ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

নির্বাচনী ইশতেহারে সিনেপ্লেক্সের প্রতিশ্রুতি

রাজনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০১৮ ডিসেম্বর ০৪ ১৮:৪২:১৬
নির্বাচনী ইশতেহারে সিনেপ্লেক্সের প্রতিশ্রুতি

এতসব সংকট মাথায় নিয়েও ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেেশের সিনেমা। নির্মিত হচ্ছে কিছু ভালো মানের চলচ্চিত্র। সেগুলোর সাফল্যে ভূমিকা রাখছে কিছু সিনেপ্লেক্স। তাই সিনেমার মানুষরা দেশজুড়ে সিনেপ্লেক্স গড়ে তোলার দাবি করছেন রাষ্ট্রের কাছে, দেশের ব্যবসায়ীদের কাছে।

সেই দাবি থেকেই সম্প্রতি জাগো নিউজে ৩০০ নির্বাচনী আসনে ৩০০ সিনেপ্লেক্স গড়ে তোলার ভাবনায় একটি ফিচার প্রকাশ হয়। যেখানে দেশের স্বনামধন্য নির্মাতা, অভিনেতা ও একজন সাংসদ এই প্রস্তাবকে সমর্থন করে তাদের মতামত ও পরামর্শ দিয়েছিলেন।

এবার আসন্ন সংসদ নির্বাচনে প্রার্থিদের নির্বাচনী ইশতেহারে সিনেপ্লেক্সের প্রতিশ্রুতি নিয়ে মতামত জানালেন তারকারা।

চিত্রনায়ক রিয়াজ এ বিষয়ে বলেন, ‘প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে ৩০০ আসনে ৩০০জন এমপি ৩০০টি সিনেপ্লেক্স করে দিবেন এমন স্বপ্ন দেখাটা এ দেশের প্রেক্ষাপটে একটু কঠিনই। তবে যদি কেউ কেউ প্রতিশ্রুতিটা রক্ষা করেন সেটাও আমাদের ইন্ডাস্ট্রিকে অনেক হেল্প করবে।

কিন্তু ইশতেহারে এই প্রতিশ্রুতির পূরণ হতে অনেক সময় লেগে যাবে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে দেশজুড়ে সিনেপ্লেক্স নিয়ে কাজ করবে তারা। তারচেয়ে আমি চাই ৬৪ জেলায় একটা করে হলকে দ্রুত ডিজিটাল করা হোক। আধুনিক প্রযুক্তিগত সুবিধা সরবরাহ করা হোক। এটা রাষ্ট্রও করতে পারে, দেশের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীরাও এগিয়ে আসতে পারেন।’

জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুর বলেন, ‘এটা খুবই ভালো প্রস্তাব। আমাদের দেশে অনেক ভালো সিনেমা এখন নির্মিত হচ্ছে। কিন্তু ভালো হলের অভাবে সেগুলো ব্যবসা করতে পারছে না। কোনো সিনেমা মুক্তি পেলে সবচেয়ে বেশি যে অভিযোগটি পাই সেটি হলো ভালো হলের অভাব।

সে জায়গা থেকে সারাদেশে সিনেপ্লেক্স প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। যদি সব দলের নেতারা তাদের ইশতেহারে এই প্রতিশ্রুতি রাখেন তবে খুবই ভালো হয়। নির্বাচিত হলে তাদের মধ্যে সেটা পূরণের দায়বোধ কাজ করবে। তছাড়া সিনেপ্লেক্স করলে একদিকে যেমন সিনেমার ইন্ডাস্ট্রির চেহারা বদলাবে অন্যদিকে ওই নেতাও তার এলাকাবাসীর বিনোদনের ব্যবস্থা করার জন্য জনপ্রিয় হবেন। অনেক নেতা-নেত্রীরাও পরিবারসহ সিনেমা দেখেন। তাদের জন্যও তো ভালো মানের হল দরকার।’

চিত্রনায়িকা পপি বলেন, ‘এটা খুবই ভালো হবে যদি নেতারা তাদের আসনে সিনেপ্লেক্স গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতিটা দেন। যদিও প্রতিশ্রুতি দেয়া হয় না রাখার জন্যই। তবে সময় বদলেছে। এখন জনগণ তার পাওনা বোঝে নিতে চেষ্টা করেন। প্রতিশ্রুতি থাকলে এলাকার মানুষই নেতাকে সিনেপ্লেক্স নির্মাণের জন্য উৎসাহিত করবেন।

আর দেশজুড়ে সিনেপ্লেক্স নির্মিত হলে সিনেমার উন্নতি হবে চোখে পড়ার মতো। কারণ আমাদের সবই আছে সিনেমার উন্নয়নের জন্য, কিন্তু যথেষ্ট পরিমাণে ভালো মানের হল নেই। আমি বিশ্বাস করি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিনেমার জন্য অনেক কিছুই করবেন। তিনি সিনেমা ও সংস্কৃতিবান্ধব মানুষ। সম্প্রতি সিনেমার প্রতি তিনি অনেক মনযোগী হয়েছেন।’

চিত্রনায়ক শাকিব খান বলেন, ‘যদি দেশজুড়ে ৩০০ সিনেপ্লেক্স হয় তবে রাতারাতি বদলে যাবে আমাদের সিনেমার বাজার। এখন অনেক ভালো সিনেমা হচ্ছে। কিন্তু হলের পরিবেশ ভালো নয় বলে দর্শক ছবি দেখতে আসেন না। তারা আফসোস করেন হলে গিয়ে সিনেমা দেখতে না পারার জন্য। ঢাকায় সিনেপ্লেক্স আছে কিন্তু তাদের এলাকায় নেই এজন্যও অনেকে মন খারাপ করেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চোখ রাখলেই ভক্তদের মধ্যে ভালো হলের অভাবের যে কষ্ট সেটা চোখে পড়ে। আমার পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি এই প্রস্তাবে। সব দলের নেতারাই যেন তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে সিনেপ্লেক্সের প্রতিশ্রুতি দেন।’

চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস, ‘দিন দিন হলের সংখ্যা কমছেই। হল নেই বলেই দর্শক নেই। আর দর্শকের অভাবেই সিনেমা বানানোর উৎসাহ হারাচ্ছেন প্রযোজকেরা। ইন্ডাস্ট্রিতে বাড়ছে অস্থিরতা। তাই সব নেতাদের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে আপনারা নিজ নিজ এলাকার মানুষদের বিনোদনের জন্য সিনেপ্লেক্সের দায়িত্ব নিন। খুব সহজেই সিনেমার দিন ফিরে আসবে।’

চিত্রনায়ক সাইমন সাদিক বলেন, ‘আমরা যে কোনোভাবেই হোক সারাদেশে সিনেপ্লেক্স চাই। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সিনেমা বানানো হচ্ছে এখন। কিন্তু সেই মানের হল না থাকায় ছবি দেখে বিনোদন পান না দর্শক। তাই তারা সিনেমা বিমুখ হয়ে যাচ্ছেন। তাদের হলে ফেরাতে ভালো মানের হল দরকার। বিশেষ করে সিনেপ্লেক্স। যদি নেতারা এই দায়িত্বটা নেন তবে জাতির সুস্থ বিনোদনে ভূমিকা রাখায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে সবাই।

তাছাড়া সিনেপ্লেক্স লাভজনক একটি ব্যবসা। দেশে যে কয়টি সিনেপ্লেক্স আছে তাদের সঙ্গে পরামর্শ করলেই সেটা বোঝা যাবে। নেতারা নিজে না করেন এলাকার ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করতে পারেন। কোনোকিছুই একক প্রচেষ্টায় চেঞ্জ হয় না। সম্মিলিতভাবেই সিনেমার উন্নতিতে এগিয়ে আসতে হবে।’

চিত্রনায়ক বাপ্পী চৌধুরী বলেন, ‘যে দেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি যতো বড় সে দেশের মানুষের রুচি, ভাবনা শক্তি, উৎসাহশক্তিও ততো বড়। সুস্থ বিনোদনের অভাবে সমাজে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তরুণরা বিপথগামী হয়। তাই সিনেমা হলের যে সংকট এখন দেশে সেটা খুব দ্রুতই সমাধান করা উচিত। আর সংসদ নির্বাচনের প্রার্থিরা এই দায়িত্বটা নিলেই খুব সহজেই সারাদেশে ভালো মানের সিনেমা হল গড়ে উঠবে। বিনোদনের ব্যবস্থাও হবে, দেশের অর্থনীতির বিরাট একটি মাধ্যমও গতিশীল হবে।’

চিত্রনায়ক সিয়াম আহমেদ বলেন, ‘আমার দুটি সিনেমা রিলিজ হয়েছে। অনেক ভালো রেসপন্স পাচ্ছি দর্শকের কাছ থেকে। কিন্তু অনেক অভিযোগও শুনতে হয়েছে ভালো হলের অভাবে। যে মানের সিনেমা নির্মিত হচ্ছে সে মানের হল কিন্তু দেশে নেই। তাই সিনেমা হলের সংকট কাটাতে আমাদের রাজনৈতিক প্রতিনিধিদের এগিয়ে আসা উচিত বলে মনে করি আমি।

নির্বাচনী ইশতেহারে এই প্রতিশ্রুতি চাই। নেতারা নির্বাচিত হলে রাষ্ট্রীয়ভাবে সিনেপ্লেক্সের ব্যবস্থা করবেন নিজ নিজ এলাকাবাসীর বিনোদনের জন্য। নিজ উদ্যোগে সিনেপ্লেক্স করেও লাভবান হতে পারেন তারা।’

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে