ঢাকা, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

প্রিয়া সাহার অভিযোগ যতটা আমলে নিতে পারেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০১৯ জুলাই ২২ ১১:১৪:৪১
প্রিয়া সাহার অভিযোগ যতটা আমলে নিতে পারেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

তিন কোটি ৭০ লাখ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান দেশ থেকে নিখোঁজ হয়ে গেছেন- প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে প্রিয়া সাহার এ অভিযোগের ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে সরকারি মন্ত্রী, রাজনীতিক, পুলিশ কর্মকর্তা ছাড়াও প্রচুর মানুষ তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন।

তাদের অনেকে বলছেন, ওই হিন্দু নেত্রী জেনে-বুঝে বিদেশে গিয়ে মিথ্যা অভিযোগ করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন। তার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা দেয়ার দাবিও উঠছে।

কিন্তু বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে প্রিয়া সাহা যে অভিযোগ তুলে ধরেছেন তাকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, হোয়াইট হাউস বা মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর কতটা গুরুত্ব দিতে পারে?

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস এঅ্যান্ডএম ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সমাজ ও রাজনীতির অধ্যাপক মেহনাজ মোমেন বিবিসিকে বলেন, আমেরিকা কোন কথাকে গুরুত্ব দেবে কি দেবে না তা নির্ভর করে পরিস্থিতির ওপর।

‘অভিযোগ যদি এমন দেশ বা অঞ্চল থেকে আসে, যেখানে আমেরিকার বিশেষ স্বার্থ আছে, তখন ওই অভিযোগের গুরুত্বও ভিন্ন রকম হয়।’

উদাহরণস্বরূপ অধ্যাপক মোমেন বলেন, ইরাক যুদ্ধের আগে ইরাকের নাগরিকরা তাদের অত্যাচার-নির্যাতন নিয়ে অভিযোগ করলেই সেগুলো তখন রেডিও, টিভি, সংবাদপত্রে ফলাও করে প্রচার হতো।

‘ওই সব অভিযোগ দিয়ে তখন ইরাক যুদ্ধকে জাস্টিফাই করার চেষ্টা হয়েছে।’

তারও আগে পঞ্চাশের দশকে কিউবা থেকে সোভিয়েতদের বিরুদ্ধে অভাব-অভিযোগ ফলাও করে প্রচার করা হতো।

কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এখন যে সম্পর্ক তাতে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে প্রিয়া সাহার অভাব-অভিযোগ তেমন কোনো গুরুত্ব পাব বলে মনে করছেন না অধ্যাপক মেহনাজ মোমেন।

‘বাংলাদেশের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক এখন আমি বলব বেশ স্থিতিশীল। সুতরাং প্রিয়া সাহার অভিযোগকে ট্রাম্প তেমন কোনো গুরুত্ব দেবেন সে সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।’

‘হয়তো বাংলাদেশ শব্দটি তার পরিচিত বলে প্রেসিডেন্ট প্রিয়া সাহার কথা শুনেছেন... ফটো দেখে হয়তো মনে হতে পারে তিনি অন্যদের কথা মন দিয়ে শুনছেন কিন্তু আমার মনে হয় না এর কোনো ধারাবাহিকতা থাকতে পারে।’

প্রিয়া সাহা যে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, সেখানে বিশ্বের ২৭ দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘু প্রতিনিধিরা ছিলেন।

অধ্যাপক মেহনাজ বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে আমেরিকা সামরিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক দিয়ে বিশ্বের প্রধান শক্তিধর দেশ হয়ে উঠেছে। ফলে মানুষজন এখনও সেখানে গিয়ে অভাব-অভিযোগ করেন।

‘এটি অনেকটা রেওয়াজ হয়ে গেছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও সেই রেওয়াজই পালন করেছেন মাত্র।’

অধ্যাপক মোমেন বলেন, ট্রাম্পের শাসনামলে খোদ যুক্তরাষ্ট্রেই যেভাবে সংখ্যালঘুদের ওপর হেনস্তা বাড়ছে, যেভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বাড়ছে, তাতে মানবাধিকার বিষয়ে আমেরিকার অবস্থানের গুরুত্ব দিন দিন কমছে।

তবে প্রিয়া সাহার অভিযোগ নিয়ে বাংলাদেশে যে ধরনের প্রতিক্রিয়া হচ্ছে, তার সমালোচনা করেছেন অধ্যাপক মোমেন।

তিনি বলেন, ‘প্রিয়া সাহা যে সংখ্যা বলেছেন, তা হয়তো অতিরঞ্জিত হতে পারে, কিন্তু এটি তো সত্যি যে বাংলাদেশেও সংখ্যালঘুরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। আন্তর্জাতিক ফোরামে যে এটি এভাবে উঠল তা লজ্জাজনক ও দুঃখজনক। এর শুভ সমাপ্তি হবে যদি এসব ঘটনা আরও কমে আসে এবং শেষ হয়।’

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে