‘তার হাসিটা মনে হলো ইয়াহিয়া খানের হাসি’

তিনি বলেন, ‘ইয়াহিয়া খান, টিক্কা খান যখন বাংলাদেশে অত্যাচার চালায়, যে হাসি দিয়েছিল, আজকে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের মুখে আমরা ওই হাসি দেখতে পাই।’
বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দির মুক্তি ও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন : জনগণের প্রত্যাশা’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে জিয়া নাগরিক ফোরাম (জিনাফ) নামের একটি সংগঠন।
আব্বাস বলেন, ‘শাজাহান খানরা পরিবহন সেক্টরকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। এই শ্রমিকদের কন্ট্রোলের বাইরে নিয়ে গেছেন। নব্বইয়ের দশকে আমি যখন সড়ক পরিবহন সমিতির সভাপতি ছিলাম তখন ড্রাইভার-হেল্পারদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিলাম। ওই সময় শাজাহান খান ও শিমুল বিশ্বাস ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেছেন শ্রমিকের চাঁদা বাড়ানোর জন্য। আমি বলেছিলাম, চাঁদা বাড়ানো যাবে না।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সেসব লোকের কাছে আজ পরিবহন ব্যবস্থা। শিশুদের জীবন বাঁচানোর আন্দোলনে সরকার আতঙ্কিত। আমরা যখন স্কুলে লেখাপড়া করেছি আইয়ুববিরোধী আন্দোলন হয়েছে। আমরা তো রাস্তায় বের হতে পারি নাই।’
স্কুল শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার তীব্র সমালোচনা করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যে বাচ্চাদের গায়ে হাত তোলা হয়েছে, যারা হাত তুলেছে তাদের বিচার করতে হবে। বিবেকহীন যে পুলিশ আমার ট্যাক্সের টাকায় বেতন পায় সে আমার সন্তানের গায়ে হাত তুলবে, কলার ধরবে, এটা অসহ্য। এটা সহ্য করা যায় না। তোমার কি বাচ্চা নাই, তোমার কি ভাতিজা নাই, নিজের ঘরের দিকে খেয়াল রাখো, যথাযথ শাস্তি হলে এই অবস্থা হতো না।’
তিনি বলেন, ‘বিদেশে পারিবারিকভাবে পরীক্ষা করা হয়, মদের দেশেও যারা মদ খায় তাদের গাড়ি চালাতে দেয়া হয় না। আমাদের দেশের ড্রাইভারদের অবস্থা কেউ জানে না।’
আব্বাস বলেন, ‘আজকে আমাদের শিশুদের অনিশ্চয়তা কেন? গত কয়েকদিনের পত্র-পত্রিকা দেখে মনে হলো আমাদের দেশের মায়েরা অনেক বেশি দূরদৃষ্টি সম্পন্ন। এ কারণে তারা আগেই বুঝে ফেলছে এই সরকারের আমালে বাচ্চারা নিরপাদ নয়। আমার সন্তান এই সরকারের হাতে নিরাপদ নয়। এ কারণে তারা স্কুলের সময় বসে থাকে। বাচ্চারা যখন বের হয় তাদের নিয়ে মায়েরা বাসায় যায়। এ সময় দেখা যায়, অনেক বাচ্চা মাসহ মারা গেছে। দুর্ঘটনায়।’
সরকারবিরোধী এই নেতা বলেন, ‘কোটা আন্দোলনের ছেলেদের সঙ্গে প্রতারণা করা হলো। একজনের হাত ভাঙা হচ্ছে, পা ভাঙা হচ্ছে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা আন্দোলনের নেতা আরিফের লাশ বুড়িগঙ্গা থেকে উদ্ধার হলো। একের পর এক শোক জাতির জন্য বয়ে আনছে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কাটি হাতুড়ি মার্কা হওয়া উচিত। হাতুড়ি দিয়ে পা ভেঙে টুকরো টুকরো করছে। মানুষ কিংবা কোনো রাজনৈতিক দল পৃথিবীর ইতিহাসে এমন করেছে কি না আমার জানা নাই। আজকে হিটলার বেঁচে থাকলেও লজ্জা পেতেন।’
আব্বাস বলেন, ‘দেশনেত্রীর খালেদা জিয়ার পক্ষে আজ দেশের ৯০ভাগ মানুষ। আওয়ামী লীগের অত্যাচারে আওয়ামী লীগের নিম্নস্তরের নেতাকর্মীরাও অতিষ্ঠ। তারাও আওয়ামী লীগের পরিবর্তন চায়, এই সরকারের পরিবর্তন চায়। এই সরকারকে আর কেউ পছন্দ করে না।’
আওয়ামী লীগ বিশ্বব্যাপী সমর্থন হারিয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের এখন একমাত্র ভরসা প্রতিবেশী একটি দেশ। ওরা বাংলাদেশের জনগণের ওপর বিশ্বাসও করে না ভরসাও করে না। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের রেজাল্ট খুব একটা খারাপ হয়নি। এই রেজাল্ট সারা বিশ্ব দেখলো। এই রেজলান্ট বিএনপি এবং বিরোধী দলকে উৎসাহিত করলো, যাতে আমরা আর কোনো নির্বাচনে না যাই এই সরকারের অধীনে।’
আব্বাস বলেন, ‘আওয়ামী লীগের পাশে জনগণ থাকলে পোলিং এজেন্টরা সিল মেরে বাক্সে ভরতো না। তারা নিজেরা সিল মেরেছে, কারণ জনগণ তো নাই। এ জন্য তারা ফ্রি ফেয়ার ইলেকশন নাম শুনলে ভয় পায়।’
তিনি বলেন, ‘অনেকেই বিভিন্নভাবে বলছে নির্বাচনে যেতে হবে। যেমনটা আমার দলের মধ্যে আছে তেমনটা বাইরেও আছে। পরিষ্কার করে বলতে চাই, আমরা যা বলেছি, ওখান থেকে একচুলও নড়চড় হবে না। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড চাই। এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।’
আব্বাস বলেন, ‘আমাদের ওবায়দুল কাদের সাহেব কোথায় কোথায় যেন দৌড়াদৌড়ি করছেন। শুনলাম কাদের সিদ্দিকী সাহেবের বাসায় গেছেন। কী কারণে, আমি জানি না। কেন আমাদের বাসায় যান না? একসঙ্গে জেলে ছিলাম, অনেকদিন আপনি আমি পাশাপাশি ছিলাম। আমাদের বাসায় যান না আপনারা। আপনারা যান কাদের সিদ্দিকীর বাসায়, কারণটা কী ? কাদের সিদ্দিকী আলাদা মোর্চা করছেন। ডরাইছেন, ভয় পাইছেন। কাদের সিদ্দিকী, কামাল হোসেন, মান্না সাহেবরা মোর্চা করছেন, এটাকে ভয় পেয়ে গেছেন।’
খালেদা জিয়ার মনোবল এখনও অনেক শক্তিশালী রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার ইচ্ছেকৃতভাবে তাকে বদ্ধ পরিবেশে রেখেছে। খাওয়া দাওয়ার ক্ষেত্রে অনিয়ম করছে, যাতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ারের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক কে এম জামানের সঞ্চালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহ-সভাপতি ই্উনুস মৃধা প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
রাজনীতি - এর সব খবর
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- বিসিবির নতুন কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ ৫ জন
- প্যারোলে মুক্তি পেল আওয়ামী লীগ নেতা
- নির্বাচনী আসন ভাগাভাগি করলো এনসিপির প্রার্থীরা
- মেহেদী হাসান মিরাজের নতুন নাম দিল আইসিসি
- সুখবর: দীর্ঘ অপেক্ষার পর আরব আমিরাতের ভিসা চালু
- নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক হওয়ার দৌড়ে ৩ ক্রিকেটার
- বিনিয়োগকারীদের মাঝে আতঙ্ক, জরুরি পদক্ষেপ নিলেন ডিএসই চেয়ারম্যান
- শেয়ারহোল্ডারদের জন্য নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা
- শান্ত বাদ, তবে নতুন অধিনায়ক মিরাজ নয়
- শেখ হাসিনা ও মার্কিন গোয়েন্দা প্রধানের তুলসীর বৈঠক নিয়ে যা জানা গেল
- আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কিনা সরাসরি জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
- দুই আসন থেকে নির্বাচন করবেন নাহিদ ইসলাম
- স্বাস্থ্য খাতে বড় সংস্কার: ২৬ মেডিকেল কলেজ বন্ধের সিদ্ধান্ত
- আজকের সৌদি রিয়াল রেট বিনিময় হার
- আজ বাড়লো সৌদি রিয়াল রেট বিনিময় হার