ঢাকা, বুধবার, ৫ মার্চ ২০২৫, ২১ ফাল্গুন ১৪৩১

পঞ্চপাণ্ডব বাদে উইন্ডিজ সিরিজে নজর কাড়লেন যে টাইগার

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০১৮ আগস্ট ০৬ ১৮:১৭:৫৩
পঞ্চপাণ্ডব বাদে উইন্ডিজ সিরিজে নজর কাড়লেন যে টাইগার

‘আশা হারিয়ে ফেলেননি তো’—ওয়ানডে সিরিজে না সুযোগ পাওয়া লিটনকে প্রশ্ন করতেই তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ‘যদি হারিয়ে ফেলি?’ প্রশ্নটা যে নিছক রসিকতার সুরে, সেটি তাঁর হাসিমুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছিল। সেই প্রশ্নের উত্তর তিনি আজ দিলেন, তবে সেটা মুখে নয় ব্যাট হাতেই। তার ৩২ বলে ৬১ রানের ঝড়ো ইনিংস দেখে বোঝাই যাচ্ছিল এই তরুণ অপেনার তার আশা হারান নি।

যেখানে পঞ্চপান্ডবে নির্ভার হয়েই ছিলো বাংলাদেশ, সেখানে আজ ৩২ বলে ৬২ রান করে লিটন বোঝালেন যে দলের তরুণ শক্তিও ধীরে ধীরে চাঙ্গা হয়ে উঠছে। এই সফরে এক মাত্র তিনিই তরুণ হিসেবে ম্যাচ সেরা হয়েছেন। যেটি তার আন্তর্জাতিক অঙ্গনের প্রথম ম্যাচসেরার খেতাবও বটে!

প্রথম ম্যাচে দুর্দান্ত কিছুর ইঙ্গিত দিয়ে হঠাৎই নিভে গিয়েছিলেন তিনি। আর দ্বিতীয় ম্যাচে সেটাও করতে পারেননি। তবুও লিটনে আস্থা রেখেছে টিম ম্যানেজমেন্ট। ফ্লোরিডায় ফাইনালে রূপ নেওয়া সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ ওপেনার সেই আস্থার প্রতিদান দিলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারাতে হলে গড়তে হবে বড় স্কোর। আর বড় স্কোর গড়তে চাই দুর্দান্ত শুরু। এ বার্তা মাথায় রেখে লিটন ইনিংস শুরু করলেন বাউন্ডারি মেরে।

লিটনের রুদ্ররূপ দেখা গেল অ্যাশলি নার্সের করা দ্বিতীয় ওভারে। টানা দুই ছক্কা আর চার খাওয়ার পর হতাশায় ক্যারিবীয় অফস্পিনার যে ‘শব্দ’টা উচ্চারণ করলেন, আইসিসি আজ তাঁকে জরিমানা করে কি না, সেটিই দেখার (একই কারণে আইসিসি কিন্তু বাংলাদেশের রুবেল ও আবু হায়দারকে জরিমানা করেছে)। উইন্ডিজ খেলোয়াড়দের আরও হতাশায় ডোবাতে লিটনের ব্যাট চলতে থাকল। বাংলাদেশ যে নিজেদের ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুত গতিতে ৫০ পেরোল, আর পাওয়ার প্লেটা অসাধারণভাবে কাজে লাগাল, তাতে বড় অবদান এ তরুণ ওপেনারেরই।

দলকে ভালো শুরু এনে দেননি, সীমিত ওভারের ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো পেয়েছেন ফিফটি। ৬ চার আর ৩ ছক্কায় ১৯০.৬২ স্ট্রাইকরেটে ৩২ বলে ৬১ রান করে থামার আগে দলকে দিয়ে গেছেন চ্যালেঞ্জিং স্কোরের ভিত্তি। এমন দুর্দান্ত ইনিংসের পর ম্যাচসেরার পুরস্কার তিনি যে পাবেন, সেটিই স্বাভাবিক। তবে লিটনের কাছে এটির তাৎপর্য অন্য রকম, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ম্যাচের নায়ক হওয়ার সুযোগ যে পেলেন এই প্রথম। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে লিটনের প্রতিক্রিয়া হলো বেশ পরিমিত। সে সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়ায় নিজের চেয়ে বেশি বললেন দলের অর্জন নিয়ে, ‘আমাদের দলের জন্য বড় জয় এটা। ওরা অনেক শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। তারা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। উইকেটটা আমাদের দেশের মতোই। এটা আমার প্রথম ফিফটি (সীমিত ওভারের ক্রিকেটে)। নিজেকে অনেক সৌভাগ্যবান মনে হচ্ছে।’

তরুণ খেলোয়াড়েরা ভালো করতে পারছেন না, কথাটা বেশি উচ্চারিত হয়েছে এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে। লিটনের এই ইনিংসটা আজ প্রমাণ করল, সিনিয়র এবং তরুণ খেলোয়াড়েরা যদি একসঙ্গে জ্বলে ওঠেন, বাংলাদেশ সাফল্য পাবেই, খেলাটা দেশে হোক কিংবা বিদেশে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে