সিলেট টেস্টে জয়ের আশা বাংলাদেশের

ওই ম্যাচে অজিদের প্রথম ইনিংসে তোলা ৪৪৫ রানের জবাবে প্রথমবার ১৭১ রানে অলআউট হওয়া ভারত ভিভিএস লক্ষণের ক্যারিয়ার সেরা (২৮১) আর রাহুল দ্রাবিড়ের (১৮০) অসামান্য ব্যাটিংয়ের ওপর ভর করে ৬৫৭ রানের হিমালয় সমান স্কোর গড়ে উল্টো অজিদের সামনে চতুর্থ ইনিংসে ৩৮৪ রানের বিরাট টার্গেট ছুঁড়ে দেয়।
সেখানে সিলেটে জিম্বাবুয়ের কাছে তো আর ফলোঅনে পড়েনি বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ১৩৯ রানে পিছিয়ে টাইগাররা। তার সাথে আজ দ্বিতীয় ইনিংসে যোগ হয়েছে আরও ১ রান। তাতেই সব শেষ হয়ে গেছে, মাহমুদউল্লাহর দল আর পারবে না, জেতা তো বহুদুরে, হার এড়ানোও সম্ভব না- এখনই এমন ভাবা ঠিক হবে না।
আজ সবে দ্বিতীয় দিন। এখনো পুরো তিনদিন বাকি আছে। শুধু ওয়ানডে-টি টোয়েন্টি মানে সীমিত ওভারের ফরম্যাটই নয়, টেস্ট ক্রিকেটও অনিশ্চয়তায় ভরা। কবে কখন-কোথায় কি ঘটবে, আগাম বলা কঠিন। কোনো একটি সেশনেই বদলে যেতে পারে পুরো ম্যাচের চেহারা। সামনের তিন দিনে সিলেট টেস্টের চালচিত্রও পাল্টাতে পারে। আগামীকাল সোমবার তৃতীয় দিন তিন স্পিনার তাইজুল, মিরাজ আর নাজমুল অপু ভেলকি দেখালেই ঘুরে যেতে পারে ম্যাচ।
আজ দ্বিতীয় দিন শেষে বাংলাদেশ ভক্ত ও সমর্থকদের বড় অংশ এমন আশায় বুক বেঁধে আছেন। সে আশা আকাশ-কুসুম কল্পনা নয়। উইকেট এখনো বোলিং বান্ধব না হলেও ধীরে ধীরে স্পিনারদের হাতে চলে যাচ্ছে। বল একটু আধটু ঘুরছে। কখনো গুডলেন্থ স্পট থেকে আচমকা বিপজ্জনকভাবে লাফিয়েও উঠছে। তাইতো সিকান্দার রাজার সাধারণ অফস্পিনকেও মাঝে-মধ্যে কঠিন মনে হয়েছে।
কাজেই স্পিনাররা ভাল জায়গায় বল ফেলে স্পিন করাতে পারলে দ্বিতীয় ইনিংসে জিম্বাবুয়ের টুটি চেপে ধরার সুযোগ ও সম্ভাবনা আছে যথেষ্টই। রোববার দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে সফলতম বোলার তাইজুল ইসলামের কথা শুনে মনে হচ্ছে টাইগারদের ভাবনাও তেমন। তারা কিছুতেই মাথায় আনছেন না যে ম্যাচ শেষ হয়ে গেছে।
বরং তাইজুল জানিয়ে দিলেন ড্রেসিং রুম চাঙ্গা। এখান থেকেও জেতা সম্ভব- সেই আত্মবিশ্বাসটাই নাকি আছে। তাই তো এ বাঁ-হাতি স্পিনারের মুখে অমন কথা, ‘ম্যাচ যে শেষ হয়ে গেছে তাও কিন্তু না। এখনও আরও অনেক সময় আছে এই ম্যাচে।’
আজ দ্বিতীয় দিন শেষে জিম্বাবুয়ে এগিয়ে ১৪০ রানে। এখন টাইগারদের লক্ষ্য ও পরিকল্পনা কি? ম্যাচ বাঁচানোর ভাবনাই প্রবল, নাকি জয়ের চিন্তাও আছে? এমন প্রশ্নে তাইজুলের আত্মবিশ্বাসী জবাব, ‘আমরা জয়ের চিন্তাই করছি। ম্যাচে এখনও তিনদিন বাকি আছে এবং তিনদিন অনেক সময়। আর সময় যত গড়াবে উইকেটের অবস্থা ততই খারাপ হবে।’
বোঝাই যাচ্ছে, খারাপ বলতে তাইজুল উইকেট ভাঙ্গবে, বল আরও টার্ন করবে মানে স্পিনারা বাড়তি সাহায্য পাবেন- এমনটাই বুঝিয়েছেন। তাইজুলের কথায় আরও একটা ইঙ্গিত আছে। তাহলো বাংলাদেশ ধরেই নিয়েছে পিচে যতই বল ঘুরুক, স্পিনাররা যতই বাড়তি টার্ন পান না কেন, এ উইকেটে চতুর্থ ইনিংসেও পৌনে তিনশো থেকে ৩০০ রান করা সম্ভব।
প্রশ্ন ছিল জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় ইনিংসকে কত রানে বেঁধে ফেলতে পারলে জেতা সম্ভব? তাইজুলের জবাব, ‘আমরা ওদের ১৫০ রানের মধ্যে রাখতে পারলে ভাল হবে।’
তার মানে ১৪০+১৫০ = ২৯০ প্লাস রানের টার্গেট তাড়া করার মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে বাংলাদেশ। সে ক্ষেত্রে নিজেদের টেস্ট রেকর্ড ভেঙ্গে নতুন রেকর্ড গড়তে হবে। এত বড় টার্গেট তাড়া করে চতুর্থ ইনিংসে টেস্ট জয়ের রেকর্ড নেই বাংলাদেশের। যদিও ২০০৮ সালে ঢাকার শেরে বাংলায় শ্রীলঙ্কার দেয়া ৫২১ রানের হিমালয় সমান টার্গেটের পিছু ধেয়ে বাংলাদেশ ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে ৪১৩ রান করেও ১০৭ রানে হেরে গিয়েছিল।
আর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্টে নিজেদের দ্বিতীয় ও খেলার চতুর্থ ইনিংসে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোর ৫ উইকেটে ২৮৫। ২০০৫ সালে ঢাকায় ৩৭৪ রানের টার্গেটের পিছু ধেয়ে ওই রান করেছিল বাংলাদেশ।
মোটকথা, আগে কখনো জিম্বাবুয়ের সাথে ৩০০ রানের চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে পারেনি বাংলাদেশ। তার মানে এই ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে দ্বিতীয় ইনিংসে দেড়শো’তে বেঁধে ফেললেও রেকর্ড গড়তে হবে টাইগারদের।
তাইজুলও তা জানেন। আর তাই রেকর্ড গড়ার স্বপ্ন, ‘আসলে টেস্ট ক্রিকেটটা রেকর্ডের খেলা। রেকর্ড কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটেই বেশি হয়। আমরাও তাই চাচ্ছি, আমাদের দল এমন কোন রেকর্ডই করুক।’
উইকেটের চরিত্র ও গতি- প্রকৃতি সম্পর্কে বলতে বলা হলে তাইজুলের ব্যাখ্যা, ‘উইকেট খুব কঠিন ছিল না। কিছুটা মন্থর ছিল। আপনি এটাকে ফ্ল্যাট উইকেট বলতে পারেন।’
যদি তাই হয়, তাহলে ফ্ল্যাট উইকেটে ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা কেমন? তাইজুলের আশাবাদী মন্তব্য, ‘আসলে উইকেট ফ্ল্যাট হলে ডিসিপ্লিন বোলিং করতে হয়। অফ স্ট্যাম্পের বাইরে বেশি জায়গা না দিয়ে বল করতে হয়। আমি ওইটাই করার চেষ্টা করেছি।’
দারুণ বোলিং করেছেন। জিম্বাবুইয়ান ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে সর্বাধিক আদায়ের পাশাপাশি ৬ উইকেট শিকারও করেছেন। তারপর খেলা শেষে সংবাদ সন্মেলনে বাঁ-হাতি স্পিনার তাউজুলকে মুখোমুখি হতেই হলো এমন প্রশ্নের- ‘আচ্ছা টানা ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণ কি?’
জবাবে তাইজুল বলেন, ‘সমস্যাটা কোথায় এটা আসলে বলতে গেলে বলব, আমাদের ব্যাটসম্যানরা যে এর আগে ভাল করে নাই এমন নয়। হয়তো হঠাৎ করেই এমনটা হচ্ছে। ক্রিকেটে এমন দিন আসে। আমরা চেষ্টা করব সামনে ভাল করার।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাজে পারফর্মেন্সের প্রভাব, নাকি আত্মবিশ্বাসের অভাব? তাইজুলের অনুভব, ‘না এমন কিছু না। আমাদের ব্যাটসম্যান-বোলারদের কথা যদি বলেন, এখানে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি নেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টেস্টের ব্যর্থতার আগেও আমরা বড় বড় দলকে হারিয়েছি। আর দুই একটা সিরিজ এমন হতেই পারে।’
তবে কি ওয়ানডে সিরিজ একচেটিয়া জেতার পর অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের কারণে এমন হলো? তাইজুলের ব্যাখ্যা, ‘না অতি আত্মবিশ্বাসের মত কিছু ছিল না। ক্রিকেটে এমন হয়, কিছুদিন আসে যে দিনটা আমাদের পক্ষে যাবে না। হয়তো আমাদের প্রথমে দুইটি উইকেট পড়ে যাওয়ার পর এমন হয়েছে।’
খেলা - এর সব খবর
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- আছিয়ার শেষ স্বীকারোক্তি: আছিয়া নিজে বলে গেছে ধ/র্ষণ করেছে কে (ভিডিওসহ)
- আ.লীগকে ৭৫% মানুষ সমর্থন করছে জাতিসংঘের জরিপ, জানা গেল সত্যতা
- আইপিএলে তাসকিনকে দলে নিবে কি না জানিয়ে দিলো লখনৌ
- শেয়ারবাজারে কারসাজি: বিএসইসি'র কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্তে সামনে এলো গুরুত্বপূর্ণ নাম
- বাড়লো সৌদি রিয়াল রেট বিনিময় হার (১৩ মার্চ ২০২৫)
- আছিয়ার ধ/র্ষক দুলাভাই কে নিয়ে তথ্য দিলেন তার শ্রেণী শিক্ষক মাহফুজ
- মাগুরার আছিয়ার বোনের বক্তব্য: শোনেন আসল সত্যিটা (ভিডিওসহ)
- শিশু আছিয়া ধ/র্ষণ ও হ/ত্যা মামলার প্রধান আসামী হিটু শেখের আদালতে স্বীকারোক্তি
- বাড়লো সৌদি রিয়াল রেট বিনিময় হার
- শেখ হাসিনার দেশে ফিরে আসা নিয়ে ট্রাম্পের পোস্ট জানা গেল সত্যতা
- দুই কোটি নয় মুস্তাফিজকে দলে নিতে কলকাতাকে গুনতে হবে ৬.৫ কোটি রুপি
- মুস্তাফিজ নাকি তাসকিন আইপিএল খেলার জন্য কাকে এনওসি দিবে বিসিবি
- দ্য হান্ড্রেডে বাংলাদেশের ২৯ ক্রিকেটার শেষ হলো নিলাম
- ৭৫ লাখ রুপিতে আইপিএলে দল পেলেন মুস্তাফিজের সতীর্থ
- বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত: শেয়ারবাজারে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ৬ সংকটাপন্ন ব্যাংক