ঢাকা, শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫, ৭ চৈত্র ১৪৩১

আবারো উইকেট তুলে নিলো মিরাজ, দেখুন স্কোর

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০১৮ ডিসেম্বর ০২ ১৩:৪৭:৫৪
আবারো উইকেট তুলে নিলো মিরাজ, দেখুন স্কোর

তাইজুলের জোড়া

শুরুতেই দুই উইকেট হারিয়ে বসা সফরকারীদের আরও বিপদে ফেলেছেন তাইজুল ইসলাম। সুনীল আম্ব্রিসকে লেগ বিফরের ফাঁদে ফেলে বিদায় করেন তিনি। প্রথম ইনিংসে মাত্র ১ ওভার বোলিং করার সুযোগ পাওয়া এই স্পিনার দ্বিতীয় ইনিংসে নিজের প্রথম ওভারেই আঘাত হানেন। এরপরের ওভারে আবার রস্টন চেজকে ৩ রানে বিদায় করেন তাইজুল। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান মমিনুল হকের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন।

আবারও মিরাজ ও সাকিবের আঘাতঃ

ফলো অনে পড়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করতে নেমে আবারও বিপদে পড়তে হয়েছে উইন্ডিজদের। মাত্র ১৪ রান তুলতেই ২ উইকেট হারাতে হয়েছে তাদের। ২ রানের মাথায় ক্যারিবিয়ানদের শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন অধিনায়ক সাকিব। ওপেনার ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে সাজঘরে পাঠান তিনি।

এরপর চতুর্থ ওভারের শেষ বলে কাইরন পাওয়েলকে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন তরুণ টাইগার স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। মিরাজের করা বলটি সামনে এগিয়ে এসে কাভার অঞ্চল দিয়ে মারতে চেষ্টা করেছিলেন ক্যারিবিয়ান এই ওপেনার। কিন্তু বলটি মিস করায় উইকেটরক্ষক মুশফিক তাঁর স্ট্যাম্প ভেঙ্গে দেন। ফলে দ্রুতই দুই ওপেনারকে হারিয়ে বিপাকে পড়েছে উইন্ডিজ।

৫১ মিনিটে অলআউট উইন্ডিজঃ

আজ টেস্টের তৃতীয় দিন ৫ উইকেটে ৭৫ রান নিয়ে খেলা শুরু করা উইন্ডিজ মাত্র ৫১ মিনিট ক্রিজে টিকতে পেরেছে। টাইগার অফ স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজের বোলিং ঘূর্ণিতে মাত্র ১১১ রানে অলআউট হয়েছে তারা।

আগের দিন ৩ উইকেট শিকার করা মিরাজ আজ খেলতে নেমে উইন্ডিজদের ৪টি উইকেট তুলে নিয়েছেন একে একে। অধিনায়ক সাকিবও অবশ্য কম যাননি। সফরকারীদের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দিয়েছেন তিনিই।

ফলো অনে উইন্ডিজঃ

১১১ রানে গুঁটিয়ে যাওয়ার ফলে ৩৯৭ রানে পিছিয়ে থেকে ফলো অনে পড়েছে ক্যারিবিয়ানরা। ফলে আবারও ব্যাটিংয়ে নামতে হয়েছে তাদের। ৫৮ রানে ৭ উইকেট শিকার করে ক্যারিয়ার সেরা ফিগার নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন মিরাজ। অপরদিকে সাকিব নিয়েছেন ২৭ রানে ৩ উইকেট। উইন্ডিজদের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৯ রান করতে পেরেছেন শুধু শেন ডওরিচ। অপরদিকে শিমরন হেটমায়ারের ব্যাট থেকে এসেছে ৩৭ রান।

দ্বিতীয় দিনঃ

রিয়াদের অর্ধশতকঃ

সাকিব আল হাসান সেঞ্চুরি বঞ্চিত হলেও অপরপ্রান্তে থিতু হয়ে খেলতে থাকা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ তাঁর নতুন সঙ্গী লিটন দাসের সঙ্গে জুটি বেঁধে ফিফটি তুলে নিয়েছেন ইতিমধ্যে। লিটনের সঙ্গে জুটি গড়ে দলকে বড় স্কোরের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

সাকিবের বিদায়ঃ

টাইগারদের হয়ে আজ দিনের শুরু থেকে দারুণ ব্যাটিং করছিলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ৫৫ রানে দিন শেষ করা সাকিব নিজের স্কোরটিকে শতকের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু কিমার রোচের বলে ইনিংসের ৯৭তম ওভারের পঞ্চম বলে সাজঘরে ফিরতে হয়েছে তাঁকে। রোচের করা বলটি ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটরক্ষক শাই হোপের হাতে ধরা পড়েন সাকিব। ফলে পরিসমাপ্তি ঘটে তাঁর ৮০ রানের অনবদ্য ইনিংসটির।

প্রথম দিনঃ

সাকিবের সিদ্ধান্তে ব্যাট করতে নেমে অভিষিক্ত সাদমান ইসলাম অনিক এবং সৌম্য সরকারের ব্যাটে শুরুটা ভালোই করে টাইগাররা। শুরু থেকেই দুই ব্যাটসম্যান দায়িত্ব নিয়ে ব্যাট করছিলেন। কিন্তু শুরুটা ভালো হলেও ব্যক্তিগত ১৯ রানে রস্টন চেজকে অফ সাইডে ড্রাইভ করতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে বসেন সৌম্য।

চট্টগ্রাম টেস্টেও সৌম্য একই ধরণের শট খেলতে গিয়ে সাজঘরে ফিরেছিলেন স্লিপে ক্যাচ দিয়ে। তাঁর ভুলের কারণে সাজঘরে নেমেছেন মমিনুল হক। এরপরই লাঞ্চ বিরতিতে যায় টাইগাররা।

লাঞ্চের ঠিক দুই বল আগে অপ্রয়োজনীয় শট খেলে বিদায় নেন মমিনুল হক। সাদমান ইসলামের সঙ্গে হাল ধরেই খেলছিলেন তিনি। একপ্রান্তে সাদমান থিতু হয়ে খেললেও নিজের স্বাভাবিক খেলাটাই খেলছিলেন মমিনুল।

কিন্তু ঠিক লাঞ্চের আগের উইন্ডিজ পেসার কিমার রোচের বলে অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বলকে পুল করতে গিয়ে ক্যাচ আউট হয়ে ফেরেন মমিনুল। ২৯ রান আসে তাঁর ব্যাট থেকে। মমিনুল ফিরলেও মিঠুনের সঙ্গে হাল ধরে খেলে তামিম ইকবাল, জাভেদ ওমর বেলিম এবং হান্নান সরকারের পর চতুর্থ বাংলাদেশী ওপেনার হিসেবে অভিষেক টেস্ট ইনিংসে অর্ধশতক হাঁকান সাদমান ইসলাম।

১৪৭ বলে টেস্ট মেজাজে ব্যাট করে এই মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। তাঁর ফিফটির পাশাপাশি দলীয় ১০০ রানের পুঁজি পেয়েছে টাইগাররা। মোহাম্মাদ মিঠুনকে সঙ্গে নিয়ে উইকেটে থিতু হয়ে ব্যাট করছেন এই বাঁহাতি ওপেনার।

অন্য প্রান্তে অভিষিক্ত সাদমান ইসলামের সাথে ভালোই খেলছিলেন মোহাম্মদ মিঠুন। জুটি গড়েছিলেন ৬৪ রানের। কিন্তু ৫৭তম ওভারে বোলিংয়ে এসে নিজের প্রথম বলেই মিঠুনকে বোল্ড করে সাজঘরে পাঠান ক্যারিবিয়ান স্পিনার দেবেন্দ্র বিশু।

তাঁর গুগলি বলটিকে পুল করতে গিয়ে আউট হয়ে ফেরেন তিনি। আর এরই সাথে টানা তিন ইনিংসে বিশুর বলে ফিরতে হলো মিঠুনকে। এর আগের টেস্টের দুই ইনিংসেও একই স্পিনারের বলে আউট হয়েছিলেন তিনি।

মিঠুনের বিদায়ের পর অর্ধশতক হাঁকানো সাদমানও বেশীক্ষণ টিকতে পারেননি। ক্যারিবিয়ান স্পিনার দেবেন্দ্র বিশুর ৫৯তম ওভারের পঞ্চম বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হন এই ওপেনার। এরই সাথে শেষ হয় তাঁর ৭৬ রানের ইনিংসটির।

চা বিরতির পর ব্যাট করতে নেমে বেশীক্ষণ টিকে থাকতে পারেন নি মুশফিকুর রহিম। উইন্ডিজ পেসার শেরমন লুইসের ফুল লেন্থের ছোড়া বলে বোল্ড হয়ে বিদায় নেন মুশফিক। তাঁর বিদায়ে ক্রিজে নামেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। পাঁচ উইকেট হারালেও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ এবং সাকিব আল হাসানের ব্যাটে ভর করে দলীয় ২০০ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে সঙ্গে নিয়ে স্কোরবোর্ডে রান বাড়িয়ে চলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ৫০ রানের ঊর্ধ্বে জুটিও গড়েন দুইজন। সেই সঙ্গে ফিফটি তুলে নেন দলপতি সাকিব আল হাসান। সাকিব এবং রিয়াদের ব্যাটে ভর করেই ৫ উইকেটে ২৫৯ রান নিয়ে দিন শেষ করে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ একাদশঃ

সাদমান ইসলাম, সৌম্য সরকার, মমিনুল হক, মোহাম্মদ মিঠুন, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, লিটন দাস, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, নাইম হাসান। স্কোর-

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসঃ ৫০৮/১০ (মাহমুদুল্লাহ- ১৩৬, সাদমান-৭৬) (রোচ- ২/৬১, ব্র্যাথওয়েট- ২/৫৭)

উইন্ডিজ প্রথম ইনিংসঃ ১১১/১০ (হেটমায়ার- ৩৯, দেবেন্দ্র বিশু- ৪) (মিরাজ- ৭/৫৮, সাকিব- ৩/২৭)

উইন্ডিজ দ্বিতীয় ইনিংসঃ (ফলো অন)- ১৫০/৭ (৪২ ওভার) (দেবেন্দ্র বিশু- ৪*, হেটমিয়ার ৫৫*) (সাকিব- ১/১০, মিরাজ-২/৯ , তাইজুল ২/১১)উইন্ডিজ একাদশঃ

ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট (অধিনায়ক), কাইরন পাওয়েল, শাই হোপ, সুনীল আমব্রিস, রস্টন চেজ, শিমরন হেটমায়ার, শেন ডওরিচ (উইকেটরক্ষক), জোমেল ওয়ারিকেন, দেবেন্দ্র বিশু, কেমার রোচ, শিরমন লুইস।

খেলা - এর সব খবর

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ