ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

একেবারেই কমে গেছে ইলিশের দাম

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০১৯ অক্টোবর ০৩ ১২:৩৪:০৩
একেবারেই কমে গেছে ইলিশের দাম

দাম কম পেয়ে স্থানীয় মৎস্য আড়তদাররা ও বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা পাইকাররা ভবিষ্যতে সরবরাহ করার জন্য প্রচুর ইলিশ মজুদ করতে বরফের দাম এক লাফে কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। ফলে ইলিশের চেয়ে এখন বরফের দাম অনেক বেশি পড়ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরের সীতাকুণ্ড উপকূলে গত কয়েকদিন হঠাৎ প্রচুর পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়ছে। সাগরে মৎস্য শিকারে যাওয়া জেলেরা নৌকা বোঝায় ইলিশ নিয়ে ফিরছে উপকূলে। তবে অতিরিক্ত ইলিশের কারণে স্থানীয় বাজারে দাম কমে গেছে।

বুধবার উপজেলার সবচেয়ে ইলিশ আহরণ এলাকা কুমিরা ঘাটঘর গিয়ে দেখা গেছে, সাগর থেকে প্রচুর পরিমাণ ইলিশ শিকার করে ফিরছেন জেলেরা। সেখানে এমন একটি নৌকাও নেই যেখানে কয়েক মণ ইলিশ আনা হয়নি। তবে মাছের মধ্যে বেশির ভাগই ছোট ও মাঝারি আকৃতির। এছাড়া ১০ থেকে ২০ শতাংশ আছে এক কেজি বা তার চেয়েও বড় সাইজের।

কুমিরা ঘাটঘর এলাকার কুমিরা জেলে পাড়ার জেলে অর্জুন জলদাশ বলেন, ইলিশের জোঁ চলছে এখন। এ কারণে সাগরে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। তিনি আরও বলেন, প্রচুর মাছ ধরা পড়ার খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়ায় এখন অসংখ্য পাইকার এবং সাধারণ মানুষ ইলিশ কেনার জন্য উপজেলার ঘাটে ঘাটে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন।

সীতাকুণ্ডের সৈয়দপুর, মুরাদপুর, বারৈয়াঢালা, বাড়বকুণ্ড, বাঁশবাড়িয়া, কুমিরা, সোনাইছড়ি, ভাটিয়ারী, সলিমপুর ইউনিয়নে অনেকগুলো জেলেপাড়া আছে বলে জানান অর্জুন জলদাশ।

জেলার সব এলাকার জেলেরা এখন প্রচুর ইলিশ পাচ্ছে। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ইলিশ ধরা পড়ছে সাগরে। মাছ নিয়ে আসার সময় জেলে নৌকার দিকে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন ক্রেতারা।

সাগর পাড়ে মাছ কিনতে আসা সীতাকুণ্ডের কুমিরা সুলতানা মন্দির এলাকার বাসিন্দা অধ্যাপক কৃষ্ণ চন্দ্র দাস জানান, তিনি সাগর পাড়ে গিয়ে দেখেন, জেলেরা ইলিশ ভর্তি জাল নিয়ে সোজা উপকূলে চলে এসেছেন। এ সময় মাছের দাম জানতে চাইলে জেলেরা বলেন, যদি ক্রেতা নিজে জাল থেকে মাছ খুলে নেয় সে ক্ষেত্রে প্রতি মণ মাছ ২ হাজার টাকায় নিতে পারবে। দরদাম করলে এর চেয়ে অনেক কমেও পাওয়া যাবে। সব শেষে তিনি ছোট ও মাঝারি আকৃতির ইলিশ গড়ে প্রতি কেজি ৫০ টাকা হারে কিনে নিয়েছেন বলে জানান।

কুমিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোর্শেদুল আলম চৌধুরী বলেন, প্রচুর ইলিশ মাছ ধরা পড়ছে, এ কথা সত্যি। কিন্তু জেলেরা যে সারা বছর দাদন নিয়ে সংসার চালায় তার জেরে এই মৌসুমে দাদনদারকে নামমাত্র মূল্যে ইলিশ দিয়ে দিতে হয়। তারপর সেই ইলিশ কয়েকগুণ বেশি দামে বাজারে বিক্রি করে লাভবান হন দাদনদাররা। এ কারণে প্রচুর মাছ ধরেও জেলেরা ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না।

ইলিশের নিয়মিত ক্রেতা ভাটিয়ারী মৎস্য আড়তের স্বত্বাধিকারী মো. মনোয়ার হোসেন মুন্না বলেন, আমরা ঝাঁকা ঝাঁকা ইলিশ কিনে তারপর সাইজ হিসেবে বিক্রি করি। ছোট আকৃতির ইলিশ খুচরা বাজারে ২০০, মাঝারি আকৃতির ৩০০ এবং বড় আকৃতির ইলিশ ৪ থকে ৫শ টাকায় বিক্রি করছেন তিনি। তবে যেসব ক্রেতা সরাসরি ঘাট থেকে কেনেন তারা অনেক কম মূল্যে মাছ কিনতে পারেন বলে জানান তিনি।

সীতাকুণ্ড উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শামীম আহমেদ বলেন, গত মঙ্গলবার সীতাকুণ্ড উপকূল থেকে ৫০ মেট্রিক টনের মতো ইলিশ ধরা পড়েছিল। বুধবার ধরা পড়েছে ৭০ টনের মতো।

তিনি বলেন, মাছ বেশি ধরা পড়লেও জেলেরা ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। মধ্যস্বত্বভোগীরাই আসল লাভ নিয়ে যাচ্ছে। তার ওপর জেলেরা মাছ সংরক্ষণ করছে দেখে আইস ফ্যাক্টরিগুলো বরফের দামও বাড়িয়ে দিয়েছে। কয়েক কেজি ওজনের বরফ বিক্রি করছেন ১৭০০ টাকা। ইলিশের চেয়ে বরফের দামই বেশি! ফলে জেলেরা কিংবা পাইকারী ব্যবসায়ীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন। আইস ফ্যাক্টরিগুলো আরেকটু মানবিক হলে জেলেদের হয়রানি কমে যেত বলে জানান শামীম।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে