ঢাকা, শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৬ ফাল্গুন ১৪৩১

২০১০-এ ওজিল, ২০১৪তে রদ্রিগেজ, ২০১৮-এ হ্যাজার্ড?   

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০১৮ জুলাই ০৭ ১৮:৫৯:৩১
২০১০-এ ওজিল, ২০১৪তে রদ্রিগেজ, ২০১৮-এ হ্যাজার্ড?   

২০১০ বিশ্বকাপের আগে দেশ জার্মানি বাদে মেসুত ওজিলকে বাইরের দুনিয়া সেভাবে চিনতই না। জার্মানির কোচ জোয়াকিম লো’র ‘তরুণ আবিষ্কার’ হিসেবে ২০১০ দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে যাওয়ার সুযোগ হয় তার। প্রথম বার বিশ্বমঞ্চে খেলার সুযোগ পেয়েই বিশ্ববাসীকে নিজের আগমণী বার্তা শোনান ওজিল। দক্ষিণ আফ্রিকায় তরুণ ওজিলের দৃষ্টিনন্দন পারফরম্যান্স রিয়ালকে এতোটাই মোহিত করে যে, টুর্নামেন্ট শেষেই ভের্ডার ব্রেমেন থেকে তাকে নিজেদের তাবুতে নিয়ে আসে রিয়াল।

হামেশ রদ্রিগেজের ঘটনাও একই রকম। ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপের আগে কলম্বিয়ান ফরোয়ার্ডকেও দুনিয়া সেভাবে চিনত না। কলম্বিয়ানদের মধ্যে তারকাখ্যাতি তখন শুধু একজনের গায়েই, রাদামেল ফ্যালকাও। কিন্তু চোটের কারণে সেই ফ্যালকাও ব্রাজিল বিশ্বকাপে খেলতেই পারেননি। আর ফ্যালকাওয়ের সেই অনুপস্থিতির সুযোগটা তরুণ রদ্রিগেজ কাজে লাগান দারুণভাবে। নিজের অবিশ্বাস্য গোল-স্কোরিং দক্ষতা দেখিয়ে চমকে দেন ফুটবল বিশ্বকে। ফ্যালকাওবিহীন কলম্বিয়াকে কোয়ার্টার ফাইনালে তুলতে তিনিই রাখেন মুখ্য ভূমিকা।

ব্যস, ব্রাজিলে প্রতিভার ঝলকানি দেখানোর পুরস্কার হিসেবে কলম্বিয়ান তরুণ পড়ে যান রিয়ালের নজরে। টুর্নামেন্ট শেষে ফরাসি ক্লাব মোনাকো থেকে তাকে কিনেও ফেলে রিয়াল। সেই ধারাবাহিকতায় রিয়ালের নজর এবার এডেন হ্যাজার্ডের উপর।

একটা দিক থেকে অবশ্য হ্যাজার্ডকে ওজিল ও রদ্রিগেজের ফ্রেমে বাঁধা যাচ্ছে না। ২০১০ বিশ্বকাপের আগে ওজিল এবং ২০১৪ বিশ্বকাপের আগে রদ্রিগেজ যেমন ফুটবল দুনিয়ায় আনকোরা মুখ ছিলেন, হ্যাজার্ড তা নয়। বেলজিয়াম মিডফিল্ডারের গায়ে বরং অনেক আগে থেকেই তারকা খ্যাতির তকমা। প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে নিজেকে এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠিত করেছেন বর্তমান বিশ্বের সেরা মিডফিল্ডারদের একজন হিসেবে। ইংলিশ ক্লাব চেলসির হয়ে গত কয়েক মৌসুম ধরেই খেলছেন দুর্দান্ত।

ফেভারিট পতনের বিশ্বকাপে দূরন্ত গতিতে শিরোপার দিকে এগিয়ে চলছে যে বেলজিয়াম, সেই দলের অধিনায়কত্বের আর্মব্র্যান্ড হ্যাজার্ডের বাহুতে। বেলজিয়ামের এই ‘সোনালী প্রজন্মের’ কাণ্ডারি তিনি। সেই সুবাদে বেলজিয়ামের এই শিরোপা-স্বপ্নের সারথির দিকে রিয়ালের নজরও অনেক আগে থেকেই। বিশেষ করে রিয়ালের সদ্য বিদায়ী কোচ জিনেদিন জিদানের খুবই পছন্দের খেলোয়াড় তিনি। জিদানই হ্যাজার্ডকে দলে টানার ইচ্ছা পোষণ করেন এবং প্রক্রিয়া শুরু করেন।

জিদান আবার হ্যাজার্ডের শৈশবের ফুটবল আদর্শ। ফরাসি কিংবদন্তিকে অনুসরণ করেই বেড়ে উঠেছেন বেলজিয়াম মিডফিল্ডার। তো শৈশবের সেই নায়ক যখন হাত বাড়ান, হ্যাজার্ডও একবাক্যে রাজি হয়ে যান রিয়ালে যেতে। এমনকি রিয়ালে যাওয়ার জন্য হ্যাজার্ড চেলসিতে এক রকম বিদ্রোহও শুরু করেছিলেন দিয়েছিলেন! চেলসির নতুন চুক্তির প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন বারবার। কিন্তু যার টানে রিয়ালে যাওয়ার জন্য মরিয়া ছিলেন, সেই জিদান রিয়ালের কোচের পদ থেকে সরে গেছেন। রিয়ালও হ্যাজার্ডের সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে ‘ধীরে চল’ নীতি অনুসরণ করে। স্পেনের গণমাধ্যমের খবর রাশিয়া বিশ্বকাপে হ্যাজার্ডের দৃষ্টিনন্দন পারফরম্যান্স রিয়ালকে আবার মরিয়া করে তুলেছে।

প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের মিশনে বেলজিয়ামকে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিচ্ছেন ২৭ বছর বয়সী হ্যাজার্ড। প্রতিটা ম্যাচেই যেন ছাপিয়ে যাচ্ছেন নিজেকে। শুক্রবার রাতে ব্রাজিলকে হারানোর ম্যাচেও অবিশ্বাস্য ছিলেন হ্যাজার্ড। তো তিনি এখন বিশ্বকাপ নিয়েই ব্যস্ত। সমস্ত মনোযোগই বিশ্বকাপে। ওদিকে রিয়াল তার সুবাসিত পারফরম্যান্সে মুগ্ধ হয়ে চুক্তির প্রক্রিয়া আবার নতুন করে হাতে নিয়েছে।

এখন প্রশ্ন হলো, মেসুত ওজিল, হামেশ রদ্রিগেজের ধারাবাহিকতায় রিয়াল কি শেষ পর্যন্ত ২০১৮ বিশ্বকাপের বিস্ময় হ্যাজার্ডকেও দলে ভেড়াতে পারবে? উত্তর দেবে সময়।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে