ঢাকা, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১

আট বছর আজকের এই দিনে নিউজিল্যান্ডকে প্রথম হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০১৮ অক্টোবর ১৭ ১৩:৪৭:৫০
আট বছর আজকের এই দিনে নিউজিল্যান্ডকে প্রথম হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ

সাল ২০১০, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হোম সিরিজের শেষ ম্যাচ। সিরিজে আগের সবক’টি ম্যাচ জেতায় প্রথমবারের মতো কোনো 'পূর্ণশক্তির' টেস্ট খেলুড়ে দেশকে হোয়াইটওয়াশ করার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে তখন বাংলাদেশ। কিন্তু টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা মনঃপুত করতে পারেনি বাংলাদেশ।

আগের তিন ম্যাচে টাইগাররা সহজে জয় পেলেও শেষ ম্যাচে এসে ঘুরে দাঁড়ায় নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেন পুরো সিরিজ জুড়েই অলরাউন্ড নৈপুণ্য দেখানো অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ইমরুল কায়েসের ব্যাট থেকে আসে ৩৪ রান, মুশফিকুর রহিম করেন ২৯ রান। ইনিংসের ৫.৪ ওভার বাকি থাকতেই বাংলাদেশ অলআউট হয় মাত্র ১৭৪ রানে।

তখনো পর্যন্ত বাংলাদেশের ইতিহাসে এতো কম রানে জেতার রেকর্ড ছিলো না একটিও। তাই বল করতে নামার আগেই মনস্তাত্ত্বিক ভাবে খানিক পিছিয়ে যায় সাকিবের দল। তবে বোলিংয়ের শুরু থেকে আর মাঠে বোঝা যায়নি সে ছাপ। দ্বিতীয় ওভার থেকেই কিউই ব্যাটসম্যানদের উপর সওয়ার হন টাইগার বোলাররা।

দ্বিতীয় ওভারে ব্রেন্ডন ম্যাককালামকে সাকিবের হাতে ক্যাচ বানিয়ে শুরু করেন রুবেল হোসেন, যা কিনা থামে সপ্তম ওভারে রস টেলরকে আব্দুর রাজ্জাকের করা সরাসরি বোল্ড আউটের মাধ্যমে। এ ৭ ওভারের মধ্যেই নিজেদের প্রথম ৫ উইকেট হারিয়ে কঠিন বিপদে পড়ে যায় নিউজিল্যান্ড। জোরদার হয় বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনা।

তবে লক্ষ্য ছিলো অল্প, তাই ষষ্ঠ উইকেটে কোনো তাড়াহুড়ো করার প্রয়োজন বোধ করেননি কিউই অধিনায়ক ড্যানিয়েল ভেট্টরি ও পেস বোলিং অলরাউন্ডার গ্র্যান্ট এলিয়ট। প্রায় ২৪ ওভার উইকেটে থেকে দুজন মিলে গড়েন ৮৬ রানের জুটি। ধীরে ধীরে দলকে নিয়ে যান জয়ের কাছাকাছি। তখনই ত্রাতার ভূমিকায় আবির্ভাব ঘটে সাকিবের। ডিপ মিডউইকেটে দুর্দান্ত ক্যাচ ধরেন শফিউল। ১০৬ রানে ঘটে ষষ্ঠ উইকেটের পতন। শেষের ১৯ ওভারে ৪ উইকেট হাতে রেখে নিউজিল্যান্ডের জয়ের জন্য বাকি থাকে মাত্র ৬৯ রান।

বাংলাদেশের পথের কাঁটা হয়ে তখনো টিকে থাকেন এলিয়ট। ধীরে সুস্থে পূরণ করেন নিজের অর্ধশত, কাইল মিলসকে সাথে নিয়ে এগুতে থাকেন জয়ের পথে। তখনই হুট করে ভুল শট খেলে বসেন এলিয়ট। দলীয় ১৪৩ রানের মাথায় সাজঘরে ফিরে সহজ করেন বাংলাদেশের জয়ের লক্ষ্য।

তবে এতো সহজেই ছাড় দিতে নারাজ ছিলেন কিউই পেসার কাইল মিলস। দশম উইকেটে হ্যামিশ ব্যানেটকে সাথে নিয়ে লড়তে থাকেন দাঁতে দাঁত চেপে। ৪৫তম ওভারের শেষ বলে অ্যান্ডি ম্যাকাই ফিরে যাওয়ার সময় কিউইদের প্রয়োজন ছিল ত্রিশ বলে ৩০ রান। ৪ ওভার থেকে ২২ রান নিয়ে শেষ ওভারে বাকি রাখেন মাত্র ৮ রান।

বোলিংয়ে আসেন রুবেল। মাত্র দেড় বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন রুবেল প্রথম বলটা করে বসেন লেগস্টাম্পে। ফাইন লেগ দিয়ে চার মেরে লক্ষ্যমাত্রা ৫ বলে চারে নামিয়ে আনেন মিলস। প্রথম বলে বাউন্ডারি হজম করে সম্বিৎ ফেরে রুবেলের। ওভারের দ্বিতীয় বলটি করেন ইয়র্কার, কোনোমতে ঠেকিয়ে দেন মিলস।

ম্যাচের অবস্থা তখন বাংলাদেশের জয়ের জন্য চাই শেষ উইকেটটি, নিউজিল্যান্ডকে করতে হবে ৪ বলে ৪ রান। একবার ফিল্ড পজিশন ভালো করে দেখে নেন মিলস, রুবেলও হালকা ঠিক করে নেন নিজের ফিল্ডারদের। দৌঁড় শুরু করেন তৃতীয় বলটি করতে, ওদিকে প্রস্তুত মিলস।

হয়তো ভেবেছিলেন এ বলটিও লেগস্টাম্পে করবেন রুবেল, তাই আগেই উইকেট ছেড়ে লেগসাইডে সরে গিয়েছিলেন মিলস। কিন্তু রুবেল করেন নিখুঁত ইয়র্কার, ‘ডাইরেক্ট ভাইঙ্গে’ দেন মিলসের লেগ স্টাম্প। বাংলাদেশ পায় ৩ রানের অবিস্মরণীয় জয়। পায় প্রথমবারের মতো কোনো পূর্ণশক্তির টেস্ট খেলুড়ে দেশকে হোয়াইটওয়াশ করার স্বাদ।

খেলা - এর সব খবর

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ