ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

রাতে আফগানিস্তানের মুখোমুখি টাইগাররা

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০১৮ জুন ০৩ ১০:২৮:৫৮
রাতে আফগানিস্তানের মুখোমুখি টাইগাররা

দ্বিপক্ষীয় একটি সিরিজ। ভারতের দেরাদুনে হলেও যা আসলে আফগানদের হোম সিরিজ। আবার ভারতীয়দেরও প্রাপ্তির সিরিজ। দুই দলের সিরিজের কল্যাণেই রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামটি দেশটির ২১তম টি-টুয়েন্টি ভেন্যু হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে। পাহাড়ের পাদদেশে মনোরম পরিবেশে ক্রিকেট যুদ্ধের এক মঞ্চ। উত্তরখন্ডের দর্শকদের উপস্থিতিতে স্টেডিয়াম গ্যালারি ভরবে কিনা তা সময়ই বলবে। তবে এ ম্যাচে নজর থাকবে পুরো ক্রিকেট বিশ্বেরই।

এ নজর অবশ্য আরো আগেই পড়েছে। আর সবাই টাইগারদের বিপক্ষে আফগানদের দারুণভাবে এগিয়ে রাখছে। র‍্যাঙ্কিংই আসলে আফগানদের ফেভারিটের তকমা দিয়ে দিচ্ছে। টি-টুয়েন্টি র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ দশ নম্বরে হলেও আফগানিস্তান যে আটে। এই র‍্যাঙ্কিংও পরিসংখ্যানের একটি অংশ। তবু আক্ষরিক অর্থে ‘পরিসংখ্যান’কে এই সিরিজে উপেক্ষিত বলতে হচ্ছে। পরিসংখ্যান মানে তো শুধু তার একটি পাতা উল্টে দেখা নয়।

র‍্যাঙ্কিং আফগানদের এগিয়ে রাখছে ঠিক। কিন্তু দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ের অধ্যায়টা দেখলে সেখানে বাংলাদেশের শতকরা শতভাগ সাফল্য হেসে কথা বলছে। ক্রিকেটের সবচেয়ে ক্ষুদ্র এই সংস্করণে মাত্র একবারই অবশ্য লড়েছে দুই দল। বাংলাদেশের মাটিতে ২০১৪ টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপে। যে ম্যাচে নতজানু ভাবে বাংলাদেশের কাছে আত্মসমর্পনই করে আফগানরা। আগে ব্যাট করতে নেমে অলআউট হয়ে যায় মাত্র ৭২ রানে। দেশটির টি-টুয়েন্টি ইতিহাসে যা সবচেয়ে কম রানে অল আউট হওয়ার লজ্জা হয়ে আছে।

টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম পর্বের সেই প্রথম ম্যাচটিতে ৯ উইকেটে জেতে বাংলাদেশ। যা আবার টাইগারদের টি-টুয়েন্টি ইতিহাসে উইকেটের দিক থেকে সবচেয়ে বড় জয় হিসেবে লেখা। কিন্তু এইসব বিষয়কে কে মাথায় আনছে? পরিসংখ্যানের এই পাতাকে বরং মিথ্যার ‘কিং’ হিসেবেই সবাই স্বীকৃতি দিচ্ছে।

যদি তাই সত্যি হয়, তবে আরেকটা পাতা উল্টানো যাক। এবছর দুটি মাত্র টি-টুয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে আফগানিস্তান। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুটিতেই জিতেছে দলটি। তার আগের বছরে ফিরলে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের রমরমা সাফল্য। বড় দল ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হয়ে আবার ডানা মিলতে ব্যর্থ।

আর বাংলাদেশ? নিকট অতীতে নিদাহাস টি-টুয়েন্টি সিরিজে স্বপ্ন তাড়িত টাইগারদের পারফরম্যান্স। যেখানে শ্রীলঙ্কার মাটিতে শ্রীলঙ্কাকে বিদায় করে ত্রিদেশীয় সিরিজটির ফাইনাল খেলে লাল-সবুজের দল। টি-টুয়েন্টির যতো ‘না পারা’ অধ্যায়, সবগুলোকে জয় করে মুশফিক-মাহমুদউল্লাহরা। ২১৪ রানের লক্ষ্যকে মামুলি বানিয়ে ফেলে টাইগাররা। শেষ বলে ছক্কা মেরে জয় ছিনিয়ে আনার মতো কাণ্ডও গড়ে সেই সিরিজে। দিনেশ কার্তিক নামক এক অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানের অতিমানবীয় পারফরম্যান্সে ট্রফি মুঠে থেকে বেড়িয়ে যায় ঠিক, কিন্তু ‘বাংলাদেশে ব্র্যান্ড’ নিয়ে কি যে হইচই পড়ে।

সেই ‘বাংলাদেশি ব্র্যান্ড’; যা আরো দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে অবশ্যই নিয়মিত ভালো খেলে। কিন্তু আফগান সিরিজের আগে বাংলাদেশি ব্র্যান্ড নিয়েও আলোচনা নেই। ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এনিয়ে প্রশ্ন করলে সাকিব যেন ভুল শুধরে দেন সাংবাদিকদের। ‘বাংলাদেশি ব্র্যান্ড’ নয়, ভালো খেলাই তাদের একমাত্র চিন্তা যে। তাই পরিসংখ্যানের এই অধ্যায়কেও তো মিথ্যাই বলতে হবে। সবমিলে দেরাদুন কি তবে পরিসংখ্যান থেকে সত্যিই দূরে দূরে হাঠছে? র‍্যাঙ্কিংয়ে আফগানিস্তান এগিয়ে। দেশে থাকতেই তাই সাকিব দলটিকে ফেভারিট ঘোষণা করেছেন। তার ওপর দলটির বিপক্ষে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচটাও বাজে ভাবে হেরেছে বাংলাদেশ। যেখানে লড়াই করতে পারেনি টাইগাররা। এখন মূল ম্যাচ নিয়ে ভাবনা। যেখানে রশিদ খান ভয় কাটানোর চ্যালেঞ্জ টাইগারদের। মুজিব উর রহমানকে যে বাংলাদেশও খেলতে পারে প্রমাণের দায় তা। আফগান ডাকাবুকো ব্যাটসম্যানদের বেঁধে রাখার চ্যালেঞ্জ মোস্তাফিজ বিহীন টাইগার বোলিং ইউনিটের।

সাকিব আল হাসান বলে দিচ্ছেন, ‘সবদিকেই ফোকাস রাখতে হবে। সব বিভাগেই ভালো খেলতে হবে। কারণ ওদের দলটা অনেক ভালো। স্বাভাবিকভাবেই আমাদের সেরা খেলাটা দিয়ে জিততে হবে।’ ওদিকে বাংলাদেশের সামর্থ্য ভালো করেই জানা আফগান অধিনায়ক আসগর স্ট্যানিকজাইয়ের। তাই সেরাটা দেওয়ার প্রত্যয় মিলেছে। বাংলাদেশের মতো জয়টাও তাদের একমাত্র লক্ষ্য।

আসল সিরিজে তাই সাকিবদের প্রমাণের অপেক্ষা।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে