বাংলাদেশে ফিরতে চায় ২০ আইএস জঙ্গি
এদিকে আইএসে যোগদানকারীরা দেশে ফিরলেই তাদের গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ জন্য দেশের সব বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরে নামের তালিকা পাঠানো হয়েছে। তারা যেন কোনোভাবেই দেশে প্রবেশ করতে না পারে, আর আসলেই যাতে গ্রেফতার করা হয় সে ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাদের শনাক্ত করা মাত্রই গ্রেফতার করবে এবং বিষয়টি তাৎক্ষণিক কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটকে জানাবে, এই নির্দেশনাও রয়েছে। সিরিয়া-ইরাকে আইএস জঙ্গি ঘাঁটি পতনের পর প্রবাসী জঙ্গি যারা এখন দেশে ফিরে আসতে চায়, তারা বাংলাদেশের জন্য হুমকি বলে মনে করছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।
সূত্র জানায়, তালিকাভুক্ত ৪০ জঙ্গির সবাই রাজনীতিবিদ, শিল্পপতি ও উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের আত্মীয়-সন্তান। আর এদের মধ্যে আইএসের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন সাইফুল হক সুজন ও আশিকুর রহমান। আইটি বিশেষজ্ঞ সাইফুল হক সুজন সিরিয়ায় যুদ্ধে নিহত হয়েছেন। তার স্ত্রীর নাম সায়মা আক্তার মুক্তা। দুই সন্তানসহ গর্ভবতী স্ত্রীকে নিয়ে সিরিয়া যান সুজন।সিরিয়ায় যাওয়ার পর ওসমান নামে তার একটি সন্তান হয়। খুলনার ইকবাল নগরে তাদের বাসা। মারা যাওয়ার পর আইএস তাকে ‘সাহসী মুজাহিদ’ হিসেবে অভিহিত করে। কাওরান বাজারে তার একটি কম্পিউটার ফার্ম ছিল। সম্প্রতি স্পেন থেকে সুজনের ভাই আতাউল হক ৫০ লাখ টাকা পাঠায় এই ফার্মের নামে। এই টাকাসহ সুজনের বাবা ও তার আরেক ভাইকে গ্রেফতার করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। পরে তার বাবা কারাগারে মারা যান। ওই ৫০ লাখ টাকা হলি আর্টিজান হামলার মাস্টারমাইন্ড তামিমকে দেওয়ার জন্য পাঠানো হয়েছিল। এটা জঙ্গি অর্থায়নের টাকা। সুজনের সিরিয়া যাওয়ার বিষয়টি জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানায় তার বাবা-ভাই। আরেক জঙ্গি নেতা প্রকৌশলী বাশারুজ্জামান উত্তরবঙ্গে অভিযানে নিহত হন। তিনি সুজনদের ফার্মে কাজ করতেন। তার সঙ্গে সিরিয়ার আইএসের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল।
ঢাকা শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. রোকন উদ্দিন খন্দকার তার স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে সিরিয়া গিয়েছিলেন আইএসের পক্ষে কাজ করতে। যুদ্ধাহত আইএস জঙ্গিদের চিকিৎসা সেবার দায়িত্বে ছিলেন। তার স্ত্রীর নাম নাইমা আক্তার, মেয়ে রেজোয়ানা রোকন, মেয়ের জামাই সাদ কায়েজ ও মেয়ে রোমিকা রোকন। ঢাকার খিলগাঁওয়ের চৌধুরীপাড়ায় তাদের বাড়ি। সব বিক্রি করে তারা সিরিয়া যান। যৌথবাহিনীর আক্রমণে সিরিয়ায় আইএস ছিন্নভিন্ন হওয়ায় তারা এখন দেশে ফিরতে চান। তবে যৌথবাহিনীর নেটওয়ার্কে রোকনউদ্দিন খন্দকার ও তার পরিবার ধরা পড়েছে। তবে পালিয়ে বাংলাদেশে আসার চেষ্টা এখনো চালিয়ে যাচ্ছে পাঁচ সদস্যের এই পরিবার।
এদিকে ইব্রাহিম হাসান খান ও জুনায়েদ খান নামে দুই ভাইও সিরিয়া গিয়েছিল। তাদের মা-বাবা সৌদি আরবে থাকেন। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ডা. আনোয়ার ব্রিটিশ পাসপোর্টধারী। তিনিও সপরিবারে ব্রিটেন থেকে সিরিয়া যান। তবে যুক্তরাজ্য সরকার তার পাসপোর্ট বাতিল করেছে। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক হবিগঞ্জের বাসিন্দা ইবনে হামদুদ আইএসের সদস্য। তার আসল নাম সামিউন রহমান। আইএসের দেওয়া নাম ইবনে হামদুদ। বাংলাদেশে আসার পর তার কর্মকাণ্ডে আইএসের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পায় কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট এবং তাকেসহ ৩ জনকে গ্রেফতারও করে। তখন দেশের সুশীল সমাজের একটি অংশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ইবনে হামদুদ ব্রিটিশ সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত। পরে জামিনে মুক্ত পান সামিউন। এ ঘটনার কিছুদিন পর সামিউন দিল্লিতে যান। সেখানে ভারতের গোয়েন্দা নেটওয়ার্কে ধরা পড়ে সামিউনের আইএসে জড়িত থাকার কর্মকাণ্ড। তাকে গ্রেফতার করা হয়।
মহানগর অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম জানান, ৪০ জনের তালিকা বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরের সকল ইমিগ্রেশনে পাঠানো হয়েছে। সিরিয়া ও ইরাক থেকে যারা আসবেন তাদের সব তথ্য দেখে তালিকাভুক্তদের কেউ থাকলে সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার করা হবে। তিনি বলেন, এয়ারপোর্ট ও স্থলবন্দরগুলো কঠোর নজরদারিতে রাখা হয়েছে। আইএসের সদস্য আসা মাত্রই গ্রেফতার করা হবে। এ বিষয়ে অন্যান্য ইন্টেলিজেন্সের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।
জানা গেছে, ইরাক ও সিরিয়ায় আইএস অনেক আগেই কোণঠাসা হয়ে পড়ছে, যা এখন পতনের ঘোষণার অপেক্ষা মাত্র। আইএস এর সর্বশেষ ঘাঁটিগুলোরও পতন ঘটেছে এমন খবর পেয়েছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। এ অবস্থায় যেসব বাংলাদেশি সদস্য আইএসে যোগ দিয়ে অত্যাধুনিক অস্ত্র চালনা ও বোমা তৈরিতে পারদর্শী হয়েও বেঁচে আছেন তারা যদি দেশে ফিরতে সক্ষম হন, তাহলে পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে— এ নিয়ে নতুন করে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ কারণে সবাই সতর্ক রয়েছে।
লন্ডন থেকে অহিদুজ্জামান জানান, যুক্তরাষ্ট্রে টুইন টাওয়ারে হামলার পর (৯/১১) থেকে এ পর্যন্ত লন্ডন পুলিশ যুক্তরাজ্যে জঙ্গি কার্যক্রমে জড়িত থাকার অপরাধে ৩৮ জন বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করেছে। হাউস অফ কমন্সের লাইব্রেরি ব্রিফিং প্রতিবেদনে সম্প্রতি বলা হয়েছে, ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে টুইন টাওয়ারে হামলার পর লন্ডন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৫ হাজারের বেশি জঙ্গিকে গ্রেফতার করে। এদের মধ্যে বাংলাদেশসহ ১০০টি দেশের নাগরিক রয়েছে। আদালতের বিচারে এদের অন্তত ৯০ শতাংশ অপরাধী হিসাবে প্রমাণিত হয়েছে। সূত্র: ইত্তেফাক
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্কোয়াডে আসছে পরিবর্তন, বাদ পড়ছেন যে ক্রিকেটার
- সৌদি রিয়াল রেটের লম্বা লাফ, জেনেনিন আজকের রেট কত
- সমন্বয়ক সারজিস আলমের পরিবারে শোকের ছায়া
- বিপিএল-এ ফিক্সিং নিয়ে আলোচনা: সন্দেহভাজন ১০ ক্রিকেটারের তালিকা প্রকাশ
- বিপিএল মাতিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্কোয়াডে আসছেন দুই জন
- এক ম্যাচের জন্য যত টাকা নিলেন রাসেল-জেমস ভিন্স-টিম ডেভিড
- ব্রেকিং নিউজ: নিষিদ্ধ হলেন তানজিম সাকিব
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আহত সারজিস আলম
- বিপিএলের ৮ ম্যাচে ফিক্সিং সন্দেহ, ফিক্সিংয়ে সন্দেহভাজন ক্রিকেটারদের তালিকা প্রকাশ
- ফরচুন বরিশালের একাদশ
- বাড়লো আজকের সৌদি রিয়াল রেট
- আজকের সকল দেশের টাকার রেট
- কোয়ালিফায়ার ম্যাচের জন্য খুলনা টাইগার্সের সম্ভাব্য সেরা একাদশ
- আরব আমিরাতের ভিসা প্রত্যাশীদের জন্য সুখবর, আসলো নতুন ঘোষণা
- বিপিএল ফাইনাল ম্যাচের সময় সূচি