ঢাকা, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬ মাঘ ১৪৩১

মৃত্যুর আগে পর্যন্ত আক্ষেপ থাকবে আরিফুলের!

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০১৮ জুন ১২ ১৫:০৩:০৫
মৃত্যুর আগে পর্যন্ত আক্ষেপ থাকবে আরিফুলের!

তবে চিত্রনাট্য ভিন্নও হতে পারতো। ম্যাচটি জিতিয়ে বীরের বেশে মাঠ ছাড়তে পারতেন তরুণ অলরাউন্ডার আরিফুল হক। কেননা সেসময় যে ক্রিজে ব্যাটিংয়ে ছিলেন তিনিই। ম্যাচটি জেতাতে পারবেন এমন আত্মবিশ্বাসও ছিলো তাঁর।

সেই আত্মবিশ্বাস থেকেই রশিদ খানের করা শেষ বলটি লং অন দিয়ে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বলটি বাউন্ডারি লাইন পা হওয়ার আগেই দারুণ ফিল্ডিং করে ফেরত পাঠান আফগান শফিকুল্লাহ।

হয়তো বলটি চার হয়ে গেছে ভেবেই তিন রান নেয়ার কথা ভাবেননি আরিফুল কিংবা তাঁর সঙ্গী মাহমুদুল্লাহ। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে। শফিকুল্লাহর থ্রোতে শেষ পর্যন্ত রান আউটের শিকার হয়ে ফিরতে হয়েছে রিয়াদকে।

আর ১ রানে হারের আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ। সেই ম্যাচটির স্মৃতিচারন করতে গিয়ে আরিফুল নিজেই জানিয়েছেন এমন সুযোগ হাতছাড়া করাতে বেশ অনুতপ্ত তিনি। মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'সত্যি কথা বলতে গেলে আমার কাছে মনে হচ্ছিলো যে আমি ম্যাচটি জেতাতে পারবো। আর আমি ড্রেসিংরুমেও বলেছিলাম ম্যাচটি জেতাতে পারবো। আর আমি ক্রিজে যাওয়ার পর যখন রশিদ খানকে ফেস করলাম আমি হয়তো তিনটি বল খেলেছি, রিয়াদ ভাই তিনটি বল ফেস করেছে। শেষ বলটি অনেকটা ছিলো ডু অর ডাই। হয় ছয় নাহলে চার মারতে হবে।'

সিনিয়র ক্রিকেটার হিসেবে ম্যাচের সেই সময়টিতে আরিফুলকে সাহস দিয়েছিলেন রিয়াদ। শুধু ব্যাটে চোখ বন্ধ করে হিট করার পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ব্যাটে লাগলেও চার কিংবা ছয় হলো না বলটি। এই বিষয়টিকে দুর্ভাগ্যজনক হিসেবেই টাই আখ্যা দিলেন আরিফুল। তাঁর ভাষায়,

'রিয়াদ ভাই আমাকে বলেছিলেন যে দ্যাখ এতো কিছু চিন্তা করিস না, শুধু বলটি দেখ আর হিট কর। আর এটাই তোর হিরো হওয়ার একটি সুযোগ। হয়তোবা ব্যাটেও লেগেছে, তবে হয়তো কপালে ছিলো না। ক্রিকেট খেলাটি আসলে কপালের ওপর অনেকটা নির্ভর করে। হয়তো বা হাতে লেগে ছয় কিংবা চার হয়ে যেতে পারতো। তবে কোনোটাই হলো না। আসলে এটি ব্যাড লাক ছিলো।'

নিজের তৃতীয় আন্তর্জাতিক টি টুয়েন্টি খেলতে নেমেই হিরো হওয়ার সুযোগ ছিলো আরিফুলের সামনে। কিন্তু সেটি না পারায় স্বভাবতই বেশ হতাশ এই তরুণ পেস বোলিং অলরাউন্ডার। আর এই আক্ষেপ জীবনের শেষ পর্যন্ত থাকবে তাঁর বলেই মনে করেন তিনি। আরিফুল বলেন,

'এখন পর্যন্ত আমার আফসোস হচ্ছে যে এত বড় একটি সুযোগ ছিলো আমার কাছে যে আমি কেবল দুটি টি টুয়েন্টি ম্যাচ খেলছি এবং তিন নম্বরটিতে জেতানোর সুযোগ এসেছে অথবা আমি জেতাবো, সবকিছু একটা কৌতূহল জাগছিলো যে আমি যদি জেতাতে পারতাম তাহলে অনেক ভালো হতো বা একটি স্মরণীয় দিন হয়ে থাকতো আমার। বা আমি মারা যাওয়ার আগে পর্যন্ত হয়তো তা মনে থাকতো। কিন্তু ব্যাড লাক যে সেটি হচ্ছে না।'

তবে আফগান সিরিজের ব্যর্থতা ভুলে সামনে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও গুরুত্ব দিচ্ছেন আরিফুল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আসন্ন টেস্ট সিরিজ দিয়েই কামব্যাক করার প্রত্যয় ফুটে উঠলো তাঁর কণ্ঠে। আরিফুলের বক্তব্য,

'আফগানিস্তানের সাথে আমাদের জেতা উচিৎ ছিলো। তবে দুর্ভাগ্যবশত তা হয়নি। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজটি আমরা চাচ্ছি কামব্যাক করার জন্য। আসলে আমি সব ফরম্যাটেই খেলতে চাই। আর এখন যেহেতু লাল বলে প্র্যাকটিস করছি তাই চিন্তা করে বোলিং করছি। আবার যখন সাদা বলে বোলিং করবো যখন ওয়ানডে এবং টি টুয়েন্টির জন্য বোলিং করবো।'

নিজেদের শক্তিমত্তা সম্পর্কেও আস্থা আসছে আরিফুলের। তাঁর মতে টেস্টে তরুণ ক্রিকেটাররা ভালো করতে পারলে টেস্টে সাফল্য পাওয়া সম্ভব হবে। আর এর মাধ্যমেই আফগানদের বিপক্ষে পরাজয়ের গ্লানি কাটাবে দল বিশ্বাস তাঁর। টাইগার এই অলরাউন্ডার বলেন,

'প্রথম আমরা টেস্ট খেলতে যাচ্ছি আর টেস্টে আমাদের মনে হয় কামব্যাক করতে পারবো। কারণ আমাদের নতুন পেস বোলার আছে, তরুণ কেউ হয়তো খেললেও খেলতে পারে। আর আমার মনে হয় না অতটা কঠিন হবে। টেস্টে যদি আমরা শক্তভাবে ফিরতে পারি তাহলে মনে হয় টেস্টটি ভালো যাবে।'

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে