ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

সু চির কাছ থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নেয়ার হুমকি সেনাপ্রধানের

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০১৮ জুন ২৭ ১৮:৫৮:৪৭
সু চির কাছ থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নেয়ার হুমকি সেনাপ্রধানের

চলতি মাসের শুরুর দিকে সু চির পাশাপাশি দেশটির প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সেনাবাহিনীর উপ-প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেন মিন অং হ্লেইং। তবে সেনাপ্রধানের অভ্যুত্থানের হুমকির ওই খবর ব্যাংকক পোস্টে প্রকাশের পর মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের মহাপরিচালক জেনারেল ইউ জ্য হতেই বলেছেন, বৈঠকে অভ্যুত্থানের হুমকি দেননি মিন অং হ্লেইং।

গত শনিবার (২৩ জুন, ২০১৮) ব্যাংকক পোস্ট ‘মিয়ানমারে সম্ভাব্য সেনা অভ্যুত্থান এড়ালো জাতিসংঘ প্রতিনিধি’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ল্যারি জ্যাগানের লেখা ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চির সঙ্গে বৈঠকে রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ইস্যুতে সরকারের কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইং। এমনকি তিনি সেনা অভ্যুত্থানেরও হুমকি দেন।

ব্যাংকক পোস্ট এমন এক সময়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থানের হুমকির খবর প্রকাশ করলো যখন গত বছরের আগস্টে রাখাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে কি-না তা জানতে দেশটির ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডির) নেত্রী ও রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি তিন সদস্যের একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের কথা জানিয়েছেন।

তিন সদস্যের এই কমিশনে একজন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি থাকবেন। সু চির এই তদন্ত কমিশন গঠনের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।

কমিশন গঠনের সিদ্ধান্তের পরপর নিরাপত্তা বৈঠক করেছেন সেনাপ্রধান। শরণার্থীদের রাখাইনে ফেরাতে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হওয়ার পর ওই বৈঠক হয়।

সমঝোতা স্মারকের ব্যাপারে সরকার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ না করলেও ইতোমধ্যে আরাকান জনগোষ্ঠী ও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মধ্যে সন্দেহ ও বিরক্তি দানা বাঁধছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে এই সমঝোতা স্মারকের বিস্তারিত প্রকাশ করা হতে পারে।

সু চির সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকারের সঙ্গে সেনাবাহিনীর উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজ করছে। উত্তেজনাপূর্ণ এই সময়ে মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত, সুইস কূটনীতিক ক্রিশ্চিন স্ক্র্যানার বার্গেনার চলতি মাসের শুরুর দিকে মিয়ানমার সফরে যান। গত বৃহস্পতিবার শেষ হওয়া এই সফরের আগে তিনি অং সান সু চি ও সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইংয়ের সঙ্গে স্বাক্ষাৎ করেন।

মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও বেসামরিক সরকারের মধ্যে যে বিরোধ দেখা দিয়েছে এর মূলে রয়েছে তদন্ত কমিশন গঠন এবং এতে বিদেশি বিশেষজ্ঞ রাখা। সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইংয়ের ঘনিষ্ঠ সাবেক এক জ্যেষ্ঠ সেনাকর্মকর্তা ব্যাংকক পোস্টকে বলেন, ‘এটা সেনাবাহিনীর জন্য পুরোমাত্রায় অপমানজনক।’

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘এটা একেবারেই শেষ সীমা; যা অতিক্রম করা যাবে না।’ তিনি বলেন, বেশ কিছু সূত্র বলছে, অং সান সু চির সঙ্গে বৈঠকে সেনা অভ্যুত্থানের হুমকি দিয়েছেন মিন অং হ্লেইং। আপনি যদি সরকার পরিচালনা করতে না পারেন, তাহলে সেনাবাহিনী ক্ষমতা ছিনিয়ে নেবে। তিনি বলেন, সংবিধানে এটি বলা আছে।

তবে এটা পরিষ্কার নয় যে, তিনি পুরো দেশ পরিচালনার কথা বলেছেন নাকি শুধুমাত্র রাখাইন প্রদেশ। সংবিধানে বলা আছে, সেনাপ্রধান যদি মনে করেন দেশের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে, তাহলে তিনি পুরো দেশের অথবা প্রদেশের প্রশাসনিক ক্ষমতা সেনানিয়ন্ত্রণে নিতে পারেন। ২০১২ সালের শেষের দিকে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইনের ক্ষমতা দখল করে; ওই সময় দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি ছিল। আর এতে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট থেইন সেইনের সম্মতি ছিল।

সূত্র : ব্যাংকক পোস্ট, দ্য ইরাবতি।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে