ঢাকা, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

ইসি কর্মকর্তাদের কক্ষে অবাধে যাতায়াত করেন বাবলা: রিজভী

রাজনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০১৮ নভেম্বর ১৬ ১৯:৪৯:৩৮
ইসি কর্মকর্তাদের কক্ষে অবাধে যাতায়াত করেন বাবলা: রিজভী

রিজভী বলেন, এই বাবলা অনুমতি ছাড়া অবাধে যাতায়াত করেন কমিশনের কর্মকর্তাদের কক্ষে। ইসির গোপনীয় তথ্য আওয়ামী লীগের অফিসে পাচার করে থাকেন। নির্বাচন কমিশন থেকেও তাকে দেয়া হয় বিশেষ ধরনের সুবিধা। তবে কমিশনের কিছু সরকারি সুবিধাভোগী কর্মকর্তার সঙ্গে রয়েছে তার বিশেষ সখ্যতা। আমাদের কাছে এ ধরনের অকাট্য তথ্যপ্রমাণ রয়েছে।

তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশ প্রতিফলনের জন্য নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত নির্বাচন ভবনে অফিস করছেন বাবলা। ২০১৭ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচটি ইমামের নেতৃত্বে ২১ সদস্যের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে যে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল, সেই প্রতিনিধিদলের অন্যতম সদস্য ছিলেন এই মুস্তাফিজুর রহমান বাবলা। এর পর সর্বশেষ গত ৭ নভেম্বর ও ১৪ নভেম্বর দুই দফা আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসেবে নির্বাচন কমিশনে যান বাবলা।

নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে থাকেন মুস্তাফিজুর রহমান বাবলা, উল্লেখ করে রিজভী বলেন, এই বাবলার ভয়ে তটস্থ নির্বাচন কমিশনের বিভিন্ন স্তরের মেধাবী কর্মকর্তারা। গোপনে তথ্য না দিলে তাদের সরকারবিরোধী লোক বলে অভিযুক্ত করে বদলিসহ নানা ধরনের হুমকিধমকি দিয়ে থাকেন তিনি। গত এক-দেড় বছরে এ ধরনের অসংখ্য ঘটনা নির্বাচন কমিশনের নজরে আনা হলেও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ নানাভাবে বাবলাদের সাহায্য-সহযোগিতা করে থাকেন।

তিনি আরও বলেন, বিশেষ করে নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহমেদ খান এর সঙ্গে তার সম্পর্ক খুবই ভালো। এ ফরহাদ আহমেদ খান সরকারের বিশেষ সুবিধাভোগী। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলার আগের দিন পুলিশের আইজিকে রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে সভা-সমাবেশ বন্ধের নির্দেশ দিয়ে যে চিঠি দেয়া হয়েছিল, সেই চিঠি স্বাক্ষরকারী এ ফরহাদ আহমেদ খান। ফরহাদ ও বাবলা যৌথভাবে আজ্ঞাবহ ইসি ও সরকারের নানা ধরনের এজেন্ডা বাস্তবায়নে লিপ্ত। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীকে স্মার্ট পরিচয়পত্র নির্বাচন কমিশন থেকে সংগ্রহ করে দেন এ বাবলা।

রিজভী বলেন, বিগত ৫ জানুয়ারির মতো আরেকটি একতরফা ও প্রহসনমূলক নির্বাচন আয়োজনের দিকে যাচ্ছে আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনে সরকারি দলকে বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে বর্তমান কমিশন। সরকার প্রতিনিয়ত আচরণবিধি ভঙ্গ করলেও কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।

তিনি বলেন, বিরোধী দলকে যেখানে নির্বাচন কমিশন আইন অনুযায়ী প্রাপ্য কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে না, সেখানে সরকারি দলকে নানা ধরনের তথ্য দিয়ে সুবিধা দেয়া হচ্ছে।

বিএনপির এ নেতা বলেন, আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন ভবনে সরকারি দলের লোকজনের অবাধ বিচরণ ঘটছে। নির্বাচন ভবনটি আজ আওয়ামী লীগের অফিসে পরিণত হয়েছে। আওয়ামী লীগের নির্দেশেই পরিচালিত হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের কিছু কর্মকর্তা।

রিজভী অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হলেও এখন পর্যন্ত মন্ত্রী-এমপিরা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানসহ নানা অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন এবং বক্তব্য রাখছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো প্রকার আচরণবিধি তৈরি হয়নি। পুরো নির্বাচনব্যবস্থায় জগাখিচুড়ি অবস্থা বিরাজ করছে। নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালন না ঘটিয়ে বরং সরকারবিরোধীদের নানাভাবে কোণঠাসা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে সরকারের আচরণবিধি ভঙ্গ করলেও নির্বাচন কমিশন থেকে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। বরং নির্বাচন কমিশনকে নানাভাবে ব্যবহার করছে সরকার। নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হলেও আজ সরকারি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। সময় থাকতে আপনারা পরিবর্তন হন, তা না হলে জনগণ আপনাদের অবৈধ কর্মকাণ্ডের দাঁতভাঙা জবাব দেবে, বলেন রিজভী।

বিএনপির এ নেতা বলেন, বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতাকর্মী ও তাদের সঙ্গে আসা বিপুলসংখ্যক কর্মী-সমর্থকের উপস্থিতি ছিল শান্তিপূর্ণ। শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থানরত নেতাকর্মীদের ওপর পরিকল্পিতভাবে পুলিশ ও আওয়ামী ক্যাডারদের সহিংস আক্রমণ এবং নাশকতার ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে সরকার।

এ জন্য নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে গতকাল বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় এবং জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সহসাধারণ সম্পাদক আরিফা সুলতানা রুমাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ বলে অভিযোগ করেন তিনি।

রিজভী বলেন, এর আগের দিন মনোনয়নপ্রত্যাশীসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আগত ৬৮ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে ৩৮ জনকে ৫ দিন পুলিশি রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।

নিপুণ রায় ও আরিফা সুলতানা রুমার নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানিয়ে রিজভী বলেন, গতরাতে জাতীয়তাবাদী যুবদল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি রফিকুল আলম মজনুর বাসভবনে পুলিশ তল্লাশির নামে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে। মজনুকে বাসায় না পেয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছে পুলিশ।

দেশব্যাপী বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি এ ধরনের পুলিশি তল্লাশির নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখার নিন্দা জানান বিএনপির এ নেতা।

সুত্রঃ যুগান্তর

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে