ঢাকা, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

শঙ্কায় বাড়ি ফেরা

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০১৮ মে ৩১ ১১:৫০:৩১
শঙ্কায় বাড়ি ফেরা

টিকিটের বাড়তি দাম, পরিবহন সংকট, চলাচল অযোগ্য রাস্তা, দীর্ঘ যানজট, ট্রেন ও লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই, আসন সংকট, প্রতিকূল আবহাওয়া ইত্যাদি ঝুঁকি নিয়ে মানুষকে ফিরতে হয় বাড়ি। এরপরও তারা বাড়ি ফেরে। এবারও ফিরবে। কিন্তু এবারের বাড়ি ফেরা কেমন হবে?

প্রতিবারের মতো এবারও তো সরকার ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের তরফ থেকে বলা হচ্ছে তারা যাত্রী ভোগান্তি কমানোর ব্যবস্থা নিচ্ছেন, পর্যাপ্ত বাস, ট্রেন, লঞ্চের ব্যবস্থা করছেন। এমনকি বিমানেও অতিরিক্ত ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রতিদিনই বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করে বলছেন, এবার যাত্রীদের কোনো ভোগান্তি হবে না। মন্ত্রীর সে কথায় কি আস্থা রাখতে পারছেন যাত্রীরা?

যাত্রীদের স্বার্থ রক্ষাকারী বেসরকারি সংগঠন যাত্রী কল্যাণ সমিতি বলছে, ঈদযাত্রার জন্য সড়ক রেল ও নৌপথ এখনো প্রস্তুত নয়। সড়ক-মহাসড়কের বেহাল দশার কারণে এবারের ঈদযাত্রায় ভোগান্তির আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া দুর্যোগপূর্ণ বর্ষা মৌসুমে উত্তাল নৌপথে যাতায়াতের ঝুঁকিও রয়েছে। রেলপথে মেয়াদোত্তীর্ণ ইঞ্জিন, কোচ ও ঝুঁকিপূর্ণ রেলপথে অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে সিডিউল বিপর্যয়ের শঙ্কাও করছেন সমিতির নেতারা। তারা বলছেন, সারা দেশে ঈদযাত্রার বহরে ৫ কোটি যাত্রীর যাতায়াত সামাল দেওয়ার জন্য প্রস্তুত নয় সড়ক রেল ও নৌপথ।

গতকাল বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত ‘ঈদ যাত্রায় দুর্ভোগ : নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সংগঠনের পক্ষ থেকে এ আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ভাঙাচোরা সড়ক, দীর্ঘ যানজট এবং বাসের ট্রিপ সংখ্যা ঠিক রাখতে চালকের বেপরোয়া গতির কারণে দুর্ঘটনা ও দুর্ভোগের আশঙ্কা মাথায় নিয়েই প্রতিবছরের মতো এবারও ঈদে ঘরমুখো হতে হবে যাত্রীদের। তিনি বলেন, এবারের ঈদে ঢাকা থেকে ১ কোটি ১৫ লাখ এবং সারা দেশে এক জেলা থেকে আরেক জেলায় যাতায়াত করবে প্রায় ৩ কোটি ৮৫ লাখ যাত্রী। বিশাল সংখ্যক এ যাত্রীর চাপ সামাল দেওয়ার মতো গণপরিবহন এবং রাস্তা আমাদের নেই। মোজাম্মেল হক দাবি করেন, দেশের ৪০ শতাংশ সড়ক-মহাসড়কের অবস্থা বেহাল।

এদিকে ঈদে সড়ক পথের যাত্রীদের জন্য বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে গতকাল বুধবার থেকে। তার আগের দিন গত মঙ্গলবার থেকে বরিশালে লঞ্চের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়। শুক্রবার থেকে শুরু হবে ট্রেনের টিকিট বিক্রি। সকাল ৮টা থেকে ১০ জুনে চলাচলকারী ট্রেনগুলোর অগ্রিম টিকিট বিক্রি হবে। এ ছাড়া ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ঘরমুখো যাত্রীদের ভিড় সামাল দিতে বিমান পরিবহন কোম্পানিগুলোও দেশের বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ রুটে অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, এবার বর্ষা মৌসুমে ঈদ উৎসব পড়ে যাওয়া যাত্রী ভোগান্তির আশঙ্কা বেড়ে গেছে। বৃষ্টি হলে সড়কে যানবাহনের গতি কমে যায়। তাছাড়া সড়ক-মহাড়কের অনেক জায়গা এখনো চলাচল অনুপোযোগী। ফলে দীর্ঘ যানজটের আশঙ্কা তো রয়েছেই।

তিনি বলেন, নৌপথের যাত্রীরা এবার সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকবেন-যদি না সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তর সঠিকভাবে নৌপথের ঈদযাত্রা মনিটরিং না করে। কারণ, প্রতিবছরই ঈদযাত্রায় লঞ্চগুলো অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই করে আর পুরনো লক্কড়-ঝক্কড় লঞ্চকে রং করিয়ে নৌরুটে নামানো হয়। ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে এসব করা হয় অতি মুনাফার লোভে। এটা বন্ধ করতে হবে। সেই সঙ্গে নৌ ও সড়কপথে যাত্রী ভাড়া নিয়েও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। কারণ প্রতিকূল আবহাওয়া ও সড়কের বিদ্যমান সংকটের সুযোগ নেয় বাস ও লঞ্চ মালিকরা। এটা সরকারকে কঠোর হস্তে দমন করতে হবে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে