ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

বাংলাদেশিদের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় বৈধ প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০১৮ জুন ২৮ ১১:১৯:৪৭
বাংলাদেশিদের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় বৈধ প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ

অতঃপর বিপুল সমালোচনার মুখে অস্ট্রেলিয়া ৪৫৭ এর বিকল্প হিসাবে চালু করেছে সাবক্লাস ৪৮২ বা টি.এস.এস বা টেম্পোরারি স্কিলড শর্টেজ ভিসা। টেম্পোরারি স্কিলড শর্টেজ ভিসার অন্তর্গত একটি ভিসা হচ্ছে সাবক্লাস ৪৮২। এর আওতায় বিদেশী শ্রমিকরা অস্ট্রেলিয়ায় যেকোনো বৈধ প্রতিষ্ঠানে চাকরি নিতে পারে। এই সাব-ক্লাস ৪৮২-এর অধীনে এখন শর্ট টার্ম, মিডিয়াম ও শ্রমচুক্তিতে ভিসা হয়ে থাকে।

এই ভিসার ক্ষেত্রে ভিসাপ্রার্থীকে অবশ্যই টিএসএস ভিসার পেশা তালিকার জন্য একটি অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক মনোনীত হতে হবে। সর্বনিম্ন স্বল্পমেয়াদী স্টিমে আই.ই.এল.টি.এসে ৪.৫ বা সমমান এবং মধ্যম মেয়াদি স্টিমে ৫ বা এর সমমানের ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা থাকতে হবে। এ ছাড়া দেখাতে হবে পুলিশ কর্তৃক প্রদত্ত অপরাধী নয় এমন চারিত্রিক সনদ। সাবক্লাস ৪৮২ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আন্তর্জাতিক অভিবাসন আইন বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট শেখ সালাহউদ্দিন আহমেদ এর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই শিক্ষিত ও দক্ষ বাংলাদেশীদের জন্য এটা বিরাট সুযোগ। মূলত ভারতীয়রা সাবক্লাস ৪৫৭ এ এগিয়ে থাকলেও বেশী গেলেও বাংলাদেশীরা যদি প্রথম থেকেই দ্রুত ও দক্ষতার সাথে ফাইল প্রসেস করে তবে স্বল্প সময়ে এই ভিসা পাওয়া নিশ্চিত। তিনি আরও বলেন যেহেতু অস্ট্রেলিয়া ডিমান্ড লিস্টে ৪৩২ টি পেশা রয়েছে সুতরাং অনেকেই বিভিন্ন সাবক্লাসে আবেদন করে পরিবার সহ অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পারে।

চাকরি নিয়ে প্রবেশ করেও অনেকে অস্ট্রেলিয়ার স্থায়ী নাগরিক হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন বলে জানান এই অভিবাসন আইনজীবী। তিনি বলেন, সঠিক চাকরি এবং সঠিক টেরিটরি বেছে নেওয়ার দক্ষতা এ ক্ষেত্রে নাগরিক হওয়ার বিষয়টি ত্বরান্বিত করে। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়ায় শুধু গত বছর প্রায় চার লাখ স্থায়ী চাকরির পদ সৃষ্টি হয়েছে।

দেশটিতে যাওয়ার জন্য কয়েক ডজন ভিসা প্রোগ্রাম রয়েছে। তবে মূলত চার ভাগ প্রচলিত ক্যাটাগরিতে সেখানে যাওয়া তুলনামূলক সহজ। এগুলো হলো :

স্কিলড মাইগ্রেশন উইথ পিআর:

সাব-ক্লাস ১৮৯, স্কিলড ইনডিপেনডেন্ট ভিসা :

বিষয়টি সম্পূর্ণ পয়েন্টের ওপর নির্ভর করে। মোট ৬০ পয়েন্ট প্রয়োজন হয়। পয়েন্ট পাওয়া যায় বয়স, কাজের অভিজ্ঞতা, পড়াশোনা, ভাষার ওপর চূড়ান্ত দখলের ওপর।

স্কিলড নমিনেটেড ১৯০ ভিসা :

এই প্রোগ্রামটি অত্যন্ত জনপ্রিয়। এতে আবেদনের জন্য শর্ট লিস্টেড পেশাজীবী হতে হবে। টেরিটরি থেকে স্পন্সরশীপ থাকতে হবে, যা পাওয়া খুব কঠিন কাজ নয়।

স্কিলড রিজিওনাল ভিসা (সাব-ক্লাস ৪৮৯) :

রিজিওনাল এলাকায় দুই বছরের পড়াশোনার অভিজ্ঞতা। আইইএলটিএসে কমপক্ষে ০৬ স্কোর থাকতে হবে। পড়াশোনার পর রিজিওনাল এলাকায় এক বছরের কাজের অভিজ্ঞতা। চাকরিদাতার বর্তমান কাজের ঠিকানা, কাজের ধরন ও অভিজ্ঞতার বছর, পড়াশোনার যোগ্যতা, চাকরির ধরন ও বেতনের ওপর পুরো বিষয়টি নির্ভর করে।

এমপ্লয়ার স্পন্সরশীপ :

অস্ট্রেলিয়ান কোনও চাকরিদাতা যদি আপনাকে স্পন্সর করতে ইচ্ছুক হয়, তবে আপনার ভাগ্য খুলে গেল। এটি জোগাড় করা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। এখানে অনেক ধরনের ভিসা হয়। সঠিক ভিসা খুঁজে পাওয়ার ওপর সবকিছু নির্ভর করে।

কোন ধরনের ভিসার জন্য আপনি উপযুক্ত, তা সঠিক ও বিস্তারিতভাবে জানাটা সবচেয়ে জরুরি। এ বিষয়ে অভিজ্ঞ ইমিগ্রেশন আইনজীবীর পরামর্শ গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই।

এ ভিসায় প্রশিক্ষণটি দুভাবে হতে পারে। সরাসরি একই পেশায় অস্ট্রেলিয়ায় কাজ করার মাধ্যমে অথবা কোনো প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে। কার্যকরী ইংরেজি ভাষা দক্ষতা (আইইএলটিএসে ৪.৫) থাকতে হবে। ১৮ বছর বয়সী বা তার ঊর্ধ্বে হতে হবে।

এমপ্লয়ার নমিনেশন স্কিম (১৮৬) :স্থায়ীভাবে পরিবারসহ এ স্কিমে আবেদন করে বসবাস ও কাজ করা যায়। নাগরিকত্ব লাভ করা সম্ভব। অস্ট্রেলিয়ায় দুই বছর কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হয়।

রিজিওনাল স্পন্সরড মাইগ্রেশন স্কিম (১৮৭) :

স্কিল অ্যাসেসমেন্টের প্রয়োজন হয় না। বয়স ৫০ বছরের নিচে হতে হবে। চাকরিদাতার দায়-দায়িত্ব এই ক্ষেত্রে কিছুটা কম। স্থায়ী নাগরিকত্ব পাওয়া সম্ভব। রিজিওনাল এরিয়া থেকে জব অফারের প্রয়োজন হয়। পড়াশোনা করার সুযোগ পাওয়া যায়।

তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসনের জন্য সততা ও দক্ষতার কোনো বিকল্প নেই। সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে ভিসা প্রাপ্তির ক্ষেত্রেও কোন জটিলতা তৈরি হয় না। অস্ট্রেলিয়ান ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে দক্ষতার সঙ্গে যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কাজ করে যাচ্ছে, তার মধ্যে ওয়ার্ল্ডওয়াইড মাইগ্রেশন কনসালট্যান্টস লিমিটেড অন্যতম।

অস্ট্রেলিয়া ইমিগ্রেশন সম্পর্কে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট শেখ সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘চলতি বছর প্রচুর দক্ষ লোকের প্রয়োজন পড়বে। আমরা যদি সঠিকভাবে ও যোগ্য লোক বাছাই করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আবেদন করতে পারি, তবে সবাইকে পেছনে ফেলে আমরাই অস্ট্রেলিয়ার শ্রমবাজারটি দখল করতে পারব। বাংলাদেশের সেই দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা রয়েছে।’ এ ক্ষেত্রে সবাইকে প্রতারকদের হাত থেকে সাবধানে চলার জন্য তিনি উপদেশ দেন। তিনি আরও বলেন, যেহেতু বাংলাদেশে বিনিয়োগের একটি চমৎকার পরিবেশ বিদ্যমান আছে, তাই প্রবাসীদের এই সময়ে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে দেশের চলমান উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় অংশ নিতেও আহ্বান জানান তিনি।

অস্ট্রেলিয়া মাইগ্রেশনের একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি ভিসা নিয়ে আগমনের সঙ্গে সঙ্গে আপনার সন্তানরা কিন্তু প্রতি মাসে সোশ্যাল বেনিফিট পাওয়া শুরু করবে। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো দেশটির বিনামূল্যের স্বাস্থ্যসেবা পরিবারের সব সদস্যের জন্য।

সুতরাং আর দেরি না করে যোগ্যতা অনুযায়ী আবেদন করতে পারেন অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্বের জন্য।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে