কুদরতি জমজম কূপ, কী আছে এতে জেনেনিন
সাহাবাগণ ও পূর্বের মনীষীগণ মেহমানদের যমযমের পানি উপহার দিতেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন- যে উদ্দেশ্যে জমজমের পানি পান করা হয় আল্লাহতাআলা তা কবুল করে নেন। এটি কাবা থেকে ২০ মিটার দূরে অবস্থিত। কূপটি প্রায় ৩০ মিটার গভীর এবং এর ব্যাস ১.৮ থেকে ২.৬৬ মিটার পর্যন্ত, মাটি থেকে প্রায় ১০.৬ ফুট নিচে জমজম কূপের পানির স্তর।
কখনও কখনও জমজমের পানি ৮০০০ লিটার প্রতি সেকেন্ড ২৪ ঘন্টা ধরে পাম্প করা হয়। তখন পানির স্তর ৪৪ ফুট নিচে নেমে যায়। কিন্তু পাম্প বন্ধ করার মাত্র ১১ মিনিটের মধ্যে তা উঠে আসে ১৩ ফুট ওপরে, প্রতি সেকেন্ডে ৮০০০ লিটার পানি পাম্প করার মানে হচ্ছে একদিনে প্রায় ৬৯০ মিলিয়ন লিটার পানি উত্তোলন করা হয়। তাই বিজ্ঞানীরা ভেবে অবাক হয় যে কিভাবে ১১ মিনিটের মাথায় তা আগের অবস্থায় ফিরে আসে।
জমজম কূপের সৃষ্টির রহস্য অনেকের জানা থাকলেও এর ইতিহাস আপনাদের না বললেই নয়। আজ থেকে চার হাজার বছর পূর্বের কথা, আল্লাহর এক পয়গম্বর ছিলেন যার নাম হজরত ইব্রাহিম (আ.)। আল্লাহর আদেশে দ্বিতীয় স্ত্রী হাজেরা (আ.) ও শিশু পুত্র ইসমাইল (আ.) -কে মক্কার মরুভূমিতে রেখে আসেন।
রেখে যাওয়া খাদ্য পানীয় শেষ হয়ে গেলে হাজেরা (আ.) পানির খোঁজে সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মাঝে সাতবার ছোটাছুটি করেন। এসময় জিবরাইল (আ.) এর পায়ের আঘাতে মাটি থেকে পানির ধারা বেরিয়ে আসে। ফিরে এসে এই দৃশ্য দেখে হাজেরা (আ.) পাথর দিয়ে পানির ধারা আবদ্ধ করলে তা কূপে রূপ নেয়। এই সময় হাজেরা (আ.) পানির ধারাকে জমজম তথা থামো বললে এর নাম জমজম রাখা হয়।
প্রায় চার হাজার বছর আগে সৃষ্টি এ কূয়া থেকে এখনো প্রতিদিন সেকেন্ডে ১৯ লিটার এবং ২৪ ঘণ্টায় ১০ হাজার লিটারের বেশি পানি উত্তোলন করা হয়। প্রতিবছরই পানি উত্তোলনের পরিমাণ বাড়ছে। বিশেষ করে হজের সময় তা বেড়ে যায়। জমজমের পানি মুসলিম দেশসহ বিভিন্ন দেশে সরবরাহ করা হয়।
হাজিরা স্বাভাবিক বোতলে পানি নিয়ে গেলেও সৌদি সরকারের কিং আব্দুল্লাহর জমজম পানি ফাক্টরি পানি বোতলজাত করে সরবরাহ করে। সৃষ্টির পর থেকে এই কূপের পানি এখনো শুকায়নি। এই কুয়ার পানি একই রকম আছে। এর পানি প্রবাহে কোনো পরিবর্তন হয়নি। এমনকি এর স্বাদের ও কোনো পরিবর্তন হয়নি। কিংবা এতে জমেনি কোনো শৈবাল।
জমজম কূপের সংস্কার: প্রথমে এটি পাথর দিয়ে ঘেরা ছিল। পরবর্তীতে খলিফা আল-মনসুর এর সময় ৭৭১ সালে এর ওপরে গম্বুজ এবং মার্বেল টাইলস বসানো হয়। পরবর্তীতে খলিফা আল মাহাদী এটি আরো সংস্কার করেন। বর্তমানে কুয়া কাবা চত্বরে দেখা যায় না। এটি ভূগর্ভস্থ অবস্থায় রাখা হয়েছে এবং এখান থেকে পানির পাম্পের সাহায্যে উত্তোলন করা হয়।
মসজিদুল হারামের ওজু সহ নানা কাজে এ পানি ব্যবহার করা হয়। পরবর্তীকালে সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল আযীয বিন সউদ জমজমের পূর্ব ও দক্ষিনে পানি পান করানোর জন্য দুইটি স্থান তৈরি করেন। দক্ষিন দিকে ছয়টি এবং পূর্ব দিকে তিনটি ট্যাপ লাগানো হয়।
কূপের পানি বন্টন এর জন্য ১৪০৩ হিজরীতে সৌদি বাদশাহ রাজকীয় ফরমান অনুযায়ী হজ মন্ত্রনালয়ের সরাসরি তত্ত্বাবধানেই ইউফাইড দফতরে জমজম কূপের তত্তাবধায়ক গঠিত হয়। এই দফতরে একজন প্রেসিডেন্ট এবং একজন ভাইস প্রেসিডেন্টসহ মোট এগারো জন সদস্য ও পাঁচ শতাধিক শ্রমিক কর্মচারী রয়েছেন। শেষ দশকে গবেষকরা জানতে পেরেছেন যে জমজমের পানি পান করলে স্বাস্থ্য ভালো হয় এবং তারা বলেন জমজমের পানি খাবার এবং পানীয় হিসেবে পৃথকভাবে সামর্থ্য।
জমজমের পানির স্বাস্থ্যসুবিধারও তারিফ করা হয়। হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন, অসুস্থতা থেকে এটি একটি আরজ্ঞ্যসেবা। জজমজমের পানি কোনো রকম লবণ যুক্ত পানি নয়। এই পানি পান করলে এর একটি সতন্ত্র স্বাদ অনুভব করা হয়। যা কেবলমাত্র পানি পানকারী অনুভব করতে পারে। জমজম কূপের পানি হচ্ছে এমন একটি পানি যা কখনো জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয় নি।
১৯৭৯ সালে কূপটি পরিষ্কার করার জন্য ভালো করে পাক-পবিত্র করে একজনকে নামানো হয়। তিনি জমজম কূপের নিচ থেকে বিভিন্ন প্রকার আসবাবপত্র, মাটির পাত্র ও ধাতব পেয়েছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন প্রকার জিনিস পাওয়ার পরেও কুদরতি ভাবে এই পানি সম্পূর্ণ দূষণমুক্ত ছিল। জমজম কূপের পানি কিছুটা আলাদা স্বাদ যুক্ত এবং এই কুপের পানি সম্পূর্ণ বর্ণ ও গন্ধহীন।
সাধারণত জমজম কূপের পানির পিএইচ এর মান ৭.৯ থেকে ৮.০ হয়ে থাকে। যা এই পানির ক্ষারীয় হওয়ার কথা নিশ্চিত করে। অন্যদিকে সাধারণত আমরা যেসব পানি পান করি তার পিএইচ এর মান ৭.০ অর্থাৎ আমরা যে পানি পান করি অম্লীয়। ২০১২ সালে এক গবেষণায় অ্যালকালাইন সম্রিদ্ধ পানি মানুষের পাকস্থলী নিঃসৃত এনজাইম এর কার্যকারিতা নষ্ট করে দেয়। এই এনজাইম মানুষের শরীরে এসিড বৃদ্ধির জন্য দায়ী।
অন্য আরেকটি পরীক্ষায় দেখা যায় যে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং অতিরিক্ত কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে ক্ষারীয় পানি বেশ কার্যকরী। এই পানির আর একটি বিশেষত্ব হলো এ কূপের পানিতে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম সল্ট এর পরিমান অন্যান্য পানির তুলনায় বেশি। এই পানি শুধু যে পিপাসা মেটায় তা নয় বরং এটি ক্ষুধাও নিবারণ করে। এ পানিতে ফ্লুরাইডের পরিমান বেশি থাকার কারণে এতে কোনো জীবানু জন্মায় না।
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- আইপিএল নিলাম: ২কোটি ৭০লাখ রুপিতে যে দলে সাকিব, দেখেনিন মুস্তাফিজ ও তাসকিনের অবস্থান
- দেশে টাকা পাঠানোর উত্তম সময়: সৌদি রিয়াল রেটের অবিশ্বাস্য লাফ, দেখেনিন আজকের রেট কত
- সৌদি রিয়াল রেটের বিশাল পতন, দেখেনিন আজকের রেট কত
- ব্রেকিং নিউজ: আইপিএল নিলামে ঝড় তুললেন নাহিদ রানা
- IPL 2025 Auction: ৫ কোটি রুপিতে যে দলে তাসকিন, দেখেনিন মুস্তাফিজের অবস্থান
- ব্রেকিং নিউজ: বিদায় মুশফিক ও রিয়াদ
- আজকে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে পাল্টে গেল বাংলাদেশের ১৮ বছরের ইতিহাস
- প্রথম দিনেই কঠিন হুঁশিয়ারি দিলেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী চারে দিকে উঠলো প্রশংসার ঝড়
- ৩ পরিবর্তন নিয়ে শেষ ওয়ানডে ম্যাচের জন্য শক্তিশালী একাদশ ঘোষণা করলো বাংলাদেশ
- ব্রেকিং নিউজ: নাজমুল হোসেন শান্তকে হারালো বাংলাদেশ
- খেলার মোড় ঘোরালেন নাসুম আর ম্যাচে ম্যাচ সেরা হলেন অন্য যে ক্রিকেটার
- IPL নিলাম ২০২৫: ১ কোটিতে সাকিব ও তাসকিন, ৭৫ লক্ষ রুপিতে তানজিম সাকিব, দেখেনিন মুস্তাফিজের অবস্থান
- অনেক দিন পর সাব্বিরের ব্যাটে চার ছক্কার ঝড়
- সকল নাটকের অবসান: আর বাংলাদেশের হয়ে খেলবেন না সাকিব আসলো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত
- অলিখিত ফাইনালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে যে সময়ে মাঠে নামছে বাংলাদেশ, দেখেনিন সময়