কৌশলে সরকারকেই দুষছেন পেঁয়াজের আমদানিকারকরা
তারা বলেন, ভারতের রফতানি বন্ধের ঘোষণা দেয়ার প্রায় এক মাস পর সরকারের পক্ষ থেকে অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করতে বলা হয়। তত দিনে পেঁয়াজের বাজারে সংকট সৃষ্টি হয়। এতে মধ্যস্বত্ব কিছু লোক সংকটের সুযোগ কাজে লাগিয়ে দাম বাড়িয়েছে। তবে সরকারের সিদ্ধান্তে এখন অনেক এলসি খোলা হয়েছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে পেঁয়াজের কেজি ১০০ টাকার নিচে নেমে আসবে।
পেঁয়াজ আমদানিকারক মেসার্স রায়হান ট্রেডার্সের মালিক মো. শহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, বাংলাদেশে ঘাটতির প্রায় ৯০ শতাংশ পেঁয়াজ ভারত থেকে আমদানি হয়। চলতি বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর যখন ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে, তখনই সঙ্কট মোকাবিলার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ উচিত ছিল সরকারের। তবে সরকার আমদানিকারকদের ডেকেছে এবং আমদানির সিদ্ধান্তও নিয়েছে; তা প্রায় এক মাস পর। ওই এক মাসে আমদানি কম হওয়ায় বাজারে পেঁয়াজের ঘাটতি দেখা দেয়। নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় পেঁয়াজের বাজার।
তিনি জানান, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে সর্বোচ্চ ৫ থেকে ৬ দিন সময় লাগে। কিন্তু অন্যান্য দেশ যেমন চীন, তুরস্ক, মিশর থেকে পেঁয়াজ আনতে প্রায় এক মাস সময় লাগে। ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করার পরই সরকার যদি আমদানির সিদ্ধান্তের কথা জানাতো তাহলে আমদানিকারকরা তাৎক্ষণিকভাবে চীন, তুরস্ক ও মিশর থেকে পেঁয়াজের এলসি খুলতো। অক্টোবরের শেষ দিকে আমদানি পেঁয়াজ চলে আসলে বাজারে সংকট সৃষ্টি হতো না।
নিজ উদ্যোগে কেন পেঁয়াজ আমদানি করেননি- জানতে চাইলে রায়হান ট্রেডার্সের মালিক জানান, ভারত রফতানি বন্ধ করার পর যদি আমরা চীন থেকে আমদানি করতাম, এটি আসতে প্রায় এক মাস সময় লাগতো। আর ওই সময়ে যদি ভারত তা আবার প্রত্যাহার করে তাহলে সবাই ক্ষতির মুখে পড়বে। এ জন্যই আমদানি করিনি। বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সরকারকেই সিদ্ধান্ত নিতে হয় বলে জানান তিনি।
২৫০ টাকা পেঁয়াজের দাম সম্পর্কে ক্ষোভ প্রকাশ করে শহিদুল ইসলাম জানান, পেঁয়াজ যে দামে আমদানি করা হয়েছে তাতে দেশের বাজারে কোনো মতেই ভোক্তা পর্যায়ে ৯০ টাকার উপরে হওয়ার কথা না। কিন্তু মধ্যস্বত্ব কিছু লোক সংকটের সুযোগ নিয়ে দামটা বাড়িয়েছে।
শুল্ক গোয়েন্দায় আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আমদানিকারক জাগো নিউজকে জানান, আমাদের আমদানির বিভিন্ন কাগজপত্র নিয়ে আসতে বলেছে। আমি তা দেখিয়েছি। গত কয়েক মাসে কোনো কোনো পাইকার ও ব্যবসায়ীদের কাছে পেঁয়াজ বিক্রি করেছি তার তথ্য চেয়েছে। কিছু তথ্য দিয়েছি আর বাকিগুলো দিতে ২-৩ দিন সময় লাগবে।
তিনি জানান, আমদানিকারকরা পেঁয়াজ এনে কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ পয়সা লাভে সরাসরি পাইকারদের কাছে বিক্রি করে। আমরা কম দামেই বিক্রি করেছি। কিন্তু আড়তদার ও পাইকাররা দাম বাড়িয়েছে। ভারত রফতানি বন্ধ করায় বাজারে এ সংকট। আর রফতানি বন্ধের আদেশ প্রত্যাহার না করলে পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে। কারণ অন্যান্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আনতে খরচ ও সময় বেশি লাগে। তাই সরকারের উচিত কূটনৈতিকভাবে এ সমস্যার সমাধান করা।
এদিকে বাজারে পেঁয়াজের দাম সহনীয় পর্যায় নামিয়ে আনতে ৪৩টি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের মালিককে সোমবার (২৫ নভেম্বর ও মঙ্গলবার জিজ্ঞাসাবাদ করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর।
এ বিষয়ে শুল্ক গোয়েন্দার মহাপরিচালক ড. শহিদুল ইসলাম বলেন, বাজারে পেঁয়াজের দাম সহনীয় পর্যায় নামিয়ে আনতে আমদানিকারকদের ডেকেছি। তাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়েছি, তারা কোথায় মাল বিক্রি করেছে, কত দামে কী পরিমাণ বিক্রি করেছে। তাদের নাম-ঠিকানা নেয়া হয়েছে। এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করবো।
তিনি বলেন, আমদানিকারকরা বন্দর থেকে পেঁয়াজ বিক্রি করেন। এরপর তিন-চার হাত ঘুরে ভোক্তার কাছে পৌঁছে। এখন কোন পর্যায়ে মজুত আছে এগুলো যাচাই-বাছাই করছি। আগামীতে প্রয়োজন হলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অনুমতিক্রমে আড়তদার ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের ডাকা হবে।
শুল্ক গোয়েন্দা মহাপরিচালক বলেন, আমরা কারও ওপর দায় চাপাতে চাচ্ছি না। আমরা চাই বাজার সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসুক। এ জন্যই ব্যবসায়ীদের ডাকা হয়েছে। তবে আমরা তথ্য পেয়েছি পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। একটি পেঁয়াজের জাহাজ আজ বন্দরে আসছে। শিগগিরই পেঁয়াজের দাম সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসবে।
উল্লেখ্য, বন্যায় ভারতের বিভিন্ন অংশ প্লাবিত হওয়ায় চলতি বছরে মৌসুমি পেঁয়াজ উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দেয়। তাই এ বছর ভারতের বাজারেও পেঁয়াজের মূল্য বেশ চড়া। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৯ সেপ্টেম্বর দেশটির সরকার রান্নার জন্য অতি প্রয়োজনীয় এ উপাদানটির রফতানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। আর এতে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। কারণ বাংলাদেশে ঘাটতির প্রায় ৯০ শতাংশ পেঁয়াজ ভারত থেকে আমদানি করা হয়।
এরপর থেকে দেশের পেঁয়াজের বাজার অস্থির হতে থাকে। দফায় দফায় বাড়তে থাকে পেঁয়াজের দাম। পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করার সংবাদে ২৯ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো ১০০ টাকায় পৌঁছায় যায় দেশি পেঁয়াজের কেজি। খুচরা পর্যায়ে ভালো মানের দেশি পেঁয়াজ ১০০-১১০ টাকা কেজি বিক্রি হতে থাকে। এরপর বেশি কিছুদনি পেঁয়াজের দাম অনেকটাই স্থির ছিল। ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে নেমে এসেছিল। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের পর আবারও পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং আমদানি করা পেঁয়াজ আসছে না- এমন অজুহাতে ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দেন, ফলে আবারও ১০০ টাকায় পৌঁছে যায় পেঁয়াজের কেজি। পরে পেঁয়াজের কেজি ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা কেজিতে ঠেকে। সুত্রঃ জাগোনিউজ২৪
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- আইপিএল নিলাম: ২কোটি ৭০লাখ রুপিতে যে দলে সাকিব, দেখেনিন মুস্তাফিজ ও তাসকিনের অবস্থান
- দেশে টাকা পাঠানোর উত্তম সময়: সৌদি রিয়াল রেটের অবিশ্বাস্য লাফ, দেখেনিন আজকের রেট কত
- সৌদি রিয়াল রেটের বিশাল পতন, দেখেনিন আজকের রেট কত
- ব্রেকিং নিউজ: আইপিএল নিলামে ঝড় তুললেন নাহিদ রানা
- IPL নিলামে ঝড় তুলেছেন তাসকিন, ৫ কোটি রুপিতে যে দলে তাসকিন, দেখেনিন সাকিবের অবস্থান
- IPL 2025 Auction: ৫ কোটি রুপিতে যে দলে তাসকিন, দেখেনিন মুস্তাফিজের অবস্থান
- আজকে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে পাল্টে গেল বাংলাদেশের ১৮ বছরের ইতিহাস
- প্রথম দিনেই কঠিন হুঁশিয়ারি দিলেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী চারে দিকে উঠলো প্রশংসার ঝড়
- ৩ পরিবর্তন নিয়ে শেষ ওয়ানডে ম্যাচের জন্য শক্তিশালী একাদশ ঘোষণা করলো বাংলাদেশ
- অনেক দিন পর সাব্বিরের ব্যাটে চার ছক্কার ঝড়
- ব্রেকিং নিউজ: নাজমুল হোসেন শান্তকে হারালো বাংলাদেশ
- খেলার মোড় ঘোরালেন নাসুম আর ম্যাচে ম্যাচ সেরা হলেন অন্য যে ক্রিকেটার
- টি-টেন লিগে আকাশ ছোয়া মুল্যে দল পেলেন সৌম্য সরকার, দেখেনিন যে দলের হয়ে খেলবেন
- যে কারণে সাকিবকে বাতিল ঘোষণা করলো আইসিসি
- ব্রেকিং নিউজ: বাতিল ঘোষণা করলো আইসিসি, মুখ খুললেন সাকিব