পাকিস্তান ক্রিকেটকে বদলে দেবেন ইমরান খান!

ইমরান খানের তখনকার সতীর্থ জাভেদ মিয়াঁদাদ, মোস্তাক আহমেদ, ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনুস, রমিজ রাজা, ইনজামাম-উল হক, মুদাসসার নজর, আবদুল কাদির, মঈন খান, জাকির খান- সবাই দল বেধে হাজির হয়ে যান প্রধানমন্ত্রী হাউজে। সেখানে বৈঠক করার ফাঁকে সাবেক সতীর্থ এবং বন্ধুদের সঙ্গে হাসি-তামাশায় মেতে ওঠেন ইমরান খান। মুহূর্তের জন্য যেন ভুলে যান, তিনি এই মুহূর্তে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী।
সেই বৈঠকেই নতুন প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন, পাকিস্তানের ক্রিকেটকে আমূল বদলে দেয়ার। গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরিবর্তন আনা হবে, যাতে করে পাকিস্তান ক্রিকেট আবারও বিশ্বের বুকে সেরার আসন নিয়ে দাঁড়াতে পারে। যে সেরার স্থানে পাকিস্তানকে রেখে গিয়েছিলেন ইমরান খান, আবারও সেই একই স্থানে তিনি দেশের ক্রিকেটকে তুলে আনতে চান।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার পরই ইমরান খান পাকিস্তান ক্রিকেটে পরিবর্তন আনার ব্যাপারে ইচ্ছার কথা জানান। এরপরই তার সঙ্গে বৈঠক করেন সাবেক সতীর্থ এবং ক্রিকেট বন্ধুরা। সেখানে নতুন প্রধানমন্ত্রী যে ইঙ্গিত দিয়েছেন, তাতে বোঝা যাচ্ছে পিসিবির বর্তমান চেয়ারম্যান নাজম শেঠি সম্ভবত তার চেয়ারে আর থাকত পারছেন না। তার জায়গা নিতে পারেন সাবেক আইসিসি প্রেসিডেন্ট এহসান মানি।
পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনের সময় ছাড়াও অনেকবার অনেক অনুষ্ঠানে ইমরান খান বলেছিলেন, নাজম শেঠি কোনোভাবেই পিসিবি চেয়ারম্যান হওয়ার যোগ্য নন। এমনকি তিনি যদি ক্ষমতায় আসেন কখনও, তাহলে কোনোভাবেই শেঠিকে তার পদে রাখবেন না।
শুধু পাকিস্তান ক্রিকেটের প্রশাসনেই নয়, ক্রিকেটের সিস্টেমেও পরিবর্তন আনার চিন্তা করছেন ইমরান খান। ঘরোয়া ক্রিকেটের কাঠামোই আমূল বদলে দেয়ার ইচ্ছে তার। ওয়াসিম আকরাম, ইমজামাম, জাভেদ মিয়াঁদাদদের সঙ্গে ৩০ মিনিটের বৈঠক করেন ইমরান খান। যেখানে উপস্থিত ছিলেন ইমরানের বন্ধু, ভারতীয় ক্রিকেটার এবং তার শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়া অতিথি নভোজিৎ সিং সিধু।
বৈঠকের শুরুতেই সাবেক সতীর্থদের ইমরান খান বলেন, তিনি সবার কথা শুনতে চান এবং তাদের পরামর্শ অনুযায়ী পাকিস্তান ক্রিকেটের উন্নতির লক্ষ্যে কাজ করতে চান। শুধু তাই নয়, এই উন্নয়নের কাজ আগামী এক কিংবা দু’মাসের মধ্যেই শুরু করতে চান।
মূলতঃ শপথ অনুষ্ঠানেই উপস্থিত ছিলেন ওয়াসিম আকরাম, ইনজামাম-উল হক, রমিজ রাজা, ওয়াকার ইউনুসরা। শপথ বাক্য পাঠ করার পর উপস্থিত অতিথিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করার সময় সাবেক সতীর্থ এবং ক্রিকেট বন্ধুদের সঙ্গেও অত্যন্ত বিনয় এবং সম্মানের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। কারণ, এরাই তো ইমরান খানের ক্যারিয়ারকে এত উচ্চ পর্যায়ে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা পালন করেছিলেন।
এরপরই সাবেক ক্রিকেটারদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন তিনি। সেখানে সরাসরি পাকিস্তান ক্রিকেটকে কীভাবে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, সে প্রসঙ্গ তোলেন ইমরান। নিজের ইচ্ছা এবং উদ্দেশ্যের কথা জানিয়ে সতীর্থদের মতামত জানতে চান তিনি। সেখানেই ইমরান খান মতামত দেন, আঞ্চলিক (রিজিওনাল) ক্রিকেটকে আরও উন্নত করার পক্ষে। খেলোয়াড় থাকাকালীনও তিনি রিজিওনাল ক্রিকেটের পক্ষে ছিলেন।
এবারও তিনি মতামত দেন, আঞ্চলিক শহর কেন্দ্রিক ক্রিকেটকে আরও কত বেশি প্রতিযোগিতামূলক এবং জনপ্রিয় হিসেবে গড়ে তোলা যায়- তার পক্ষে। পাকিস্তানে ডিপটার্টমেন্টাল ক্রিকেট খুব জনপ্রিয়। কয়েকদিন আগেও বর্তমান অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ ইমরান খানের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেছিলেন, ডিপার্টমেন্টাল ক্রিকেটকে যেন বাতিল করে দেয়া না হয়।
কিন্তু ইমরান খান নিজেই ডিপার্টমেন্টাল ক্রিকেটকে পছন্দ করেন না। এ কারণে তার ইচ্ছে, রিজিওনাল ক্রিকেটকে ডিপার্টমেন্টাল ক্রিকেটের চেয়ে জনপ্রিয় হিসেবে গড়ে তুলতে। রিজিওনাল ক্রিকেটকে তিনি প্রমোশন এবং এলিমিনেটেড সিস্টেমে নিয়ে আসতে চান। যাতে প্রতিযোগিতা বাড়ে। পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী বিশ্বাস করেন, ডিপার্টমেন্টাল ক্রিকেট হচ্ছে পাকিস্তানের ক্রিকেটকে ধ্বংস করে দেয়ার একটি পথ। সূত্র জানাচ্ছে, সাবেক লেগ স্পিনার আবদুল কাদির ইমরান খানকে অনুরোধ করেন, যেন ডিপার্টমেন্টাল ক্রিকেটকে বাতিল করে দেয়া না হয়।
জবাবে ইমরান খান বলেন, ‘আমি হয়তো ডিপার্টমেন্টাল ক্রিকেটকে পছন্দ করি না। তাই বলে এটাও চাই না যে ক্রিকেটাররা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হোক। তারা চাকরি হারিয়ে ফেলুক।’ সূত্র আরও জানাচ্ছে, ইমরান খান চান পাকিস্তান ক্রিকেটে নতুন সিস্টেম চালু করার। যেখানে আটটি রিজিওনাল দল খেলবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে। যেখানে আরও ৮টি দল খেলবে গ্রেড-২ তে।
প্রতি বছর একটি করে রিজিওনাল দল উপরে উঠবে এবং একটি করে দল নেমে যাবে। তবে রিজিওনাল দলগুলোর সংখ্যা হয়তো বা ৬-এ নামিয়ে আনা হবে। নিজের ইচ্ছার কথা জানিয়ে ইমরান খান তার সাবেক সতীর্থদের কাছে অনুরোধ করেন, পুরো দেশের ক্রিকেটের বর্তমান চিত্রটা সংকলন করে যেন তাকে দেয়া হয় এবং তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হয়।
বৈঠকে উপস্থিত সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার নভোজিৎ সিং সিধু ইমরান খানের কাছে প্রশ্ন রাখেন, পিসিবির চেয়ারম্যান পদে তিনি কোনো পরিবর্তন চান কি না কিংবা পরবর্তীতে কাকে চান তিনি। ওই সময় ইমরান খান এহসান মানির দিকে তাকান এবং হাসি দেন। সূত্র জানাচ্ছে, আগামী দিনে হয়তো পিসিবির চেয়ারম্যান পদে এহসান মানিই আসীন হতে যাচ্ছেন। খালিদ মাহমুদের চেয়ে তিনিই বেশি এগিয়ে।
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- বিসিবির নতুন কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ ৫ জন
- প্যারোলে মুক্তি পেল আওয়ামী লীগ নেতা
- নির্বাচনী আসন ভাগাভাগি করলো এনসিপির প্রার্থীরা
- মেহেদী হাসান মিরাজের নতুন নাম দিল আইসিসি
- ওবায়দুল কাদেরের মৃত্যু, জানা গেল সত্যতা
- সুখবর: দীর্ঘ অপেক্ষার পর আরব আমিরাতের ভিসা চালু
- নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক হওয়ার দৌড়ে ৩ ক্রিকেটার
- শান্ত বাদ, তবে নতুন অধিনায়ক মিরাজ নয়
- আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কিনা সরাসরি জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
- শেখ হাসিনা ও মার্কিন গোয়েন্দা প্রধানের তুলসীর বৈঠক নিয়ে যা জানা গেল
- দুই আসন থেকে নির্বাচন করবেন নাহিদ ইসলাম
- শেয়ারহোল্ডারদের জন্য নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা
- আজকের সৌদি রিয়াল রেট বিনিময় হার
- আজ বাড়লো সৌদি রিয়াল রেট বিনিময় হার
- আজ বাড়লো সৌদি রিয়াল রেট বিনিময় হার