গণতন্ত্রের স্বার্থেই অবাধ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অপরিহার্য যারা বললেন
গত বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে মার্কিন কংগ্রেসের মানবাধিকার কমিশন আয়োজিত বাংলাদেশবিষয়ক এক ব্রিফিংয়ে এমন মত উঠে এসেছে। কমিশনের কো-চেয়ার র্যান্ডি হাল্টগ্রেন ও জেমস ম্যাকগভার্ন যৌথভাবে বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ওই ব্রিফিংয়ের আয়োজন করেন।
ওই ব্রিফিংয়ে অংশ নিয়ে আমন্ত্রিত বক্তারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক সহিংসতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় অব্যাহত হস্তক্ষেপে তাঁদের উদ্বেগ তুলে ধরেন। তাঁরা স্বীকার করেন, ধর্মীয় স্বাধীনতা, বিশেষত সংখ্যালঘুদের অধিকার সংরক্ষণে বর্তমান সরকার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুকে আশ্রয়দানে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের মহানুভবতারও তাঁরা প্রশংসা করেন।
আলোচনা সঞ্চালনা করেন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল এনডাওমেন্ট ফর ডেমোক্রেসির জ্যেষ্ঠ কর্মসূচি কর্মকর্তা মোনা ডাইভ। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যেহেতু খুব দ্রুত নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, এই আলোচনা অত্যন্ত সময়োপযোগী। অনেক বিশ্লেষকের মতে, কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠেছে ক্ষমতাসীন দল। ভিন্নমত আর বিরোধীদের মতের কণ্ঠরোধ করতে অগণতান্ত্রিক ক্ষমতার চর্চা করছে। তাঁর মতে, বাংলাদেশের গণতন্ত্রের স্বার্থে আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য হওয়াটা জরুরি, যা জনগণের চোখে বৈধ বলে গণ্য হবে। বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউটসহ (এনডিআই) বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বেশ কিছু সুপারিশ করেছে। এসব সুপারিশের মধ্যে সরকারকে নির্বাচন কমিশনের কাজে কোনো রকম হস্তক্ষেপ করতে নিষেধ করেছে। দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক ও গণমাধ্যমকর্মীদের বাধাবিপত্তি ছাড়া দায়িত্ব পালন করতে দেওয়া এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। সুপারিশের মধ্যে বিরোধী দলের অবাধে প্রচারণা চালানো এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেপ্তারের অবসানের কথাও বলা হয়েছে।
নির্ধারিত আলোচক যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়াবিষয়ক প্রচারবিষয়ক পরিচালক জন সিফটন বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ এক সংকটের মধ্যে অতিবাহিত করছে। পরপর দুটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ের পর দেশে এখন কার্যত একদলীয় শাসন চলছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ভয়ের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। বিরোধী দলের বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী কারাবন্দী রয়েছেন। তথ্যব্যবস্থার ওপরও কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে।
সিফটন বলেন, যে ‘ভীতি ও সহিংসতার সংস্কৃতি’ বাংলাদেশে বিদ্যমান, তাতে আগামী নির্বাচন যে মুক্ত ও স্বাধীন হবে, সে কথা ভাবার কোনো কারণ নেই। বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার কারাবন্দীতে উদ্বেগ জানান তিনি।
সিফটন বলেন, মানবাধিকার প্রশ্নে বড় কথা বলার মতো যোগ্যতা মার্কিন সরকারের নেই। এই প্রশ্নে খুব বেশি কিছু সে করতে পারবে না। তবে মার্কিন কংগ্রেস বাংলাদেশের ওপর প্রভাব পড়ে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা রাখে। এসব ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে সামরিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা সীমিতকরণ, প্রত্যক্ষ নিষেধাজ্ঞা ও শুল্ক আরোপ।
যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতাবিষয়ক কমিশনের বিশ্লেষক ওয়ারিস হুসেইন এক লিখিত বক্তব্যে রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের আশ্রয়দানে বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করেন। সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার প্রসঙ্গে ওয়ারিস হুসেইন বলেন, দক্ষিণ এশিয়াজুড়েই এসব জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। তবে বাংলাদেশে লক্ষণীয় উন্নতি ঘটেছে। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ কর্তৃক প্রদত্ত পরিসংখ্যান উল্লেখ করে তিনি বলেন, সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংস আক্রমণের ঘটনা কমে এসেছে। যেমন, ২০১৬ সালে যেখানে এসব ঘটনার সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৫০০, সেখানে ২০১৮ সালের আগস্ট পর্যন্ত তা কমে এসে ৩৮০-তে দাঁড়িয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাহায্য সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশনের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক লরা ব্রামোন বলেন, সব সময়ই নির্বাচনকালীন সহিংসতার অন্যতম শিকার হয় নারী ও শিশুরা।
আলোচনার প্রশ্নোত্তরপর্বে অংশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাসের উপপ্রধান মাহবুব সালেহ বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত নন, এমন আটক বিএনপির রাজনৈতিক বন্দীদের তালিকা চেয়েছেন। খালেদা জিয়া প্রসঙ্গে তিনি জানান, বিরোধী নেত্রীকে সরকার জেলে পাঠায়নি, তিনি দুর্নীতির দায়ে আদালত কর্তৃক দণ্ডিত হয়েছেন। তিনি আশ্বাস দেন, আসন্ন নির্বাচনে বাংলাদেশ বিদেশি পর্যবেক্ষকদের সাদর আমন্ত্রণ জানাবে।
সাবেক কংগ্রেসম্যান টম ল্যান্টসের নামানুসারে প্রতিষ্ঠিত মানবাধিকার কমিশনের এটি ছিল কংগ্রেস সদস্য ও তাঁদের সহকারীদের জন্য আয়োজিত একটি পর্যায়ক্রমিক ব্রিফিং। এর আগে ২০১৫ সালে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি প্রশ্নে এই কমিশন একটি উন্মুক্ত শুনানির আয়োজন করেছিল। কমিশনের এক ঘোষণায় বলা হয়, এই ব্রিফিংয়ের উদ্দেশ্য আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতিতে দেশজুড়ে যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, তা দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর কী প্রভাব ফেলে, তার পর্যালোচনা।
সুত্রঃ- প্রথম আলো
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্কোয়াডে আসছে পরিবর্তন, বাদ পড়ছেন যে ক্রিকেটার
- সৌদি রিয়াল রেটের লম্বা লাফ, জেনেনিন আজকের রেট কত
- সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশাল সুখবর, আসলো নতুন ঘোষণা
- সমন্বয়ক সারজিস আলমের পরিবারে শোকের ছায়া
- বিপিএল-এ ফিক্সিং নিয়ে আলোচনা: সন্দেহভাজন ১০ ক্রিকেটারের তালিকা প্রকাশ
- এক ম্যাচের জন্য যত টাকা নিলেন রাসেল-জেমস ভিন্স-টিম ডেভিড
- ব্রেকিং নিউজ: নিষিদ্ধ হলেন তানজিম সাকিব
- এক পরিবর্তন নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য বাংলাদেশের স্কোয়াড ঘোষণা, দেখেনিন কপাল পুড়লো যার
- বিপিএলের ৮ ম্যাচে ফিক্সিং সন্দেহ, ফিক্সিংয়ে সন্দেহভাজন ক্রিকেটারদের তালিকা প্রকাশ
- কমতেই আছে সৌদি রিয়াল রেট, জেনেনিন আজকের রেট কত
- ফরচুন বরিশালের একাদশ
- বিপিএল মাতিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্কোয়াডে আসছেন দুই জন
- আজকের সকল দেশের টাকার রেট
- বাড়লো আজকের সৌদি রিয়াল রেট
- বিপিএল মাতাতে আসছেন রাসেল, নারিন, ওয়ার্নার, টিম ডেভিড ও পাকিস্তানের আসিফ আলি