ঢাকা, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬ পৌষ ১৪৩১

টয়লেটে ফেলে যাওয়া শিশু গহিনকে নিয়ে সাংবাদিকের বিশ্লেষণ

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০১৯ মে ১৮ ২১:৫৭:০৭

টয়লেটে ফেলে যাওয়া শিশু গহিনকে নিয়ে সাংবাদিকের বিশ্লেষণ

তবে প্রাথমিক পর্যায়ের আমার অভিজ্ঞতা ও নির্ভর অযোগ্য তথ্য বলছে গহীনের মা ঢাকার শহরের হাতে গোনা কয়েকজন শীর্ষ ধনীর একজনের মেয়ে। পারিবারিক সিদ্ধান্তেই গহীনকে দুনিয়ার আলো দেখানো হয়।

পরে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে হন্তদন্ত হয়ে ঢাকা শিশু হাসপাতালে ঢুকছেন দুই নারী। এক নারীর হাতে দেখা যায় কাপড়ের পুটুলি সদৃশ্য কিছু। তিনি শৌচাগারে ঢুকে দ্রুত বেড়িয়ে যান। ধারণা করা হচ্ছে এই দুজনই ফেলে গেছে শিশুটিকে।

শিশুটির ওই সময়ের ছবি ও চেহারাই পর্যালাচনা করে দেখা যা, গহীনের মা অসম্ভব সুন্দর এবং ধনীর দুলালী। ধনী বলার কারণ, আপনি বা আপনারা যদি একটু ভিন্ন ভাবে তাকান দেখবেন— গহীনের গায়ে বেশ দাবী তুলার বসন। এই তুলার বিছানা ধানমন্ডি এলাকার হাতে গোনা ৩/৪ টি হাসাপাতালের প্রাইভেট হাসপাতালের। যেখানে চিকিৎসা করা আমার মতো অনেকের সম্ভব নয়।

এখন যেটা করা যেতো— পুলিশ চাইলেই শিশু হাসপাতালে আসা ওই দুই মহিলার সন্ধ্যানে অভিযান করতে। তাহলে তারা বলে দিতো আসলে এরা কারা। কার সন্তান।

পুলিশ বা গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলতে পারেন, বোরকা পরা মানুষ চিনবো কিভাবে? এখানেও সহজ উপায় আছে। সরকারি হাসপাতালের কোথাও নবজাতককে এমন তুলার বসন দেয় না। জন্মের আগেই, কাঁথা বা নতুন কাপড় নেওয়া হয়। এটা নিশ্চিত প্রাইভেট হাসাপাতাল। আমার ধারণা গহীনের মায়ের বাসা, ধানমন্ডি এলাকায়। সেখানের হাসপাতালগুলোর সিসি ক্যামেরার ঘটনার আগে পরের তিন দিনের ফুটেজের সাথে শিশু হাসপাতালের ওই দুই মহিলার ফুটেজ মিললে হাসপাতাল পাওয়া যাবে। সেখান থেকে ডাক্তার, অতঃপর গহীনের মা।ধরলাম কিছুই পেলাম না। তাহলেও একটা উপায় আছে। প্রাইভেট হাসপাতালের গোয়েন্দা সোর্স লাগানো। দুই একদিন গাইনি ওয়ার্ডে সময় দিলেই বলাবলি শোনা যাবে গহীনের গল্প। অথবা সব হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ। কতজন ওয়ার্ডে প্রবেশ করছে। কতজন নবজাতকসহ বেরিয়েছে। তাদের সাথে হাসাপাতালের খাতার তথ্য মিলাতে হবে। সম্ভবত খাতায় নাম থাকবে না। যদি নাম থাকে তাহলে নবজাতক শিশু কই।

এছাড়াও একটা উপায় আছে— গাইনী ওয়ার্ডে ওই তুলা থেকেও খুঁজে পাওয়া যাবে কোন হাসপাতালে ডেলিভারী হয়েছে। সে ক্ষেত্রে শুধু দুই/একটি কোম্পানীর সাথে তুলার নমুনা মেলাতে হবে!

আমি পুলিশের কেউ না। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার কলাকৌশলের সূত্র গুলো থেকে এমন ভাবনা। তবে পুলিশের বিশেষ করে ঢাকা মহানগর পুলিশের এমন কিছু প্রযুক্তি আমি জানি বা তদন্ত দেখেছি— তিন দিন লাগবে এই মাকে খুঁজে বের করতে। পুলিশ তা করবে কিনা সেটা প্রশ্ন থেকে যায়।

অবশ্য জন্মের পর বাবা মায়ের কোলে ঠাঁই না পাওয়া নবজাতকের থেকে দুর্ভাগা আর কে হতে পারে! তারজন্য কেনইবা পুলিশ এগিয়ে আসবে। তবে খুশির খবর ঢাকা শিশু হাসপাতালের বাথরুম থেকে উদ্ধার সেই নবজাতকটিকে শত শত মানুষ কোলে তুলে নিতে আবেদন করেছে। তথ্য অনুসারে দেশেরে ইতিহাসে আদালতে এতো বেশি আবেদন আগে কোনো নবজাতককে দত্তক নিতে জমা পড়েনি।আপাতত ওই নবজাতকের ঠিকানা হয়েছে আজিমপুরে সমাজসেবা অধিদফতরের ‘ছোটমণি নিবাসে’।গত বৃহস্পতিবার ওই নিবাসের কর্মকর্তাদের কাছে তাকে তুলে দেওয়া হয়। ওই নবজাতকটির নাম রাখা হয়েছে ‘গহীন’।

রাষ্ট্রের আইন অনুসারে, কোনো একটি শিশুকে পাওয়া গেলে তাদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে সুস্থ করে আজিমপুরের ছোটমণি নিবাসে স্থানান্তর করা হয়। সেখান থেকে শিশুদের দত্তক নিতে আগ্রহী দম্পতিরা পারিবারিক আদালতে মামলা করেন। কোনো শিশুকে দত্তক নিতে একাধিক আবেদন জমা পরার পর আদালত তাদের সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে দম্পতি নির্বাচন করেন। শিশু ‘গহীনের ব্যাপারেও একই নিয়ম অনুসরণ করা হবে।

আমি আজ গহীনের বাবা মায়ের কোনো কথা বলবো না। হিসেব করবো না— অপরাধী কী গহীনের মা নাকি তার গর্ভে জন্ম দেওয়া পুরুষের। আমি শুধু বলবো— হয়তো দেশের আইন পুলিশকে চাপ প্রয়োগ করে নির্দেশ দিবে না— তৈরি করতে গহীনের তদন্ত প্রতিবেদন।

সুত্র: স্টাফ রিপোর্টার (ক্রাইম) জিটিভি

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে