ঢাকা, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

‘অপরাধী’র ভিউ ১০ কোটি হলেও আমার আয় ৫০ হাজার : আরমান আলিফ

বিনোদন ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০১৮ জুলাই ১০ ২৩:১৫:৩৬
‘অপরাধী’র ভিউ ১০ কোটি হলেও আমার আয় ৫০ হাজার : আরমান আলিফ

এমন জনপ্রিয়তা পাওয়া গানটি নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে শ্রোতাদের মাথায়। ভাবনার বিষয় হলো, গানটি অনেক বেশি জনপ্রিয়তা পেলেও তেমন পরিচিতি পাননি গানটির শিল্পী আরমান আলী। তাকে নিয়ে আলোচনাও কম। তার গান কাভার করে অন্যরা এসেছে আলোচনায়।

আলোচনা হচ্ছে, ইউটিউব থেকে গানটি প্রায় অর্ধ কোটি টাকার ব্যবসা হতে পারে। কিন্তু গানটির শিল্পী কতো পেলেন? কতো ছিল তার পারিশ্রমিক? আরমান আলিফ, ‘অপরাধী’ গানের শিল্পী, গীতিকার ও সুরকার জাগো নিউজের সঙ্গে আজ মঙ্গলবার দুপুরে কথা বলেন এসব নিয়ে। তুলে ধরা হলো আলাপের চুম্বুক অংশ। লিখেছেন মাসুম আওয়াল

জাগো নিউজ : আপনার কথা ও সুরে আপনারই গাওয়া ‘অপরাধী’ গানটি ভিউয়ের দিক থেকে এখন মাইলফলক। কেমন লাগছে?আরমান আলিফ : ভালো লাগাটা আসলে ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। এটা এমন রেকর্ড, ভালো লাগারই কথা। শ্রোতারা আমার গান এরই মধ্যে ১০ কোটিবারের বেশি শুনেছেন, দেখেছেন। এটা একেবারেই ধারণার বাইরে। কীভাবে যেন হয়ে গেল! তবে এটা আমার পরের কাজের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে, দায়িত্বও বেড়েছে। একই সঙ্গে মানসিক চাপও অনুভব করছি।

জাগো নিউজ : মানসিক চাপ কেন?আরমান আলিফ : ওই যে, পরের গানগুলোতে এই সাফল্য ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ। দর্শক-শ্রোতা চাইবেই আমার পরের গানটিও যেন ‘অপরাধী’র মতো সুন্দর হয়।

জাগো নিউজ : ভাইরালের এই যুগে কিছু একটা করেই আজকাল হিট হয়ে যাচ্ছেন যে কেউ। পেয়ে যাচ্ছেন তারকা খ্যাতি। সেখানে দেশের প্রথম ১০ কোটি দর্শক পাওয়া গানের শিল্পী হিসেবে আপনাকে নিয়ে মাতামাতি কম। কোনো কষ্টবোধ কাজ করছে না?আরমান আলিফ : আসলে গানটিতো একটি কোম্পানি থেকে প্রকাশ হয়েছে। তারা যেটা ভালো মনে করেছে সেটা করেছে। আর মিডিয়াও আমার কাছে নতুন। খুব বেশি কাউকে চিনি না। আমি এ কয়দিনে যত জায়গা থেকে ডাক পেয়েছি, যাওয়ার চেষ্টা করেছি। অনেকে শুধু অডিও গান শুনেছেন এমনটাও হয়েছে।

জাগো নিউজ : গানটির প্রচারে আপনাকে খুব একটা দেখা যায় না। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কী আপনার কোনো দূরত্ব তৈরি হয়েছে?আরমান আলিফ : না। আমাকে নিয়ে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের প্রচারণা কম ছিল। কারণ, গানটি এভাবে সফল হবে হয়তো কেউ ভাবেননি। আমি এসব নিয়ে ভাবছি না। কারণ, আমার গাওয়া গান। সেটা কেউ বললেও আমার, না বললেও শ্রোতা-দর্শক আমারই জানবেন। এই নানা প্রশ্ন উঠে আসছে, সেগুলোই তার প্রমাণ।

জাগো নিউজ : আপনার গান গেয়ে আরও অনেকেই জনপ্রিয় হচ্ছেন। কেউ কেউ আপনার চেয়েও বেশি আলোচনায় চলে এসেছেন। বিষয়টি কেমন লাগছে?আরমান আলিফ : গানটি ভালোবেসে নিজে থেকেই অনেকে গেয়েছেন। এই গানটি শুধু আমাকেই না আরও অনেককে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। এটাও আমার বড় একটা পাওয়া। এখানে কোনো প্রতিযোগিতা নেই। কে আমাকে আলোচনায় ছাড়িয়ে গেল তাতে আমার কিছুই যায় আসে না। আমি আগামীতে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করে গান করে যেতে চাই।

জাগো নিউজ : শোনা যাচ্ছে, গানটি দিয়ে এর প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ঈগল মিউজিক ইউটিউব থেকে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা আয় করেছে। আর্থিকভাবে আপনি কতটা লাভবান হয়েছেন?আরমান আলিফ : যদিও এটা পার্সোনাল ইস্যু, তবুও বলছি, আয় অনুযায়ী তেমন কোনো লাভ আসলে আর্থিকভাবে আমার হয়নি। শুনছি গানটি দশ কোটি ভিউ হওয়ায় অর্ধ কোটি টাকার কাছাকাছি আয় হবে প্রতিষ্ঠানের। কিন্তু আমি দুই কিস্তিতি ৫০ হাজার টাকা পেয়েছি। গানটি ঈগল মিউজিকে জমা দেয়ার সময় কোনো টাকার কথা উল্লেখ ছিল না। একজন নতুন হিসেবে আমি তাদের কাছে গিয়েছিলাম। তারা গানটি প্রকাশ করবেন বলে রাজি হয়েছিলেন। গানের চুক্তির সময় আমাকে বলা হয়েছিল আমার যখন টাকার প্রয়োজন হবে তখন চাইলে সেটা আমাকে দেওয়ার চেষ্টা করবেন তারা। তাদের আশ্বাসে একরকম ভালোবেসেই গানটি দিয়েছি এখানে। পরে দুই কিস্তিতে ৫০ হাজার টাকা আমি পেয়েছি। আর কোনো টাকা পাইনি।

জাগো নিউজ : কেন? আপনি কি এককালীন চুক্তিতে গান বিক্রি করে দিয়েছেন?আরমান আলিফ : না, এককালীন নাকি রয়্যালিটি এ বিষয়ে কোনো কথা হয়নি আগে। তবে এখন তাদের কথায় বোঝা যাচ্ছে গানটি নাকি আমি বিক্রি করে দিয়েছি। যদিও এর কোনো মানে আমি খুঁজে পাই না। আসলে এতকিছু তো বুঝিনি আগে। আমি তিনটা কাগজে স্বাক্ষর করেছিলাম। ওখানে কোনো টাকার অ্যামাউন্ট লেখা ছিল না। আমি একজন নতুন শিল্পীর মতোই অতো কিছু না ভেবে বিশ্বাস করে স্বাক্ষর করে দিয়েছিলাম। হয়তো এটাই আমার ভুল ছিল। এসব নিয়ে আমার মনে কোনো কষ্ট নাই। কথাও বাড়াতে চাই না। শিল্পী হিসেবে নিজের সম্মানের প্রতি বেশি আস্থাশীল আমি। মানুষ গানটিকে ভালোবাসলো, আমাকে ভালোবাসলো এটাই আমার জন্য অনেক কিছু। টাকা-পয়সা তো জীবনে বহু আসবে যাবে।

জাগো নিউজ : নতুন কী গান আসছে?আরমান আলিফ : কোরবানি ঈদে আসছেে আমার নতুন গান। গানের নাম ‘নেশা’। আমার একটি ব্যান্ড আছে। ব্যান্ডের নাম ‘চন্দ্রবিন্দু বিডি’। এই ব্যান্ডের ইউটিউব চ্যানেল থেকেই প্রকাশ করা হবে গানটি। এখান থেকে আমার প্রথম প্রকাশিত গান ‘নিকোটিন’ (২০১৭)। এরপর প্রকাশিত হয় ‘নেশা’ (২০১৭) গানটি। এই ‘নেশা’ গানটি নতুন করে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করব।

জাগো নিউজ : গান নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ ভাবনা কী?আরমান আলিফ : আমাদের ব্যান্ডের চ্যানেলে নিয়মিত গান প্রকাশ করবো। আর অন্য কোম্পানির জন্যও গান করবো। অনেকেই যোগাযোগ করছেন।

জাগো নিউজ : কথা শেষ করার আগে আপনার ব্যক্তি জীবন সম্পর্কে জানতে চাই....আরমান আলিফ : নেত্রকোনায় আমার জন্ম। ছোটবেলা কেটেছে সেখানেই। স্কুল-কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে এখন পড়ছি ঢাকা কমার্স কলেজে। মন দিয়ে পড়ালেখা করছি, পাশাপাশি চলবে গানও। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।

সুত্র- জাগো নিউজ

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে