ঢাকা, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

বিএনপিকে চাপে রাখার কৌশল

রাজনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০১৮ নভেম্বর ২৩ ১২:০৬:১৬
বিএনপিকে চাপে রাখার কৌশল

অবশ্য অন্যদিকে জামায়াতের এই চলমান আগাম ভোট প্রক্রিয়াকে তাদের প্রধান জোট শরিক বিএনপিকে চাপে রাখার কৌশল হিসেবে দেখছে বিএনপি নেতারা।

তবে আনুষ্ঠানিক সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখলেও ভোটের মাঠে তারা জামায়াতের সঙ্গে আগের মতোই সম্পর্ক রেখে এবং তাদের সহায়তা নিয়ে এগিয়ে যাবে বলে বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের ইঙ্গিত রয়েছে বলে দলীয় নেতাকর্মীদের সূত্রে জানা গেছে।

বিশেষ করে সারা দেশের যেসব জায়গায় জামায়াতের ভোট ব্যাংক রয়েছে সেসব আসনে দলটির সঙ্গে কৌশলী সম্পর্ক রেখেই বিএনপি নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চায় বলে সূত্রটি জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও রাসিকের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু যুগান্তরকে বলেন, জামায়াতের সঙ্গে এখন বিএনপির আনুষ্ঠানিক সেই সাংগঠনিক সম্পর্ক আর নেই। তবে সামাজিকভাবে একটা যোগাযোগ তো আছে। অনেক আসনে জামায়াতের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ভোট রয়েছে। সেসব ভোট বিএনপির কাছে কিছুটা হলেও গুরুত্বপূর্ণ। এসব ক্ষেত্রে বিএনপি নিজস্ব দলীয় কৌশলেই এগিয়ে যাবে এবং ওই সব আসনে নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিতে যা করা প্রয়োজন তাই করবে।

জামায়াতের ঢাকা দক্ষিণের আমির ও কেন্দ্রীয় কার্যনিবৃাহী পরিষদের সদস্য নুরুল ইসলাম বুলবুল মঙ্গলবার যুগান্তরকে বলেছেন, দেশের কিছু আসন রয়েছে- বিশেষ করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সাতক্ষীরা, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জসহ দেশের ৫০টির মতো আসন রয়েছে যেখানে জামায়াতে ভোট আর বিএনপির ভোট প্রায় সমান সমান।

এসব আসনের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের তিনটি আসনেই এককভাবে ভোট করলে জামায়াতের প্রার্থীদের জয়লাভের সম্ভাবনা অনেক। তিনি জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনে তিনি নিজে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছেন। এই আসনটি তাদের কাছে খুবই সম্ভাবনার। গত পৌর নির্বাচনে জামায়াতের মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।

তিনি আরও জানান, বিএনপির মনোনয়ন সাক্ষাতকার শেষ হলেই তারা আসন ভাগাভাগি নিয়ে দলটির সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনায় বসবে। এখানেই সিদ্ধান্ত হবে জামায়াতে স্বতন্ত্র নাকি বিএনপির দলীয় প্রতীক ধানের শীষে ভোট করবেন। জামায়াতের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো থেকে আরও জানা গেছে, ২০০১ সালে প্রথম বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করে জামায়াতের ১৭ জন প্রার্থী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপরে ২০০৮ সালে ৩৫ আসনে জোটগতভাবে অংশ নিয়েছিল জামায়াত। সেবার উন্মুক্ত ছিল আরও ৪টি আসন। এই বার জামায়াতের মাত্র দু’জন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান জানিয়েছেন, তারা ৫০ থেকে ৬০টি আসনে বিএনপির সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছতে চায়। এরই অংশ হিসেবে দেশের ৬২ আসনে দলের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। শিগগিরই জোটের বৈঠকেই আসন ভাগাভাগির বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।

দেশের যেসব আসনে ইতিমধ্যে জামায়াতের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- ঠাকুরগাঁও-২ আবদুল হাকিম, দিনাজপুর-১ মোহাম্মদ হানিফ, দিনাজপুর-৪ আফতাব উদ্দিন মোল্লা, দিনাজপুর-৬ মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম, নীলফামারী-১ মাওলানা আবদুস সাত্তার, নীলফামারী-২ মনিরুজ্জামান মন্টু, নীলফামারী-৩ মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম, লালমনিরহাট-১ আবু হেনা মো. এরশাদ হোসেন সাজু, রংপুর-৫ অধ্যাপক গোলাম রব্বানী, কুড়িগ্রাম-৪ মোস্তাফিজুর রহমান, গাইবান্ধা-১ মাজেদুর রহমান সরকার, গাইবান্ধা-৩ মাওলানা নজরুল ইসলাম লেবু, গাইবান্ধা-৪ ডা. আবদুর রহিম সরকার, জয়পুরহাট-১ ডা. ফজলুর রহমান সাঈদ, বগুড়া-২ অধ্যক্ষ শাহাদাতুজ্জামান, বগুড়া-৪ তায়েব আলী, বগুড়া-৫ দবিবুর রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ কেরামত আলী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ অধ্যাপক ইয়াহিয়া খালেদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ নুরুল ইসলাম বুলবুল, নওগাঁ-৪ খ ম আবদুর রাকিব, রাজশাহী-১ অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, রাজশাহীর-৩ অধ্যাপক মাজেদুর রহমান, নাটোর-১ অধ্যাপক তাসনিম আলম, নাটোর-৪ দেলোয়ার হোসেন খান, সিরাজগঞ্জ-৪ রফিকুল ইসলাম খান, সিরাজগঞ্জ-৫ অধ্যক্ষ আলী আলম, পাবনা-১ ডা. আবদুল বাসেত, পাবনা-৪ আবু তালেব মণ্ডল, পাবনা-৫ ইকবাল হুসাইন, মেহেরপুর-১ তাজ উদ্দীন আহমদ, কুষ্টিয়া-২ আবদুল গফুর, চুয়াডাঙ্গা-২ মাওলানা রুহুল আমিন, ঝিনাইদহ-৩ মতিয়ার রহমান, যশোর-১ আজিজুর রহমান, যশোর-২ আবু সাইদ মুহাম্মদ সাদাত হোসাইন, যশোর-৫ গাজী এনামুল হক, যশোর-৬ মুক্তার আলী, বাগেরহাট-৩ আবদুল ওয়াদুদ, বাগেরহাট-৪ অধ্যাপক আবদুল আলীম, খুলনা-৫ অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, খুলনা-৬ মাওলানা আবুল কালাম আযাদ, সাতক্ষীরা-১ অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহ, সাতক্ষীরা-২ মাওলানা আবদুল খালেক মণ্ডল, সাতক্ষীরা-৩ মুফতি রবিউল বাশার, সাতক্ষীরা-৪ গাজী নজরুল ইসলাম, পটুয়াখালী-২ শফিকুল ইসলাম মাসুদ, পিরোজপুর-১ শামীম সাঈদী, পিরোজপুর-২ মাসুদ সাঈদী, ময়মনসিংহ-৬ জসিমউদ্দিন সরকার, ঢাকা-১৫ শফিকুর রহমান, সিলেট-৫ ফরিদউদ্দিন চৌধুরী, সিলেট-৬ হাবিবুর রহমান, কুমিল্লা-৯ এএফএম সোলায়মান চৌধুরী, কুমিল্লা-১১ ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, ফেনী-৩ ডা. ফখরুদ্দিন মানিক, লক্ষ্মীপুর-২ রুহুল আমিন, লক্ষ্মীপুর-৩ ডা. আনোয়ারুল আজীম, চট্টগ্রাম-১০ শাহজাহান চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১৫ আ ন ম শামসুল ইসলাম, চট্টগ্রাম-১৬ জহিরুল ইসলাম ও কক্সবাজার-২ হামিদুর রহমান আযাদ।

সুত্রঃ যুগান্তর

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে