পাকিস্তানের প্রথম প্লেবয় ইমেজের প্রধানমন্ত্রী

অক্সফোর্ড থেকে পড়াশুনা করা ইমরান খানের ক্যারিয়ার জীবন বেশ সমৃদ্ধ। দুই দশকের বেশি সময় ক্রিকেট দুনিয়ায় সময় কাটিয়েছেন তিনি। তবে তার ব্যক্তি জীবন বিশেষ করে তার বিবাহিত জীবন নিয়ে বেশ জলঘোলা হয়েছে। তিনবার বিয়ে করেছেন এই সাবেক ক্রিকেটার। তবে একটি সংসারও টেকেনি। লন্ডনে প্লেবয় হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন ইমরান। তবে তার দাবি একজন রক্ষণশীল পাকিস্তানি মুসলিম হিসেবে তিনি কখনও কোনো অন্যায় কাজ করেননি এমনকি তিনি কখনও অ্যালকোহলও পান করেননি।

১৯৯৫ সালে ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত জেমিমা গোল্ডস্মিথকে প্রথম বিয়ে করেছিলেন সাবেক এই ক্রিকেট তারকা। সে সময় ইমরানের বয়স ছিল ৪৩ এবং জেমিমার বয়স ছিল ২১ বছর। ২০০৪ সালে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।

২০১৫ সালে দ্বিতীয়বার বিয়ের পিঁড়িতে বসেন ইমরান। সে সময় তিনি বিয়ে করেন টেলিভিশন উপস্থাপক রেহাম খানকে। ১০ মাসের মাথায় সেই সংসারও ভেঙে যায়।

২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বুশরা মানেকা নামে একজন আধ্যাত্মিক নেত্রীকে বিয়ে করেন ইমরান খান। দু'মাসের ব্যবধানে সেই সম্পর্কেও ইতি ঘটান তিনি।

দেশের সাধারণ নির্বাচনের ভোটে এখন পর্যন্ত এগিয়ে আছেন সাবেক ক্রিকেট তারকা এবং পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান ইমরান খান। তার বিরোধীরা ভোটে কারচুপির অভিযোগ এনেছেন। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

প্রাথমিক বেসরকারি ফলাফল বলছে, সাধারণ নির্বাচনের ভোটে এখন পর্যন্ত এগিয়ে আছে পিটিআই। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট না পেলে পিটিআইকে জোট গঠন করতে হবে। ইমরানের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ছেলে বিলওয়াল ভুট্টো নির্বাচনে অব্যবস্থাপনার সঙ্গে বড় ধরণের ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলেছেন।

ভোটের ফলাফল খুব ধীরে ধীরে প্রকাশ করা হচ্ছে বলেই তারা এমন অভিযোগ তোলেন। তবে নির্বাচনী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রযুক্তিগত সমস্যা সেই সঙ্গে এতো ভোট হাতে গণনার কারণে দেরি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন।

সহিংসতা, বোমা হামলা, নানা অভিযোগের ঘটনাবহুল পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়। বুধবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে দেশটিতে ভোটগ্রহণ চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। ভোট চলাকালীন একটি নির্বাচন কেন্দ্রে হামলার ঘটনায় কমপক্ষে ৩১ জন নিহত হয়েছে।

পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ইমরান খানকে জেতানোর চেষ্টা করছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, সেটাও অস্বীকার করেছে দলের নেতৃবৃন্দ।

পাকিস্তানের এই নির্বাচনকে ঘিরে অনেক রক্তপাত দেখতে হয়েছে দেশটির সাধারণ মানুষকে। নির্বাচনে এখন পর্যন্ত ৪২ শতাংশ কেন্দ্র থেকে ফল প্রকাশ হয়েছে। দেশটির নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, মোট ২৭২টি আসনের মধ্যে ১১৩টি আসনের আংশিক ফলাফলে স্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে আছেন ইমরানের পিটিআই।

ডনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পিটিআইর পরেই রয়েছে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)। তারা এগিয়ে আছে ৬৫ আসনে।

পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) এগিয়ে আছে ৪৩টি আসনে। মুত্তাহিদা মজলিস আমল (এমএমএ) এগিয়ে রয়েছে ৯টি আসনে ও গ্র্যান্ড ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (জিডিএ) এগিয়ে আছে সাতটি আসনে।

পাকিস্তানের ইতিহাসে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বেসামরিক দলের মধ্যে গণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তর হতে যাচ্ছে। এর কারণে এবারের নির্বাচনকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে বিশ্ব গণমাধ্যম।

তবে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দল- পিএমএলএনসহ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ছোট দলগুলো ভোটে কারচুপির অভিযোগ তুলে ফলাফল প্রত্যাখ্যানের দিকে ঝুঁকছে।

ব্যক্তিজীবনে নানা টানাপোড়নের মধ্যেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন ইমরান। এর ফলে নতুন ইনিংস শুরু করতে যাচ্ছেন এই সাবেক সফল ক্রিকেটার। এখন শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণার অপেক্ষা।