেকাতে সরকারকে তিনটি উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিসের (বায়রা) মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান।
তিনি বলেন, ”শ্রমিকদের পাঠানোর আগে তাদের ওরিয়েন্টেশন দেওয়া দরকার। ওরিয়েন্টেশন না হওয়ায় অনেকে ফ্রি ভিসার নামে গিয়ে বিপদে পড়ছে।”
এখনকার ব্যবস্থায় চাকরিদাতার সক্ষমতা যাচাই করার সুযোগ নেই। আগেই তার সক্ষমতা যাচাই করা গেলে ‘ফ্রি ভিসার’ ফাঁদ এড়ানো সম্ভব বলে মনে করেন বায়রা মহাসচিব।
তিনি বলেন, “প্রবাসী বাংলাদেশি যারা ভিসা স্পন্সর করছে, তাদের সক্ষমতার বিষয়টিও যাচাই করা হোক। এগুলো মনিটরিং করলে গণহারে দেশে ফেরত পাঠানো বন্ধ করতে পারব।”
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- এক নজরে দেখেনিন কে কত টাকা পুরস্কার পেলেন
- বিপিএল মাতিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্কোয়াডে আসছেন দুই জন
- বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা ক্রিকেটারদের তালিকা
- ১৪৪ ধারা জারি
- এক ম্যাচের জন্য যত টাকা নিলেন রাসেল-জেমস ভিন্স-টিম ডেভিড
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আহত সারজিস আলম
- সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের কথায় নতুন বার্তা
- বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্কোয়াড ঘোষণা করলো বিসিবি
- বিপিএল শেষ, বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্কোয়াডে আসছে দুই পরিবর্তন
- ধানমন্ডির ৩২ নম্বর ও দেশজুড়ে ভাঙচুরের পর আজহারী স্ট্যাটাস
- ফরচুন বরিশালের একাদশ
- গণধোলাইয়ের পর পুলিশের হাতে সোপর্দ সাকিব
- ভিসা বন্ধ ঘোষণা
- আজকের ১৮ ক্যারেট, ২১ ক্যারেট, ২২ ক্যারেট সোনা ও রুপার দাম
- বিপিএল ফাইনাল ম্যাচের সময় সূচি