ঢাকা, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

জিপিএ-৫ পেলেও কাকলীকে মিষ্টিমুখ করাতে পারলেন না বাবা!

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০১৮ জুলাই ২০ ২২:১৮:২৭
জিপিএ-৫ পেলেও কাকলীকে মিষ্টিমুখ করাতে পারলেন না বাবা!

মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় একমাত্র জিপিএ-৫ পেয়েছে কাকলি আক্তার নামে এক শিক্ষার্থী। উপজেলার ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী কলেজ থেকে এই বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।

দিনমজুর পরিবারের মেয়েটির এমন সাফল্যেও পরিবারের হাসি ফুটেনি বরং চিন্তার রেশ দেখা দিয়েছে পরিবারে। ফলাফলের পর যখন সর্বত্র মিষ্টির ছড়াছড়ি ছিল তখন নিজের মেয়েকে কিনে মিষ্টি মুখ করাতে পারেনি এই পরিবারটি। তবে মসজিদের মিলাদে পাওয়া এক টুকরো জিলাপি হাতে করে নিয়ে এসেছিলেন মেয়ের জন্য, এই টুকরো জিলাপি দিয়েই মিষ্টি মুখ করিয়েছেন মেয়েকে।

মেয়ের এত ভালো ফলাফল হলেও মেয়ের উচ্চশিক্ষা নিয়ে চিন্তিত পরিবারটি। কলেজের সহযোগিতায় বিনা খরচে লেখাপড়া করে জিপিএ-৫ অর্জন করলেও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং করতে টাকার প্রয়োজন তাই আর কোচিংয়ে ভর্তি হওয়া হয়নি কাকলির।

পদ্মার ভাঙ্গনে আক্রান্ত পরিবারটি বাস করে উপজেলার পাচ্চর এলাকার একটি খুপড়ি ঘরে। ৫ ভাই বোনের সংসারে বাবা হারুন মাদবর দিনমজুর মা তাসলিমা বেগম গৃহিণী। অন্যের জমিতে বাবা হারুনের কামলা (দিনমজুরি) দিয়েই চলে সংসার।

এর আগেও মেধাবী কাকলী এসএসসিতে পাচ্চর বালিকা বিদ্যালয় থেকে সংগ্রাম করে জিপিএ-৫ অর্জন করে। কলেজের শিক্ষকদের সহযোগীতায় অনেকটা বিনামূল্যেই লেখাপড়া করলেও এখন তারা চিন্তিত ভবিষ্যৎ নিয়ে।

কাকলির মা সাংবাদিকদের বলেন, ‘কামলা দিয়ে ৭ জনের সংসার চালানোই কঠিন। রেজাল্টের পর মিষ্টিও খাওয়াতে পারি নাই মেয়েকে। ভাত জুটানোই কষ্ট। আমাগো সামর্থ্য নাই ওরে পড়ানোর। ও নিজে কষ্ট কইরা এই পর্যন্ত আইছে।’

কাকলির বাবা হারুন মাদবর বলেন, ‘একদিন কাজ না করলে সংসারই চলে না। ও পড়ছে নিজেরডা দিয়াই। এহন ভাল জায়গায় পড়তে চায়। আমরা কেমনে কি করমু।’

এ ব্যপারে কথা হলে কান্নাজরিত কন্ঠে কাকলি জানান, ‘‘কলেজ ও স্কুলের স্যারদের সহযোগিতায় অনেক কষ্ট করেই পড়ছি। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার খুব ইচ্ছা। কিন্তু আমার বাবা -মাতো পারে না আমার পড়ার খরচ বহন করতে। তাই জানি না কি আছে আমার ভাগ্যে। তবে আমি পড়তে চাই।’অনেকদূর এগোতে চাই। অামার পরিবারের অভাব অনাটন দূর করতে চাই বড় হয়ে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে