ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

জিন তাড়ানোর নামে নারীর সঙ্গে প্রতারণা, ভিডিও সহ

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০১৯ অক্টোবর ০২ ২২:২৩:৪৬
জিন তাড়ানোর নামে নারীর সঙ্গে প্রতারণা, ভিডিও সহ

ভুক্তভোগী ওই রোগীর নাম রাবেয়া আক্তার (২৮)। বুধবার (২ অক্টোবর) দুপুরে আইন, বিচার ও সংবিধান বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে অভিযুক্ত কবিরাজ ও হোমিও ডাক্তার কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধে তিনি এসব অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, এক বান্ধবীর স্বামীর অসুস্থতা ও অন্যান্য সমস্যা নিয়ে বান্ধবীর সঙ্গী হিসেবে ওই কবিরাজের কাছে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে যাওয়ার পর তার ওপর খারাপ জিন ভর করেছে, যেকোনো সর্বনাশ করতে পারে সে বলে ভয় দেখান কামরুল ইসলাম। পরে শারীরিক এক সমস্যার কারণে সিলেট জেলার লালবাজার নিশ্চিন্তপুর (তেতলী) এলাকার মেসার্স শাহজালাল মেডিকেল হলে তিনি ওই ডাক্তারের কাছে যান। সেখানে কামরুল ইসলাম রোগ সম্পর্কে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাবিজ-কবজের মাধ্যমে জিন তাড়ানোর কথা বলেন। সে অনুযায়ী তিনি ওই কবিরাজের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন।

এর মধ্যে কামরুল ওই রোগীর ‘খারাপ জিন’ ছাড়ানোর কথা বলে তার কাছে চিকিৎসা খরচ বাবদ ২ লাখ টাকা দাবি করে। সেই দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার সকল কাজের সহযোগিতা করেন হুজুরের সহযোগী লিপু নামে অপর এক ব্যক্তি।

রাবেয়া আক্তার বলেন, কবিরাজ কামরুল ইসলামের কাছে চিকিৎসার জন্য গেলে তিনি বলেন, আমার কাছে খারাপ জিন আছে এবং এই জিন থাকলে আস্তে আস্তে আমি মারা যাব। এমনকি সবদিক দিয়ে ধ্বংস হতে থাকবে- এইসব বলে নানা ধরনের ভয় দেখান। বলেন, জিন মারতে হলে দুই লাখ টাকা লাগবে। এরই মধ্যে হুজুরের সহযোগী লিপু বিভিন্ন রকম এসএমএস করেন। তিনি আমাকে খুব ভালোবাসেন এবং আমি তার খুব প্রিয় বলে প্ররোচনা করতে থাকেন।

তিনি বলেন, ‘হুজুর আমাকে অনেক গল্প শোনাতেন। আমেরিকা-লন্ডনের অনেক মেয়ের ছবি দেখাতেন আর বলতেন, এসব সুন্দরী এবং উচ্চ পরিবারের অনেক মেয়েরাও তার জন্য পাগল। তাকে বিয়ে করার জন্য মোবাইলে বিভিন্ন রকম অশ্লীল ছবি দেখাতেন এবং নোটারি পাবলিকের একজন সদস্য হিসেবে বিভিন্ন ছবি দেখাতেন। বলতেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাইলে তার সঙ্গে তিনজনকে নিয়ে যেতে পারবেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্র পাঠানোর ভিসার জন্য আমার কাছ থেকে আরও পাঁচ লাখ টাকা নেন। এ ছাড়া অনেককে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়েছেন বলে দাবি করে তার কাছে থাকা বিভিন্ন ছবিও আমাকে দেখাতেন। বলতেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রে আছে তার মাধ্যমে।’

ভুক্তভোগী রাবেয়া আক্তারের অভিযোগ, গত ১০ বছরে প্রতারক কামরুল ইসলাম অসহায় মানুষদের ধোঁকা দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। টাকার জোরে স্থানীয় প্রশাসন ও এলাকার জনপ্রতিনিধিরা তার কাছে জিম্মি। এমনকি আইনের ফাঁকফোকর দিয়েও তিনি পার পেয়ে যান। সর্বশেষ শ্লীলতাহানি মামলায় হাইকোর্ট ছয় মাসের স্থগিত আদেশ দেন।

এ ঘটনায় গত ১১ জুন কবিরাজ কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধে সিলেট দক্ষিণ সুরমা থানার মামলা করেন রাবেয়া আক্তার। মামলা নম্বর ৭। মামলাটি ধারা ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনী ২০০৩ এর ৯-৪(খ)-সহ পেনাল কোডের ৪২০/৪০৬/৫০৩ ধারায় রজু করা হয়। এরপর আসামির লোকজন বিভিন্নভাবে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন।

পরে তিনি ঢাকা মতিঝিল, যাত্রাবাড়ী ও খিলগাঁও থানায় জিডি করেন। খিলগাঁও থানার জিডি নম্বর ১৫৪৬ ও মতিঝিল থানার জিডি নম্বর ১৪৪১।সুত্রঃ জাগোনিউজ২৪

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে