ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

জলে গেল ৫০ কোটি টাকা-কমেনি বরং বেড়েছে মশা, ভুগছে ডেঙ্গু রোগে

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০১৯ জুলাই ২৯ ১৯:২৬:৫২
জলে গেল ৫০ কোটি টাকা-কমেনি বরং বেড়েছে মশা, ভুগছে ডেঙ্গু রোগে

এদিকে মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু জ্বরে একের পর এক ঘটছে প্রাণহানি। এমন পরিস্থিতিতে মাঠে ঘাটে মশা মারতে তেমন কোনো সক্রিয়তা দেখা যায়নি সিটি করপোরেশন কর্মীদের। অবশ্য সিটি করপোরেশনগুলোর মশার ওষুধের কার্যকারিতা নিয়েও সন্দিহান নগরবাসী। কিন্তু বছরের পর বছর মশা মারার জন্য বাজেট বাড়িয়েছে দুই সিটি করপোরেশন।

অথচ চলতি বছরের শুরুতেই এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধির শঙ্কা প্রকাশ করেছিল স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা। সেই শঙ্কার কথা দুই সিটি করপোরেশনকে জানানো হলেও প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়নি দুই সিটি করপোরেশন।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্লানার্সের সাধারণ সম্পাদক নগরবিদ ড. আদিল মোহাম্মদ খান গতকাল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সরকারি দুই সংস্থার গবেষণায় সিটি করপোরেশনের মশা নিধনের ওষুধ যে অকার্যকর তা প্রমাণিত। তারপরও এই অকার্যকর ওষুধ কিনে আসলে জনগণের ট্যাক্সের টাকা জলে ফেলা হয়েছে।’

এদিকে দুই সিটি করপোরেশনের বাজেট বরাদ্দ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে মশা নিধনে উত্তর সিটির বরাদ্দ ছিল ১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তা বেড়ে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে হয়েছে ২১ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ২১ কোটি টাকার মধ্যে ১৮ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল ওষুধ কেনার জন্য। আর কচুরিপানা-আগাছা পরিষ্কারে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ কোটি টাকা এবং ফগার/হুইল/স্প্রে-মেশিন পরিবহনে ব্যয় ধরা হয়েছিল ২ কোটি টাকা। মশা নিধনের যন্ত্রপাতি ক্রয় করা হয়েছে ২ কোটি টাকার।

অন্যদিকে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে মশা নিধনে দক্ষিণ সিটির বরাদ্দ ছিল ১৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা। তা বেড়ে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে হয়েছে ২৬ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ২৬ কোটি টাকার মধ্যে ২৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল ওষুধ কেনার জন্য। কচুরিপানা-আগাছা পরিষ্কারে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩০ লাখ টাকা এবং ফগার/হুইল/স্প্রে-মেশিন পরিবহনে ব্যয় ধরা হয়েছিল ২ কোটি টাকা।

এছাড়া সিটি করপোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকার মশক নিয়ন্ত্রণের যন্ত্রপাতি কিনেছে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। জানা যায়, স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার আওতায় গত মার্চে মশার উৎস নিয়ে ১০ দিনব্যাপী জরিপ চালানো হয়। তখন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার ৯৭টি ওয়ার্ডের ১০০টি স্থানের ৯৯৮টি বাড়ি পরিদর্শন করে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। ওই জরিপে ডিএসসিসির ৮০ নম্বর ওয়ার্ডে এডিস মশার লার্ভার ঘনত্বের সূচক বা বিআই (ব্রুটাল ইনডেক্স) সবচেয়ে বেশি ৮০ পাওয়া গিয়েছিল।

তাছাড়া হাতিরঝিল এলাকার দুই পাশে দুই সিটি করপোরেশনেরই কয়েকটি ওয়ার্ড পড়েছে। সেসব এলাকায় এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব বেশি পাওয়ার কথা জানিয়েছিল রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা। বর্ষায় এডিস মশার উপদ্রুব বাড়তে পারে বলেও তখন সতর্ক করেছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা। সেই শঙ্কার বাস্তব রূপ নিয়েছে জুনের শুরুতেই।

এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরা বলছেন- বর্ষা এডিস মশা বিস্তারের উপযোগী সময়। এ কারণে এ সময় বেশি আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে মশা ডিম পাড়ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ডিম ফুটে বাচ্চা খুব দ্রুত বের হচ্ছে। কিন্তু সিটি করপোরেশন যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় এবার ডেঙ্গু মহামারী আকার ধারণ করেছে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে