ঢাকা, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হলে পরিনাম হবে,কাদের

রাজনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০১৮ নভেম্বর ২৭ ১২:১২:০৪
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হলে পরিনাম হবে,কাদের

এবার আর সে সুযোগ থাকবে না। চিরস্থায়ীভাবে বহিষ্কার। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পরিবর্তন চাওয়া প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, হেরে যাবার ভয়ে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে।

নির্বাচনের বাকি আছে আর মাত্র এক মাস। এসময় যারা নির্বাচনের আগে ইলেকশন কমিশনের পরিবর্তন চান তারা নির্বাচনে অংশ নেবে- এটা আমার বিশ্বাস হয় না। আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী আবু সাইয়িদসহ অন্য নেতাদের গণফোরামে যোগ দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ড. কামাল হোসেনই যেখানে আওয়ামী লীগ থেকে চলে গেছেন, কাদের সিদ্দিকী আওয়ামী লীগে নেই, সুলতান মনসুর নেই, মান্না নেই। তাদের তুলনায় এরা কি গুরুত্বপূর্ণ লোক? সেখানে আবু সাইয়িদ তো কিছুই না। এসব নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই।

এসব ঘটনায় বাংলাদেশের জনগণের কাছে আমাদের জনপ্রিয়তা বেড়েছে বৈ কমেনি। দিনে দিনে আমাদের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। এটাই আমাদের বড় অ্যাসেট। জোট ও মহাজোটের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির নামে বানরের পিঠা ভাগ করা হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি। শরিকদের সঙ্গে বোঝাপড়ার মাধ্যমে ৬৫-৭০ আসন ছেড়ে দেয়া হবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা কৌশলে মার খেতে চাই না, কৌশলে এগিয়ে যেতে হবে। এতে আমরা কারো থেকে পিছিয়ে থাকতে চাই না। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা দলীয়ভাবে কিছু প্রার্থীর তালিকা করে মনোনয়নের চিঠি দিয়েছি। এটা কিন্তু প্রেসের জন্য করিনি। মিডিয়া এমন অনেক প্রার্থীরর নাম প্রকাশ করেছে, যাদের আমরা চিঠি দেইনি বা যাদের নাম তালিকায় নেই। এটা আমাদের জন্য একটা বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।

আপনারা যদি বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে দেন তাহলে আপনাদের জন্যও লজ্জাকর। যে প্রার্থী মনোনয়ন পায়নি তার নামও টেলিভিশনের স্ক্রলে দেয়া হয়েছে। আপনারাই বলেন, আপনাদের কারো নাম নেই কিন্তু স্ক্রলে যদি দেন তাহলে কেমন দেখায়? নৌকার প্রার্থীদের মনোনয়নের চিঠি দেয়ার পর কোন কোন এলাকায় সংঘর্ষ বা মারামারির ঘটনা ঘটেছে- এ বিষয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বিশাল পরিবার। অনেকের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন থাকতে পারে এমপি হওয়ার। এটা খুব স্বাভাবিক, একটি পরিবারের মধ্যেও অনেক সময় ক্ষোভ-অভিমান থাকে। যেটা খুব ব্যাপক আকারে বাংলাদেশে হয়, এবার সেটা হবে না বলে আশা করছি। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি, ১৪ দল, যুক্তফ্রন্ট সব মিলিয়ে ইলেকট্রিভল ইলিজিবল প্রার্থী দেয়া হবে। জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য জনপ্রিয় নির্বাচনে বিজয় অর্জন করবে- এমন প্রার্থীই মনোনয়ন পাবে। তিনি বলেন, উইনেবল যারা প্রার্থিতার জন্য আবেদন করেছেন, তারাই মনোনয়ন পাবেন। আমরা জেতার জন্য নির্বাচন করছি।

গণতন্ত্র নাম্বারের লড়াই। কে কত সিট পাবে, সরকার গঠন করতে হলে গণতন্ত্রে মেজরিটি পেতে হবে। কাজেই সিট কমিয়ে কি টার্গেট নাম্বার অর্জন করতে পারব? যাদের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে কেউ পরিবর্তন হতে পারে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রদ বদলের পালা তো ২৮ তারিখে শেষ হয়ে যাবে। সেজন্য আমরা বিষয়টাকে ভেবেচিন্তে দেখছি। কোনো আসনে পরিবর্তন হলে অধিকতর যোগ্য প্রার্থীই বিবেচনায় থাকবে। তাহলে কি আপনারা বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ঘোষণার দিকে তাকিয়ে আছেন- এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এমনটি আমরা ভাবছি না। আমি তো আমার প্রতিপক্ষের কৌশলের কাছে পিছিয়ে থাকতে চাই না। নির্বাচনী কৌশলকে কোনোভাবে ইগনোর করা যায় না। নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে। এসময় তিনি বলেন, আমরা ২৩১ জনকে চিঠি দিয়েছি। কোন কোন আসনে দুজনও আছে।

সেক্ষেত্রে তাদের আসনগুলোতে আবারও জরিপ করা হবে। যার জনপ্রিয়তা বেশি ও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জিততে পারবে তাকে মনোনয়ন দেয়া হবে। এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, জোটের অন্যান্য শরিকেরাও একইভাবে চিঠি দিয়ে মনোনয়ন দেয়া শুরু করেছে। জাতীয় পার্টি, বিকল্পধারার নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্ট, ১৪ দল চিঠি দিচ্ছে। সবার তালিকার পর যাচাইবাছাই করে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করব। এখানে কৌশলগত, টেকনিক্যাল ও টেকটিকেল বিষয়গুলো বিবেচনার আছে। আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করার কথা থাকলেও গতকাল তা করা হয়নি। এটা স্থগিত করায় এবং বাকি প্রার্থীদের তালিকা ঘোষণা না করায় দুঃখ প্রকাশ করেন ওবায়দুল কাদের। শরিক ও মহাজোটের কারণে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে প্রার্থী তালিকা পরিবর্তন হবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, আমরা যাদের চিঠি দিয়েছি, তাদের বাইরে তো কাউকে মনোনয়ন দেবো না। তাদের কোনো প্রার্থী যদি অধিকতর গ্রহণযোগ্য হয় তাহলে আমরা আমাদের প্রার্থীকে সেটেলাইজড করবো। এবারের মনোনয়নে চমক কী? এ বিষয়ে বলেন, আমরা ৪৫ জন নতুন মুখ দেখছি। এসময় কক্সবাজারে আবদুর রহমান বদি ও টাঙ্গাইলের আমানুর রহমান খান রানার পরিবর্তে মনোনয়ন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সাংবাদিকরা।

জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বদির বউয়ের অপরাধটা কী? বদির কারণে তার বউ কি অপরাধী হবে? তার ছেলেমেয়েদের দোষ কী? কনটোভারসারি আছে তাই আমরা বদিকে মনোনয়ন দেইনি। টাঙ্গাইলে তার বাবা আতাউর রহমান খানকে মনোনয়ন দিয়েছি। তিনি সারাজীবন আওয়ামী লীগ করেছেন। এখন তার ছেলে কারাগারে। তিনি খুনি কি না- এটা এখনো আদালতে প্রমাণ হয়নি। এই অবস্থায় আমরা তাকে মনোনয়ন দিতে পারতাম। আমরা তাকে না দিয়ে কনটোভারসারি এভয়েড করেছি। তিনি বলেন, ৭টি জনমত জরিপ, এত সব বিতর্কের পরও এগিয়ে আছে বদি। ৭টি জরিপ এতো সবের পরেও এগিয়ে আছে আমানুর রহমান খান রানা। তার পরও তাদের মনোনয়ন দেইনি।

এসময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বেসরকারিখাত বিষয়ক উপদেষ্টা ঢাকা-১ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী সালমান এফ রহমান, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বডুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য রেমন্ড আরেং, মারুফা আকতার পপি প্রমুখ।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে