ঢাকা, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

যে কারনে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ছাড়াই দলের প্রার্থীদের চিঠি দিচ্ছে বিএনপি

রাজনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০১৮ নভেম্বর ২৬ ১২:৪৯:০০
যে কারনে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ছাড়াই দলের প্রার্থীদের চিঠি দিচ্ছে বিএনপি

কিন্তু অনেকটা ঘোষণা ছাড়াই গোপনে দলের মনোনীত প্রার্থীদের চূড়ান্ত প্রত্যয়নপত্র দেয়া শুরু করেছে বিএনপি।দলীয় প্রত্যয়নপত্রের একটি ছবি ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ঢাকার বিভিন্ন গণমাধ্যমের হাতেও সেই ছবি এসে পৌছেছে।

চিঠিতে মনোনয়ন পাওয়া বিএনপির একজন ভাইস চেয়ারম্যানের নাম রয়েছে। এতে সই করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।চিঠিতে প্রার্থীর আসন নম্বর, নাম, ভোটার নম্বরের মতো গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো থাকছে।

জানা গেছে, রোববার রাত থেকেই দলীয় প্রার্থীদের চূড়ান্ত মনোনয়নের চিঠি দেয়া শুরু করে বিএনপি।দলের একাধিক নেতাকে বিএনপি মহাসচিবের সাক্ষর করা প্রত্যয়নপত্র দেয়া হয়েছে।

তবে চিঠি পাওয়া নেতারা কৌশলগত কারণে মুখ খুলতে চাচ্ছেন না।

জানা গেছে, যেসব আসনে বিএনপির একক প্রার্থী চূড়ান্ত, জোটের কোনো দাবি নাই ওইসব প্রার্থীদের প্রত্যয়নপত্র দেয়া হচ্ছে।তবে এক্ষেত্রে কঠোর গোপনীয়তার নীতি অবলম্বন করছে দলটি।

বিএনপির গুলশান কার্যালয় সূত্র বলছে, আজ দুপুর থেকে দলের প্রার্থীদের হাতে মনোনয়নের চিঠি আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দেয়া হতে পারে।প্রার্থীদের বেশ কয়েকজনকে ফোন করে দুপুরে কার্যালয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

গাজীপুর-৪ আসনের বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী শাহ রিয়াজুল হান্নান জানান, দলীয় মনোনয়নের চিঠি নেয়ার জন্য তাকে বিএনপির গুলশান কার্যালয় থেকে ফোন করা হয়েছে। সোমবার দুপুর ১টার মধ্যে সেখানে থাকতে বলা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আসন বণ্টন নিয়ে চূড়ান্ত সমঝোতা এখনও বিএনপির হয়নি। আজকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে বৈঠকে ফ্রন্টভূক্ত দলগুলো কে কতটি আসন পাবে তা নিশ্টিত করা হবে।

জোটের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি চূড়ান্ত না হওয়ায় অনানুষ্ঠানিকভাবে নিজ দলের মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে মনোনয়নচিঠি বিতরণ করছে বিএনপি। বিশেষ করে দূরের জেলাগুলোতে যারা প্রার্থী হচ্ছেন তাদের মনোনয়ন চিঠি রোববার থেকে দেওয়া শুরু করেছে।

সেই ক্যাটাগরিতেই ভোলা-৩ আসনের জন্য মনোনীত মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, ঝালকাঠি-২ আসনের জন্য মনোনীত ইসরাত সুলতানা এলিন ভুট্টোর মনোনয়ন চিঠি তাদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক নেতা বলেন, প্রার্থী চূড়ান্তের ক্ষেত্রে বিএনপির যে সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার সেটাই করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ যাদের প্রার্থী ঘোষণা করছে তাদের নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ হচ্ছে।

জানা গেছে, বিএনপি প্রার্থী তালিক আরও একদিন আগেই চূড়ান্ত হয়ে আছে। কিন্তু দুই জোটের সঙ্গে আসন বণ্টন নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হওয়ায় প্রার্থী তালিকা দিতে দেরি হচ্ছে।

মাঠ জরিপ ও প্রার্থীদের অতীত কর্মকাণ্ড ও তৃণমূল নেতাদের মত নিয়ে দলের স্থায়ী কমিটির প্রার্থীদের খসড়া তৈরি করে রাখে। মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেয়ার সময় তালিকার খসড়া করা হয়।

খসড়া তালিকা বেশিরভাগ আসনে একাধিক প্রার্থীর নাম ছিল। ওই খসড়া থেকে প্রার্থী চূড়ান্ত করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

সব কিছু ঠিক থাকলে আজ দুপুরের পর থেকে দলীয় প্রার্থীদের চূড়ান্ত মনোনয়নের চিঠি দেয়া হবে।

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, কোনো কোনো আসনে একাধিক ব্যক্তিকে মনোনয়নের চিঠি দেয়া হতে পারে। ওই সব আসনে মনোনয়ন প্রত্যাহারের আগে একক প্রার্থী দেবে বিএনপি।

কোনো কোনো আসনে দুজন রাখা হচ্ছে এ কারণে যে, আইনি জটিলতায় কারও প্রার্থিতা যদি বাতিল হয়ে যায়, তবে সেখানে যেন প্রার্থী শূন্য না থাকে।

তাই কোনো কোনো আসনে কৌশলগত কারণে একাধিক প্রার্থীকে মনোনয়নপত্র দাখিলের জন্য প্রত্যয়নপত্র দেয়া হতে পারে। অবশ্য মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের ফরমেও প্রার্থীদের স্বাক্ষর রাখা হবে।

প্রার্থীজটের কারণে জটিলতা তৈরি হওয়া আসনগুলোর ব্যাপারে আগামী ৮ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আগেই চূড়ান্ত করা হবে।

এ ক্ষেত্রে শরিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদেরও মনোনয়ন জমা দিতে বলা হয়েছে বিএনপির পক্ষ থেকে। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত যোগ্য প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে থাকায় আর দলের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা তারেক রহমান লন্ডনে অবস্থান করায় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মনোনয়নের চিঠিতে স্বাক্ষর করছেন।

এ সংক্রান্ত দলের সিদ্ধান্তের একটি চিঠি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদের স্বাক্ষরে প্রতিটি জেলার রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।

গতকাল রোববার দল ও জোটের প্রার্থী নির্ধারণে দফায় দফায় বৈঠক করে বিএনপি। বিকালের পর থেকেই গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের সামনে ভিড় বাড়তে শুরু করে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নেতা-কর্মীদের ভিড়ও বাড়তে থাকে।

রাতে প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা গুলশান কার্যালয়ে আসেন। সেই সঙ্গে জোট ও ফ্রন্টের নেতাদের কর্মী-সমর্থকরাও গুলশান কার্যালয়ে জড়ো হন।

কার্যালয়ের ৮৬ নম্বর রোডের দুই পাশে ব্যাপক সংখ্যক পুলিশি নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। তবে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

বিকালে গুলশান কার্যালয়ে আসেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এরপর বিএনপির সিনিয়র নেতারাও সন্ধ্যার পর সেখানে আসেন।

সুত্রঃ যুগান্তর

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে