ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

তরুণ ভোটার টার্গেটে তারকাদের টানছে আ’লীগ

রাজনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০১৮ জুন ০১ ১৫:১২:১২
তরুণ ভোটার টার্গেটে তারকাদের টানছে আ’লীগ

সম্প্রতি পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের এক ঘোষণার পর সেটি আরও স্পষ্ট হয়েছে। গত মঙ্গলবার একনেক বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘জাতীয় ক্রিকেট দলের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফী মোর্ত্তোজা এবং টেস্ট ও টি-২০ দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।’

এ সময় পরিকল্পনামন্ত্রী মাশরাফী-সাকিব যে দলের হয়েই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুন না কেন, তাদের ভোট দেয়ার আহ্বান জানান।

এরপর থেকে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় মাশরাফী-সাকিব ভক্তরা আলোচনা-সমালোচনায় মেতে উঠেছেন। কেউ তাদের পক্ষে মত দিচ্ছেন, কলুষিত রাজনীতিকে পরিশুদ্ধ করতে তাদের মতো লোকের দরকার আছে।

আবার অনেকেই বলছেন, তারা জাতির সম্পদ। এখনই বিতর্কিত এই পেশায় আসা উচিত হবে না। তা ছাড়া সামনে বিশ্বকাপ। তার আগেই নির্বাচন করা ঠিক হবে না।

তবে এই দুই ক্রিকেটার এখনও তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেননি। অবশ্য মাশরাফী বলেছেন, পরিকল্পনামন্ত্রীর ঘোষণা সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না। কিন্তু, মাশরাফীর বাবা আবার সাংবাদিকদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী এ ধরনের প্রস্তাব দিলে তাদের পক্ষে না করা সম্ভব হবে না।

এরপর ভারত সফর নিয়ে গত বুধবার গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ-সংক্রান্ত একটি প্রশ্নের জবাব দেন।

তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর সবদেশেই তারকারা নির্বাচনে নমিনেশন পান, এটা নতুন কিছু না। তারা (খেলোয়াড়) আমাদের দেশের জন্য সম্মান নিয়ে আসছেন। খেলাধুলাকে ভালো অবস্থায় নিয়ে গেছেন। তাদের আকাঙ্ক্ষা হলে নির্বাচন করতে পারেন।’

ক্ষমতাসীন দলটির নীতি-নির্ধারকও বলছেন, মাশরাফী-সাকিবরা বেশ জনপ্রিয়। নির্বাচনে এলে ভালো করবেন। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেও তারকাদের নির্বাচনে অংশ নেয়ার রেওয়াজ আছে। সেটি তারাও ভালো করেই জানেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলের একাধিক বৈঠকে নেতাদের উদ্দেশে বলেছেন, এবার আমাদের প্রধান টার্গেট তরুণ ও নারী ভোটার। বিশেষ করে ফার্স্টটাইম ভোটার। এজন্য তারুণ্যনির্ভর এবং তরুণদের কাছে জনপ্রিয় ও উইনেবল প্রার্থীকে মনোনয়ন দেবে আওয়ামী লীগ।

তবে বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সম্পাদকমণ্ডলীর সভা শেষে জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের মনোনয়ন বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মাশরাফী-সাকিবদের বিষয়ে এই মুহূর্তে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। সাকিবের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। বিশ্বকাপের আগে নির্বাচন কিংবা রাজনীতি নিয়ে তিনি কোনো চিন্তা করছেন না।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রার্থী মনোনয়নে এবার কিছু চমক থাকবে। সেটি এখনো কোনো চূড়ান্ত রূপ নেয়নি। সংস্কৃতি, ক্রীড়া ও গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট অনেকের আবেদন আছে, আগ্রহ আছে। এগুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। আমরা যাকেই মনোনয়ন দেব, তাকে অবশ্যই উইননেবল হতে হবে। এদের সবার নামের তালিকা নেত্রীর কাছে রয়েছে।’

এর আগে দশম জাতীয় সংসদে নেত্রকোনা থেকে নির্বাচিত হয়ে যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন এক সময়ের মাঠ কাঁপানো তারকা ফুটবলার আরিফ খান জয়।

মানিকগঞ্জ-১ আসন থেকে নির্বাচিত হন টেস্ট ক্রিকেট দলের প্রথম অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয়। এ ছাড়া মানিকগঞ্জ থেকে নির্বাচিত হয়েছেন জনপ্রিয় ফোকশিল্পী মমতাজ বেগম।

এ ছাড়া নবম জাতীয় সংসদে নারায়ণগঞ্জ থেকে নির্বাচিত হন এক সময়ের তুমুল জনপ্রিয় অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী। একই সংসদে সদস্য ছিলেন অভিনেত্রী তারানা হালিম, তিনি বর্তমানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী।

এর বাইরে প্রখ্যাত সাংবাদিক নেতা ইকবাল সোবহানকে আওয়ামী লীগ ফেনী থেকে মনোনয়ন দিয়েছিল। যদিও তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে শেষ পর্যন্ত সফল হতে পারেননি। পরে অবশ্য তাকে প্রধানমন্ত্রী তার তথ্য উপদেষ্টা করেছেন।

তরুণদের আকৃষ্ট করতেই আওয়ামী লীগ তারকাদের বেছে নিচ্ছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘মাশরাফী-সাকিব এখন শুধু ক্রিকেটার নন, রীতিমত সেলিব্রেটি। আমাদের দেশে বিগত দুই সংসদে অনেক তারকা নির্বাচিত হয়েছেন। একাধিকজন মন্ত্রীও হয়েছেন। আগামী সংসদ নির্বাচনেও তারাকারা মনোনয়ন চাইলে দল গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবে।’

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে