ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১

ভাই, আর পারব না আমি: মাশরাফিকে মোস্তাফিজ

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০১৮ সেপ্টেম্বর ২৪ ১৯:৪৫:২০
ভাই, আর পারব না আমি: মাশরাফিকে মোস্তাফিজ

উইকেটে ছিলেন সামিউল্লাহ শেনওয়ারি ও রশিদ খানের মতো আক্রমণাত্মক দুই ব্যাটসম্যান, বাইরে অপেক্ষায় তখনও গুলবদিন নাইব। কিন্তু দুর্দান্ত শেষ ওভারে মুস্তাফিজ দেন কেবল ২ রান, লেগ বাই থেকে আসে আরও ২ রান। রোমাঞ্চকর ম্যাচ বাংলাদেশ জিতে নেয় ৩ রানে।

তবে একটা পর্যায়ে ওই শেষ ওভার পর্যন্ত যাওয়ার অবস্থায়ও ছিলেন না মোস্তাফিজ। শরীর টানছিল না, মন মানছিল না। ৫ ওভারের পর থেকেই পায়ে করছিল ক্র্যাম্প। মাশরাফি তবু তার কাছ থেকে আদায় করে নিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ ওভার!

মোস্তাফিজের তখন সবে শেষ হয়েছে ৫ ওভার। প্রচণ্ড গরমে কাহিল হয়ে পড়েছিলেন বাহাতি এই পেসার। ডিহাইড্রেশনে ক্র্যাম্প করতে শুরু করেছে পায়ের পেশি। ওভার শেষে এই বাঁহাতি পেসার গিয়ে অধিনায়ককে বললেন, ‘ভাই আর পারব না’। এ কথা শুনেই মাথায় হাত মাশরাফির; মুস্তাফিজকে ঘিরেই তো সাজিয়ে রেখেছেন স্লগ ওভারের পরিকল্পনা! ম্যাচ জিততেই হবে। অধিনায়ক হাল ছাড়লেন না। লেগে থেকে মোস্তাফিজকে নানাভাবে উজ্জীবিত করে আদায় করে নিলেন ম্যাচ জেতানো পারফরম্যান্স!

প্রথম স্পেলের ৩ ওভার করার পর মোস্তাফিজকে বিশ্রামে রাখেন অধিনায়ক। আবার বোলিংয়ে আনেন ৩৩ ওভারের পর। সেই স্পেলেই ২ ওভারের পর থেকে ক্র্যাম্প করতে থাকে পায়ে।

মাশরাফি তখন থেকেই তাকে বলতে থাকেন, যে করেই হোক বোলিং চালিয়ে যেতেই হবে। দ্বিতীয় স্পেলেও করেন ৩ ওভার। শেষ স্পেলের ৩ ওভার শুরু করেন ৪৫ ওভার শেষে। এর মাঝেই দেখা গেছে পায়ের স্ট্রেচিং করছেন মাঠে, সময় নিচ্ছেন, লড়ছেন নিজের সঙ্গে। সেসব সামলেই ওই বীরোচিত শেষ ওভার। ম্যাচ জয়ের এই অসাধারণ গল্প শোনালেন মাশরাফি নিজেই।

অধিনায়ক জানান, ওর ৫ ওভারের পর থেকেই বলছিল, ‘ভাই, আর পারব না আমি’। আমার তো মাথায় হাত! আজকে রুবেলও নেই। ম্যাচ তো জিততেই হবে, ওকে আমার লাগবেই। ওর ১০ ওভার তো হিসাব করা আমার। আমি বারবার ওকে বলেছি, পারতেই হবে। বলেছি নিজেকে পুশ করতে। চেষ্টা করেছি ছোট স্পেলে ওকে বোলিং করাতে।”

“ওর কাফ মাসলে টান লাগছিল। এফোর্ট দিতে পারছিল না, ইয়র্কার পারছিলই না শেষ দিকে। আমি বললাম যে, অন্তত রান আপে আস্তে আস্তে দৌড়ে গিয়ে হলেও কাটার দিয়ে কাজ চালিয়ে নিতে। চেষ্টা করেছি সাহস দিতে। তবে আমার কাজ তো ছিল স্রেফ বলা, আসল কাজ সে করেছে। এই অবস্থার মধ্যেও যেভাবে বোলিং করেছে, ওকে কৃতিত্ব দিতেই হবে।”

মাঠে দেখা গেছে, মাশরাফি নিজেও ডিহাইড্রেশনে ভুগেছেন। ধুঁকছিলেন বেশ। ক্র্যাম্প তারও হচ্ছিল। কিন্তু সেসবকে পাত্তা দেওয়ার মানুষ তো তিনি কখনোই নন!

মাশরাফি জানান, আমারও কষ্ট হচ্ছিল প্রচণ্ড। শরীর সাপোর্ট দিচ্ছিল না। কিন্তু আমি যদি নিজের এসব কথা বলি, অন্যরা আরও দমে যাবে। এজন্যই চেষ্টা করেছি ওদেরকে যত সাপোর্ট দেওয়া যায়। মাঠে শিশির ছিল, ঘাম তো দরদর করে ঝরছিল। হাতে বল গ্রিপ করাই অসম্ভব হয়ে পড়ছিল। অনেকবার আমরা মাটিতে হাত ঘষেছি। লাভ বেশি হয়নি। সাকিবের কাজটা কঠিন হয়ে পড়ছিল।

শিশির আর ঘামে ভিজে বল ব্যাটে যাচ্ছিল ভালোভাবে। আমার, মুস্তাফিজের অনেকগুলো কাটার গ্রিপ করেনি। অন্তত ৬টি কাটার গ্রিপ করেনি। শেষ দিকের ছক্কাটি খেলাম বল গ্রিপ করেনি বলেই। এরপরও শেষ পর্যন্ত ভালোয় শেষ করতে পেরেছি, এটাই আসল কথা।

খেলা - এর সব খবর

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ