ঢাকা, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

এফআর টাওয়ারের আগুনে জীবনের সবচেয়ে বড় জিনিসটাই হারিয়ে ফেলেছেন মানহা

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০১৯ মার্চ ২৯ ২১:২৭:১৪
এফআর টাওয়ারের আগুনে জীবনের সবচেয়ে বড় জিনিসটাই হারিয়ে ফেলেছেন মানহা

কে বেশি আদর করে জানতে চাইলেই মানহা করতে চটপট উত্তর দেয়, ‘আব্বু আমাকে সবচেয়ে বেশি আদর করে। আব্বু আমাকে স্কুলে নিয়ে যায়, আমার সাথে খেলে।’ এরপর আর কিছু জিজ্ঞাসা করা যায়নি। ছোট্ট মানহা আবার দৌড়াদৌড়িতে ব্যস্ত হয়ে যায়। মানহা বুঝতে পারছে না তাঁর সবচেয়ে প্রিয় খেলার সাথীকেই সে হারিয়ে ফেলেছে!

ছোট্ট মানহার সঙ্গে যখন এসব কথা হচ্ছিল, তখন তাদের বাসায় ভিড়। মানহার আব্বুর লাশ পৌঁছেছে বাসায়। মানহার আব্বুর নাম আবদুল্লাহ আল ফারুক তমাল। গতকাল বনানীর বহুতল ভবন এফ আর টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডে নিহত হয়েছেন তিনি। মাত্র ৩২ বছর বয়সেই থেমে গেল তমালের পথ চলা।

ডেমরার সারুলিয়ায় ভাঙ্গাপুল এলকায় তমালদের বাসা। সকালে এলাকার মুকবুল আহমেদের তিনতলা বাড়ীর সামনে রাখা হয় আবদুল্লাহ আল ফারুক তমালের লাশ। ভিড় জমে যায় ওই জায়গায়। শেষবারের মত এক নজর দেখার জন্য স্বজনরাও যাচ্ছেন।

বাড়ীর সামনে কয়েকটি চেয়ার পেতে দেওয়া হয়েছে স্বজনদের জন্য। পুরুষরা বাসার নীচে আর নারীরা তমালের বাড়ীর দ্বিতীয় তলার বাসায় যাচ্ছেন। লাশ দেখতে আসা স্বজনদের কেউ কেউ তমালের বাবা মুকবুল আহমেদকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছেন। তমালের দুই ভাই তুহিন ও তুষার কাঁদছেন আর ঘটনার বিবরণ দিচ্ছেন। ঘটনা শুনেও কাঁদছেন অনেকে।

তমালের মেয়ে পাঁচ বছর বয়সের সোহাইলী তেহরীন মানহার এত কিছু বুঝতে পারেনি এখনো। লোকজনের ভিড়ে তুষারের হাত ধরে ঘুরছে। মাটিতে খেলছে। এরই ফাঁকে কথা হল মানহার সঙ্গে।

তমালের বড় ভাই তুহিন বলেন, ‘তমালের মতো বুদ্ধিমান ও এত মেধাবী ছেলে কেন বের হয়ে আসতে পারলো না। তার ফ্লোরে ৪৮ জন কর্মরত ছিল। তারমধ্যে ৪২ জন বের হয়ে এসেছে। তাহলে সে কেন পারলো না। তমালের সাথে তিনবার কথা হয়েছে। সে বলেছে সে সেফ জোনে আছে, তবে ধোঁয়ার কারণে সমস্যা হচ্ছে। ভেজা রুমাল দিয়ে মুখ মুছতে হচ্ছে। নাকে মুখে পানি দিচ্ছে। এরপর মোবাইলে না পেয়ে তাকে এসএমএস দিয়ে বললাম ছাদে চলে যাও। ফিরতি এসএমএসে সে জানালো নো স্কোপ ।

তমালের বাবা মুকবুল আহমেদের কান্না থামছেই না। দুপুর ২টার দিকে তমালের জানাজা শেষ হয়। সারুলিয়া কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

মানহা ছাড়াও তমালের দেড় বছর বয়সের একটা ছেলে আছে। ওর নাম আবদুল্লাহ আল আইমান। তমালের স্ত্রীর নাম সানজীদা অভি। ইইউআর সার্ভিস বিডি লিমিটেডের সেলস ম্যানেজার ছিলেন আবদুল্লাহ আল ফারুক তমাল। এফ আর টাওয়ারেই ছিল তমালের অফিস।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে