ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

‘মাশরাফি-সাকিব যদি নির্বাচন করেন, সেটা হবে তাঁদের জীবনের চরম ভুল’

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০১৮ মে ৩০ ১৬:৩৬:৩১
‘মাশরাফি-সাকিব যদি নির্বাচন করেন, সেটা হবে তাঁদের জীবনের চরম ভুল’

গত কয়েক বছর ধরেই গুঞ্জন ছিল খেলার মাঠ থেকে আওয়ামী লীগের হয়ে মাশরাফির আগামী নির্বাচনে অংশ নেয়ার। নিজ এলাকা নড়াইলের একটি আসন থেকে তিনি ভোটে দাঁড়াতে পারেন বলে প্রচার ছিল।

এই গুঞ্জনের মধ্যে মঙ্গলবার পরিকল্পনামন্ত্রী জানিয়ে দেন মাশরাফি ও শাকিব ভোটে দাঁড়াচ্ছেন। এই ক্রিকেট তারকাদেরকে ভালো মানুষ উল্লেখ করে তাদেরকে ভোট দেয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

মন্ত্রী বলেন, আগামী নির্বাচনে মাশরাফি ও সাকিব ভোট করতে পারেন। তবে কোন দল থেকে ভোট করবেন তা বলা যাবে না। তারা দু’জনই ভালো মানুষ। দেশের জন্য তাদের অবদান অনেক। যে দল থেকেই এরা দু’জন ভোটে দাঁড়াক আপনারা সবাই তাদের ভোট দেবেন।

মোস্তফা কামাল অবশ্য নিজে থেকে মাশরাফির ভোটে দাঁড়ানোর কথা বলেছেন। আর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সাকিবের প্রসঙ্গ তুলেছেন। মাশরাফির নিজ এলাকা নড়াইল এবং সাকিবের মাগুরা। তবে তারা নিজ নিজ এলাকা থেকে দাঁড়াবেন নাকি রাজধানী বা অন্য কোথাও লড়াই করবেন, সেটা জানাননি পরিকল্পনামন্ত্রী।

পরিকল্পনা মন্ত্রীর এমন মন্তব্যে ক্রীড়াঙ্গন তো বটেই, গোটা দেশেই আলোড়ন তুলেছে। রাজধানী ঢাকা ছাপিয়ে মাশরাফি আর সাকিবের সংসদ নির্বাচন করার বিষয়টা মুহূর্তেই রীতিমতো টক অফ দ্য কান্ট্রি হয়ে যায়। সর্বত্র এখন আলোচনার বিষয় মাশরাফি-সাকিব কি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন অনেকে। অনেকে বলছেন ভারতের কিংবদন্তী ক্রিকেটাররা সংসদে প্রতিনিধিত্ব করতে পারলে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনকে যারা বিশ্ব দরবারের অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন তারা কেন পারবেন না? কেউ কেউ দ্বিমতও পোষণ করছেন।

তাদের যুক্তি হচ্ছে ক্রিকেট বর্তমানে এদেশের মানুষের একটি আবেগেরও জায়গা। এটিই একমাত্র ক্ষেত্র যেখাবে জাতীয় ঐক্যমত্য সম্ভব। সবাই ক্রিকেট ভালোবাসে। ক্রিকেটাররা যদি রাজনীতিতে জড়িয়ে যান তবে ক্রিকেটের প্রতি এক ধরনের অনীহা চলে আসতে পারে।

তাদের মতে মাশরাফি যখন আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন নিবেন তখন সে আওয়ামী লীগের লোক হিসাবেই ভোটারদের কাছে পরিচিত হবেন ভোটের মাঠে। সে ক্ষেত্রে আওয়ামী বিরোধী রাজনৈতিক দলের অনেকে তাকে খেলার মাঠে ভালোবাসলেও রাজনীতির মাঠে পছন্দ করবে না বলে মন্তব্য করেন অনেকে।

সাইফুদ্দিন আহমেদ নান্নু নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, শাকিব, মাশরাফি চাইলে অবশ্যই নির্বাচন করবে, শুধু নির্বাচনই নয় তারা যদি মনে করে ফুলটাইম পলিটিক্স করবে তাও করবে। যে দল পছন্দ,সে দলেরই টিকিটই নেবে। কোন সমস্যা নেই।

তবে তারা ক্রিকেটের মাধ্যমে দেশকে যা দিচ্ছে,সেই দেয়ার কাজটা আগে শেষ করুক। ক্রিকেট থেকে অবসরটা নিক, তারপর না হয় রাজনীতিতে নামুক,ভোট করুক।

কিন্তু দয়া করে বিশ্বকাপের আগে তাঁদেরকে চ্যাংদোলা করে ভোট আর রাজনীতির মাঠে নামাবেন না,মাথায় ভোট,রাজনীতির পোঁকাটা পুশ করবেন না। ঠাণ্ডা মাথায় খেলতে দিন। ওদের খেলোয়াড়ী জীবন অনন্তকালের না। কিন্তু ভোট,রাজনীতি একপ্রকার অনন্তকালেরই, যথেষ্ট সময় আছে ওদের হাতে।

অনুবাদক ও সাংবাদিক রওশান জামিল চৌধুরী লিখেছেন, ‘বাজারে গুঞ্জন মাশরাফি-সাকিব জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে পারেন। যদি তা করেন, সেটা হবে তাঁদের জীবনের চরম ভুল। বীর হিশেবে এ দুজন দলমত নির্বিশেষে দেশবাসীর আকুণ্ঠ ভালবাসা পেয়েছেন। দলীয় রাজনীতিতে জড়ালে সেই নিষ্কলুষ ভাবমুর্তি কলঙ্কিত হবে।’

সাংবাদিক রওশান জামিল চৌধুরী লিখেছেন, ‘বাজারে গুঞ্জন মাশরাফি-সাকিব জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে পারেন। যদি তা করেন, সেটা হবে তাঁদের জীবনের চরম ভুল। বীর হিশেবে এ দুজন দলমত নির্বিশেষে দেশবাসীর আকুণ্ঠ ভালবাসা পেয়েছেন। দলীয় রাজনীতিতে জড়ালে সেই নিষ্কলুষ ভাবমুর্তি কলঙ্কিত হবে।’

খন্দকার নিমি আহমেদ লিখেছেন, মাশরাফি যদি বেকুব আর ক্ষমতালোভী হয় তাহলে নির্বাচনে অংশ নিবে। দলমত নির্বিশেষে মানুষের ভালবাসা আর শ্রদ্ধার যে বিরাট জায়গা সৃষ্টি হয়েছে, সেটা নিশ্চিতভাবে হারাবে। সুতরাং জীবনে যদি কোন ভুল করে থাকে, তাহলে এই ভুলটা করবে। মনেরাইখো গুরু তুমি খেলার মাঠের রাজা রাজনিতির মাঠে না।

আতিকুর রহমান সামি লিখেছেন, যদি এর সত্যতা থেকে থাকে, তবে এটা হবে মাশরাফির জীবনের সবচেয়ে বড় ভূল! ক্রিকেট মাঠ আর রাজনীতির মাঠ যে এক নয় এটি জেনে রাখা জরুরি। যেই বাঙালি মাথায় তুলে নাচাতে পারে, সেই বাঙালি আবার পান থেকে চুন খসলেই মাটির সাথে মিশাতে জানে।

হাদিউজ্জামান মাছুম লিখেন, মাশরাফির ইমেজ নষ্ট করতে তারা মরিয়া !! দাওয়াত দিয়ে নমিনেশন ধরিয়ে দিতে চায়। মাশরাফির উচিত যত দ্রুত সম্ভব তার প্রতিক্রিয়া তুলে ধরা। একজন খেলোয়াড় মাশরাফি আর একজন রাজনীতিবিদ মাশরাফির ইমেজ, তার প্রতি জনসাধারনের ভালোবাসা, সমর্থন কখনোই এক হবে না। এটাই স্বাভাবিক।

এমদাদ হোসেন শরীফ লিখেছেন, অাগামী নির্বাচনে মাশরাফি ও সাকিব অংশগ্রহণ করবে, নিউজে এমনটা দেখলাম। চোখের সামনে নির্বাচন দেখতেছি। মাশরাফি ও সাকিব নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করল। সংসদ সদস্য, মন্ত্রীও হয়ে গেলেন।

উফফ, তারপর অার কিছু ভাবতে পারছিনা। ভাবনার জগৎ ছোট হয়ে অাসছে। চারপাশে সব রাজনীতিবিদ দেখছি, মানুষ না। মাশরাফি, সাকিবদের ও না…

এদিকে অনেকে মাশরাফিকে নির্বাচনে আসার পক্ষে মত দিচ্ছেন। তারা বলছেন, খেলার মাঠে তারা যেমন সফল, রাজনীতির মাঠেও তারা সফল হবে। রাজনীতিতে ভালো মানুষ প্রয়োজন।

বিনোদন সাংবাদিক এএইচ মুরাদ লিখেছেন, অনেকেই বলবে মাশরাফিকে কেন নির্বাচন করতে হবে। ভালো মানুষের জন্য নির্বাচন নয়, এমন অনেক কথা। আমি বলি রাজনীতিতে ভালো মানুষের আসতে হবে। তারাই চোর বাটপারদের রুখে দেবে। ভালো মানুষরা পিছিয়ে থাকলে একদিন সব নষ্টদের দখলে চলে যাবে। দল-বল বুঝি না আমাদের ভালো নেতা দরকার। জয় হোক মাশরাফির।

মাইনুল ইসলাম শুভ লিখেছেন, মাশরাফি নির্বাচনে অংশ নিলেও দোষের কিছু দেখি না। ভালো মানুষদের সব জায়গাতেই প্রয়োজন। এখানে স্বচ্ছ মানুষ না আসলে বদিরাই অধিকর্তা হয়ে থাকবে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে