ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৫ ফাল্গুন ১৪৩১

ব্যাটিংয়ে লজ্জার পর বোলিংয়েও হতাশার দিন

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০১৮ জুলাই ০৫ ১০:৫২:১৪
ব্যাটিংয়ে লজ্জার পর বোলিংয়েও হতাশার দিন

নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে সবচেয় কম রানে অল আউট হওয়ার বেদনায় পুড়লো বাংলাদেশ। দিনের প্রথম সেশনেই মাত্র ১৮.৪ ওভারে অল আউট হওয়ার পর বোলিংয়েও পুরো দিন টাইগারদের কেটেছে হতাশায়। ৬৮ ওভার বল করে মাত্র ২টি ক্যারিবিয়ান উইকেট লাভ করে বাংলাদেশ। ২ উইকেটে ২০১ রান তুলে প্রথম টেস্টের প্রথম দিনের খেলা শেষ করেছে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ইতিমধ্যে ১৫৮ রানের লিড পেয়েছে স্বাগতিকরা।

পুরো সিরিজে ক্যারিবিয়ান গতির সামনে যে চূড়ান্ত পরীক্ষা দিতে হবে টাইগারদের তা এক রকম অনুমিতই ছিল। তার উপর উইকেটে সবুজাভ ঘাসের আভা জানান দিচ্ছিল সুইংয়ের বিষের কথাও। তবে আগের দিন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বলেছিলেন চ্যালেঞ্জ নিতে তৈরি তার দল। কিন্তু কোথায় কি! চ্যালেঞ্জ তো দূরের পথ, উইকেটে থিতু হওয়ার আগেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল বাংলাদেশের ইনিংস। আর ক্রেমার রোচ, জেসন হোল্ডার, মিগুয়েল কামিন্স যা করলেন তার বিন্দু মাত্র কিছুও করে দেখাতে পারলেন না বাংলাদেশের তিন পেসার আবু জায়েদ রাহি, কামরুল ইসলাম রাব্বি ও রুবেল হোসেনরা। ফলে সকালের দুঃস্বপ্নের পর বিকেল শেষে থাকল আতঙ্ক। টেস্টটা ক’দিনে গড়াবে!

চার বছর আগে সর্বশেষ ক্যারিবিয়ান সফরটিও বাংলাদেশ দলের জন্য ছিল ভুলে যাওয়ার। ২ টেস্টের সিরিজ ও ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয় বাংলাদেশ। একমাত্র টি-টুয়েন্টিটা ভেস্তে যায় বৃষ্টিতে। সেবার প্রথম টেস্টে ১০ উইকেট আর দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশের হার ২৯৬ রানে। ২০০৯ সালে দ্বিতীয় সারির ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে অবশ্য দারুণ সব প্রথমের জন্ম দেয় বাংলাদেশ। ২০০৪ সালের সফরে কিছু ব্যক্তিগত অর্জন আর একটা টেস্ট ড্র ছাড়া তেমন কিছুই ছিল না।

এদিন পেসার আবু জায়েদের মাথায় উঠলো টেস্ট ক্যাপ। কিন্তু নিজের স্বপ্নের ম্যাচে দুঃস্বপ্ন সঙ্গী হলো তার। প্রথম সেশনেই নামতে হলো ব্যাটিংয়ে। আবার সেই সেশনেই বল হাতে লড়াই। ১৬ ওভার বল করলেন জায়েদ। বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। দারুণ সুইং পাচ্ছিলেন। তবে ওই উইকেট থেকে যাচ্ছিল মরিচিকা। ক্যারিবিয় দুই ওপেনার ১১৩ রানের জুটি গড়ার পর জায়েদই ভাঙলেন তা। ৫৮ রান করা ডেভন স্মিথকে নুরুল হাসান সোহানের হাতে ক্যাচ বানান জায়েদ।

কিন্তু তার আগেই ব্যাটিংয়ে মুদ্রার যে পিঠটা দেখেছে টাইগাররা, বোলিংয়েও সেটি দেখে ফেলেছে। ব্র্যাথওয়েট সারা দিন ভুগিয়ে ৮৮ রান করে অপরাজিত থেকে যান। কাইরেন পাওয়েলকে সঙ্গে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে যোগ করেন ৮১ রান। ৪৮ রান কারে পওয়েল ফিরেন মাহমুদউল্লাহর বলে। স্প্লিপে দারুণ এক ক্যাচ নেন লিটন কুমার দাস।

এম্যাচে বাংলাদেশের একাদশে তিন স্পেশালিস্ট উইকেট কিপার। মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস ও নুরুল হাসান সোহান। তবে উইকেটে পিছনের দায়িত্ব সামলেছেন সোহান। কিন্তু দেশের সেরা উইকেটকিপার হিসেবে সবসময় সোহানের নাম উচ্চারিত হলেও লিটন-মুশফিকের সামনেই স্মিথের ক্যাচ ছাড়লেন তিনি। স্মিথ তখন ব্যাট করছিল ৩৪ রানে। সাকিবের বলে মিড অনে ব্র্যাথওয়েটের ক্যাচ ছেড়েছেন আবার মুশফিকুর রহিম। দিন শেষে এসবও থাকলো হতাশার তালিকায়।

তার আগে বর্ণনাতিত ব্যাটিং বাংলাদেশের। শুরুর আগেই সব শেষ। বিনা উইকেটে ১০ রান করে ফেলার পর রোচ তোপে ১৮ রানে ৫ উইকেটে হারায় বাংলাদেশ। নবম ওভারে মুশফিক, সাকিব ও মাহমুদউল্লাহকে ফেরান। তিন জনই ফিরেছেন শূন্য রানে। চোটে পড়ার আগে ৫ ওভার বল করে ৮ রানে নিয়েছেন ৫ উইকেটে। বাকী উইকেটগুলোর ২টি নেন অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। ৩ উইকেট নেন কামিন্স।

টাইগারদের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৫ রান করেন লিটন দাস। বাকীদের কেউই দুই অঙ্কের কোটায় পৌঁছাতে পারেনি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অপরাজিত ৬ রান করেন রুবেল হোসেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

প্রথম দিন শেষে

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৪৩/১০ (১৮.৪ ওভার) (তামিম ৪, লিটন ২৫, মুমিনুল ১, মুশফিক ০, সাকিব ০, মাহমুদউল্লাহ ০, সোহান ৪, মিরাজ ১, রাব্বি ০, রুবেল ৬*, আবু জায়েদ ২; রোচ ৫/৮, গ্যাব্রিয়েল ০/১৪, হোল্ডার ২/১০, কামিন্স ৩/১১)।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ২০১/২ (৬৮ ওভার) (ব্র্যাথওয়েট ৮৮*, স্মিথ ৫৮, পাওয়েল ৪৮, বিশু ১*; আবু জায়েদ ১/৫৫, রুবেল ০/২৪, কামরুল ০/৪৫, সাকিব ০/২২, মিরাজ ০/৪৫, মাহমুদউল্লাহ ১/৬)।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে