ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এখন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে

গতকাল দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা এ মানববন্ধনের আয়োজন করে। এতে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. গীতি আরা নাসরীন বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকার মুখে একটা তোরণ নির্মাণ করেছেন। যার নাম মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ।
এই তোরণ দিয়ে ইতিহাসের বুকে পা ফেলে যখন আপনারা এইখানে ঢুকবেন, এখানে অপরাজেয় বাংলা দেখেন, শহীদ মিনার দেখেন প্রত্যেকটি জায়গা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটি সদস্যের সংগ্রামের চিহ্ন নিয়ে আছে।
এরকম একটি সময়ে আমরা আশ্চর্য হয়ে দেখি একটি আন্দোলন একটি দাবি এবং যে দাবির যৌক্তিকতা শুধু আজকে নয়, বহুদিন ধরে বলা হচ্ছে। অথচ তাদের দাবি পূরণ না করে এই আন্দোলনকে দমন করতে ছাত্রলীগ দিয়ে এসব শিক্ষার্থীর উপর যে নৃশংস বর্বর আক্রমণ চালানো হলো, এর কোনো ব্যাখ্যা আমার কাছে নেই। তিনি বলেন, এই ঘটনা শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নয়, অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও ঘটেছে। চোখের সামনে এই ধরনের বর্বর আক্রমণ চলছে তাতে উদ্বিগ্ন হয়েই অভিভাবক কিছু মানুষ মঙ্গলবার প্রেস ক্লাবে দাঁড়িয়েছিলেন। তাদেরকে সেখানে দাঁড়াতে দেয়া হয়নি। শুধু তাই না অধ্যাপক ফাহমিদুল হককেও লাঞ্ছিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রত্যেকটি নাগরিকের উদ্বেগ প্রকাশ করার অধিকার আছে। কিন্তু এই উদ্বেগ প্রকাশ করতে গিয়ে তাদের কিভাবে নির্যাতন ও লাঞ্ছনা করা হয়েছে। তিনি অত্যাচার-নির্যাতনের তদন্ত দাবি করে বিচার দাবি করেন। অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. রুশাদ ফরিদী বলেন, আমি গত কয়েকদিন ধরে মানসিকভাবে অস্বস্তি বোধ করছি। এটা কেমন বিশ্ববিদ্যালয়, এই বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আমরা গর্ব করি। অথচ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের পিটিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তারপর তাকে বিনা অপরাধে রিমান্ডে নিয়ে যাচ্ছে। আজ এখানে অনেকের ইচ্ছা থাকলেও আসতে পারেননি।
এটা এখন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। এই মৃত্যুপুরীর অবসান কে ঘটাবে। ঢাবির এ অধ্যাপক আরো বলেন, এখন আর কোনো সময় নেই। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। যে কয়জন আসুক তাদের নিয়ে দাঁড়িয়ে পরতে হবে। আমরা এখন বিপর্যয়ের মুখে। এখন আর মানববন্ধন বিবৃতির সময় নেই। এখন আমাদের সরাসরি কর্মসূচিতে যেতে হবে। একজন হোক দু’জন হোক তাদের নিয়ে মাঠে থাকতে হবে। মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. ফাহমিদুল হক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানযীম উদ্দিন খান, সহযোগী অধ্যাপক ড. সামিনা লুৎফা প্রমুখ।
শিক্ষক লাঞ্ছনার নিন্দা বিএনপি জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের: কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ করতে গিয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ফাহমিদুল হক যেভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন তা কোনো সভ্য সমাজে কল্পনাও করা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি-জামায়াতপন্থি সাদা দলের শিক্ষকরা। সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন খান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, জাতীয় দৈনিকের পাতাজুড়ে প্রকাশিত লাঞ্ছনার ছবি দেখে আমরা স্তম্ভিত, বাকরুদ্ধ এবং ক্ষুব্ধ।
আইনের পোশাক পরিহিতদের কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ অনাকাঙ্ক্ষিত, অনভিপ্রেত এবং নিন্দনীয়। যারা এ কাজটি করেছেন তারাও কোনো না কোনো শিক্ষকের ছাত্র ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপকের কোমরের বেল্ট খামছে ধরে টানাহেঁচড়া করার চিত্র তাদের বিবেককে কি একবারও নাড়া দেয় না? জাতি হিসেবে এ ঘটনা আমাদের জন্য চরম লজ্জাজনক। অধ্যাপক ফাহমিদুল হকের সঙ্গে যে অশোভন আচরণ করা হয়েছে আমরা তার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং দোষীদের শাস্তি দাবি করছি।
ছাত্রলীগের বিচার চায় ছাত্রজোট: কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গত কয়েকদিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার বিচার ও দোষীদের গ্রেপ্তার দাবি করেছে প্রগতিশীল ছাত্রজোট। দাবি আদায়ে কর্মসূচিও ঘোষণা করেছে তারা। গতকাল দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করে ছাত্রজোট।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি জি এম জিলানী শুভ বলেন, গত ৩০শে জুন থেকে ৩রা জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা-আক্রমণ করেছে। একই সঙ্গে পুলিশের হয়রানি, গ্রেপ্তার ও ৫৪ ধারায় তুলে নিয়ে যাওয়ারও ঘটনা ঘটেছে। এই রকম চরম দমনমূলক পরিস্থিতিতে আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করছি।
তিনি বলেন, ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসগুলোতে লাঠিসোটা, রড, চাপাতি দিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর শারীরিক আক্রমণ-নিপীড়ন মারপিট করে শিক্ষার গণতান্ত্রিক পরিবেশ নষ্ট করে চলেছে। তারা মত প্রকাশের সাংবিধানিক স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ করে আইনত শাস্তিযোগ্য অপরাধ করে চলেছে। কিন্তু প্রশাসন নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করে চলেছে ও হামলাকারীদের পক্ষেই সাফাই গাইছে যা প্রশাসনের মেরুদণ্ডহীন দলীয় দাসত্বের পরিচয়কে স্পষ্ট করে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে প্রগতিশীল ছাত্র জোট পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- ৮ জুলাই সন্ত্রাস ও দখলদারিত্ব বন্ধ ও শিক্ষার গণতান্ত্রিক পরিবেশের দাবিতে বেলা ১২টায় কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভিসিকে স্মারকলিপি ও সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজের ভিসি-অধ্যক্ষ বরারব স্মারকলিপি প্রদান, ১২ই জুলাই মশাল মিছিল, ১৫ই জুলাই কোটা সংস্কারের প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রগতিশীল ছাত্র জোটের সমন্বয়ক গোলাম মোস্তফা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি নাঈমা খালেদ মনিকা, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন প্রিন্স, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি জিএম জিলানী শুভ, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি ইকবাল কবীর, ছাত্র ঐক্য ফোরামের যুগ্ম আহ্বায়ক সরকার আল ইমরান প্রমুখ।
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি: ৪৮ ওভারে ৩৯৬ রান করলো বাংলাদেশ
- শেষ হলো বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তানের মধ্যকার ম্যাচ
- নাহিদ মিরাজের বোলিং তোপে পাকিস্তান, দেখেনিন সর্বশেষ স্কোর
- বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তানের মধ্যকার প্রস্তুতি ম্যাচ সম্পূর্ণ ফ্রীতে লাইভ দেখবেন যে ভাবে
- বাংলাদেশের বোলারদের দুর্দান্ত বোলিং, দেখেনিন সর্বশেষ স্কোর
- ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ, দেখেনিন সর্বশেষ স্কোর
- ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ ১০ ওভার শেষ, দেখেনিন সর্বশেষ স্কোর
- ৩১ ওভারের খেলা শেষ, দেখেনিন সর্বশেষ স্কোর
- বোলিংয়ে বাংলাদেশ, দেখেনিন সর্বশেষ স্কোর
- মেকশিফট ওপেনার নিয়ে ভারতের বিপক্ষে একাদশ সাজালো বাংলাদেশ
- পাকিস্তানকে মাঝাড়ি রানের টার্গেট দিলো বাংলাদেশ
- নতুন নির্দেশনা জারি করলো সৌদি আরব
- অলআউটের পথে বাংলাদেশ, দেখেনিন সর্বশেষ স্কোর
- সৌদি রিয়াল রেটের বিশাল লম্ব লাফ
- ৩ উইকেট হারালো বাংলাদেশ, দেখেনিন সর্বশেষ স্কোর