ঢাকা, শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৬ ফাল্গুন ১৪৩১

‘খেলতেই শিখেনি বাংলাদেশ’

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০১৮ জুলাই ০৭ ২৩:১৬:২০
‘খেলতেই শিখেনি বাংলাদেশ’

কারণ, ক্যারিবীয়ানরা এমন উইকেটে করেছিল এক সেঞ্চুরিতে ৪০৬ রান। কিন্তু প্রথম ইনিংসের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে পারেননি টাইগার ব্যাটসম্যানরা। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৪ রানে গুটিয়ে যায় টাইগাররা। এতে বাংলাদেশ দেখে ইনিংস ও ২১৯ রানের হার। এমন ব্যাটিং বিপর্যয়ের কারণ কী! ক্রিকেট বোদ্ধারা অবশ্য কারণটাকে একদিনের বা একটি ম্যাচের হিসেবে দেখছে না। তিলে তিলে দলের এমন অবস্থা বলেই দাবি তাদের। বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক কোচ সারওয়ার ইমরানও মনে করেন এমনটাই হয়েছে। সেই সঙ্গে ‘এন্টিগা বিপর্যয়ের’ আরেকটি কারণ উইকেটকেও বলে দাবি করেছেন তিনি। অবশ্য উইকেট খারাপ তা নয়; তার মতে, এমন উইকেটে কীভাবে খেলতে হয় সেটিই শিখেননি বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যানরা।

তিনি বলেন, ‘আমি প্রথম কারণ হিসেবে দেখছি উইকেট। আমি কিন্তু উইকেটকে খারাপ বলতে চাইছি না। এমন উইকেট যেখানে সবুজ ঘাস আছে, সেখানে খেলে অভ্যস্ত নয় বাংলাদেশ দল। এই উইকেটে ধরে খেলতে হয়। কিন্তু লিটন দাসের একটি শট আমি দেখেছি। ৪ উইকেট পড়ার পর বাইরের বল তিনি খেলছেন। অতিরিক্ত শট খেলার প্রবণতাই কাল হয়েছে। ভেবেছিলাম দ্বিতীয় ইনিংসে ঘুড়ে দাঁড়াবে। কিন্তু যে অভ্যাসই এখনো গড়ে ওঠেনি সেটি কীভাবে সম্ভব!’

১৮ বছর ধরে টেস্ট খেলছে বাংলাদেশ দল।

ক্যারিবীয়ানদের বিপক্ষে মাঠে আছেন টাইগারদের ৪ অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। যাদের ক্যারিয়ারও ১০ বছরের কম নয়। বিশেষ করে তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহীম, সাকিব আল হাসান, মাহমুদুল্লা রিয়াদরাও দারুণভাবে ব্যর্থ। সিনিয়রদের এমন ব্যর্থতা নিয়ে সারওয়ার ইমরান বলেন,

‘আসলে তামিম, সাকিব, মুশফিক যার কথাই বলেন এমন উইকেটে এরাও তেমন খেলেনি। তবে তাদের অভিজ্ঞতা দিয়ে এই উইকেটে দাঁড়িয়ে থেকে দলের বিপর্যয় সামলাতে পারতো। কিন্তু টেস্ট খেলার মানসিকতাও যে আমাদের কম। আমরা অনেক বেশি মনোযোগী টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে ক্রিকেট নিয়ে। তাই শট খেলা প্রবণতা দলের সবার মধ্যেই বেশি। যে কারণে কেউ পারেনি এমন পরিস্থিতি থেকে দলকে বের করতে।’

অন্য দিকে আফগানিস্তান সিরিজের পর থেকেই দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে নিয়ে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। টেস্ট খেলাতে যেন তার মনই নেই। ছয় মাস ছুটি চেয়ে সেই প্রমাণও তিনি রেখেছিলেন। এমনকি টি-টোয়েন্টি আফগানদের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা নিয়ে দেশে ফিরেও চলে যান লম্বা ছুটিতে। টেস্ট দল ঘোষণার পরও তিনি ফিরেননি যুক্তরাষ্ট্রে শ্বশুরবাড়ি থেকে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ দল যুক্তরাষ্ট্র হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ গেলেও তিনি দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন ২৭শে জুন প্রস্তুতি ম্যাচের একদিন আগে। বলতে গেলে নয়া কোনো ও দলের সঙ্গে অধিনায়কের পরিকল্পনার যে বিষয়টি থাকে, সেখানেও তিনি যথেষ্ট সময় দিতে পারেননি। নিজেও টেস্ট খেলতে নেমেছেন ১১ মাস পর। তার ব্যাটিং-বোলিং ব্যর্থতায় সেই চিত্র স্পষ্ট।

সাকিবের এমন আচরণ নিয়ে সারওয়ার ইমরান বলেন, ‘দেখেন আমাদের সবচেয়ে ভয়ের বিষয় হলো সাকিব, তামিমরা, মুশফিকরা না থাকলে দলের কী হবে? বিকল্প কই। আর এখন প্রথম টেস্টে যা হয়েছে, সেটি ভুলে দ্বিতীয় টেস্টে মন দিতে হবে। সবার আগে টিম ম্যানেজমেন্টকে শৃঙ্খলা ফিরাতে হবে। কেন সাকিব এত পরে দলের সঙ্গে যাবেন- সেটিও জবাবদিহির মধ্যে আনতে হবে। তবে আমরা যতই বলি এসবে কাজ হবে না। এসব অনিয়ম বিসিবিকেই কঠোর হয়ে থামাতে হবে।’

ব্যাটিংয়ের বাজে চিত্র বাংলাদেশ দলের জন্য নতুন কিছু নয়। তাই এ অবস্থা থেকে বের হতে কী প্রয়োজন- তা নিয়ে দেশের সবচেয়ে অভিজ্ঞ কোচ বলেন, ‘শুধু আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেললেই কি উন্নতি হবে? আমাদের পাইপলাইনে নজর দিতে হবে। আমাদের প্রথম থেকে শুরু করে তৃতীয় বিভাগ- কোনো কিছুই এখন আর সঠিকভাবে চলছে না। যে কারণে পাইপলাইনে ক্রিকেটারই নেই। এমন চলতে থাকলে আমাদের আরো বাজে দিন আসবে- তা বলার অপেক্ষা রাখে না।’

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে