ঢাকা, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

চরম দুঃসংবাদ প্রবাসীদের জন্যঃ সৌদির ভিশন ২০৩০ কাল হলো প্রবাসীদের

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০১৯ অক্টোবর ১২ ২২:৩৫:৫২
চরম দুঃসংবাদ প্রবাসীদের জন্যঃ সৌদির ভিশন ২০৩০ কাল হলো প্রবাসীদের

সৌদি অর্থনীতির এ পালাবদলের চো'রাবালিতে আ'ট'কা পড়ছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। প্রতিদিনই কাজ হারাচ্ছেন শতশত প্রবাসী। নিয়োগক'র্তার দেয়া অনুমতিপত্র বা আকামা হারিয়ে হয়ে পড়ছেন অ'বৈধ অ'ভিবাসী। এরপর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আ'ট'ক হয়ে অনেকে ফিরছেন দেশে।

জ্বালানি খাতকেন্দ্রিক ও অ'ভিবাসী শ্রমনির্ভর অর্থনীতির চাকা হঠাৎ ঘুরাতে গিয়ে স্থবির হয়ে পড়েছে সৌদি আরবের বাণিজ্য ও কর্মসংস্থান খাত। বিশেষত নির্মাণ খাতের সৌদি কোম্পানিগুলো পড়েছে আর্থিক বিপর্যয়ে। সৌদি বিন লাদেন গ্রুপ, সৌদি ওগেরসহ অনেক বড় নির্মাণ প্রতিষ্ঠান কর্মী ছাঁটাই করছে।

নির্মাণ ও সরবরাহ খাতের ছোটখাটো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোও একই কৌশল নিয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি। বৈধভাবে দেশটিতে গেলেও নিয়োগক'র্তা আকামা নবায়ন না করায় তারা অ'বৈধ হয়ে পড়ছেন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আ'ট'ক এড়াতে অনেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আকামা সমস্যা সমাধানে প্রতিদিনই সৌদির বাংলাদেশ দূতাবাসে শ্রমিকরা অ'ভিযোগ করছেন। দূতাবাস থেকে এ বিষয়ে ঢাকায় লিখিত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। এসব সমস্যা দূতাবাসের পক্ষে একা সমাধান করা সম্ভব নয়। এজন্য সৌদি সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

বাংলাদেশি শ্রমিকদের মধ্যে যারা আকামা জটিলতায় পড়েছেন, কোম্পানি থেকে তাদের আকামা করে দেয়ার নিয়ম থাকলেও অধিকাংশ কোম্পানি সেটি করছে না। তবে বিষয়টি সমাধানে দূতাবাস কাজ করছে বলে দূতাবাসের এক কর্মক'র্তা জানিয়েছেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সৌদি আরবে কাজের ক্ষেত্রে বিদেশিদের দেশটিতে বসবাসের অনুমতিপত্র বা ওয়ার্ক পারমিট থাকতে হয়। আরবিতে এ অনুমতিপত্রের নাম ‘আকামা’। সৌদি কোম্পানিগুলো তাদের কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশি শ্রমিকের নামে আকামা ইস্যু করার পরই সেটি দেখিয়ে দূতাবাস থেকে ভিসা নিতে হয়। প্রবাসে থাকাকালেও কর্মীদের আকামা নিয়ে চলতে হয়।

কোনো কারণে আকামা হারিয়ে গেলে ওই সৌদিতে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়ে। যেকোনো সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে নাজেহাল হওয়ার আশ'ঙ্কাও থাকে। তাই আকামা হারালে সঙ্গে সঙ্গে নিয়োগক'র্তাকে জানাতে হয়। পরবর্তীতে নিয়োগদাতা নতুন আকামা'র ব্যবস্থা করে দেন। এ ছাড়া পেশা পরিবর্তন করতে চাইলেও নতুন করে আকামা বা অনুমতিপত্রের প্রয়োজন পড়ে।

সৌদি আরবে জনবল সরবরাহকারী রিক্রুটিং এজেন্সির এক কর্মক'র্তা জানান, বর্তমানে সৌদির পরিস্থিতি ভালো নয়। বেশকিছু নির্মাণ প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে আছে। যেগুলো সচল, সেগুলোর কাজও ধীরগতিতে চলছে। এতে হাজার হাজার শ্রমিক বিপদের মধ্যে আছেন। আকামা নেই, কাজ নেই, বেতন নেই-এমন ৫০-১০০ জন শ্রমিক প্রতিদিনই বাংলাদেশ দূতাবাসে ভিড় জমাচ্ছেন। এরপরও দেশে বেশকিছু রিক্রুটিং এজেন্সি মিথ্যা আশ্বা'স দিয়ে ৫-৬ লাখ টাকা নিয়ে সৌদি আরবে শ্রমিক পাঠানো অব্যাহত রেখেছে বলে তিনি জানান।

জানা গেছে, বর্তমানে সৌদি আরবে জীবনযাত্রার মানে পরিবর্তন ঘটছে। আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হওয়ায় বিদেশি শ্রমিকরা এখন স্বেচ্ছায় দেশটি ছেড়ে যাচ্ছেন। আকামা ইস্যুর ফি কোম্পানির বহন করার কথা। একজন কর্মীর আকামা ফি বাবদ ৮-৯ হাজার সৌদি রিয়াল ব্যয় হয়, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় পৌনে ২ লাখ টাকা।

তবে কোম্পানিতে কাজ না থাকলে মালিকরা আকামা'র খরচ দিতে চান না, যার পরিপ্রেক্ষিতে বৈধ শ্রমিকরাও অ'বৈধ হয়ে পড়েন। এর মধ্যে পু'লিশি অ'ভিযানে ধ'রা পড়লে তাদের ডেপুটেশন সেন্টারে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে অনেককে ১৫ দিনের মধ্যে সৌদি সরকারের জাকাত ফান্ডের অর্থে টিকিট কে'টে দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।

জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশে পাড়ি দিয়েছেন ২ লাখ ২৭ হাজার ৩০৪ বাংলাদেশি শ্রমিক। এর মধ্যে শুধু সৌদি আরবেই গেছেন ১ লাখ ৭ হাজার ৯৩৫ জন।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে