‘হামি’ দেখে নিজেদের খুঁজে পেয়েছেন স্কুলের অধ্যক্ষেরা
এ কে ঘোষ মেমোরিয়ালতরুণ কুমার গুহছবিটা দেখে আমি মুগ্ধ। ইদানীং, খবরের কাগজে কত রকম ঘটনার কথা চোখে পড়ে। শহরেরই এক নামকরা স্কুলের ঘটনার প্রতিচ্ছবি দেখতে পেলাম ‘হামি’র মধ্যে। স্কুলে এই ধরনের ঘটনা ঘটলে প্রাপ্তবয়স্করা মিডিয়া এবং দোষীর শাস্তি নিয়ে এত ব্যস্ত হয়ে পড়েন, যে বাচ্চাটার মানসিক অবস্থার কথা আমরা ভুলেই যাই। এখন তো অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দেওয়াটাই রীতি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বাবা-মা’দেরও কিছু দায়িত্ব থাকে। বেশিরভাগ সময় দেখা যায়, তাঁরা দু’জনেই নিজেদের কাজ নিয়ে এত ব্যস্ত যে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে কোনওরকম যোগাযোগ সম্ভব হয়ে ওঠে না। ছেলেমেয়েকে কো-এড স্কুলে ভর্তি করার পরও ছেলে-মেয়ের বন্ধুত্বটা খোলা মনে মেনে নিতে পারেন না অনেকে। সারাক্ষণ একটা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। তবে ছবিটা শিক্ষকদেরও দেখা উচিত। তাঁদেরও ধৈর্য বড্ড কমে যাচ্ছে। আমাদের সময় স্কুলের শিক্ষকরাই ছিলেন রোল মডেল। কত বড় বড় সমস্যা অভিভাবক কিংবা মিডিয়ার হস্তক্ষেপ ছাড়াই তাঁরা মিটিয়ে ফেলতেন। ছবিতে অপরাজিতা আঢ্যের চরিত্রটার কথা আলাদা করে বলতেই হয়। শিক্ষক হিসেবে বলতে চাই, ‘হামি’তে যে আমাদের ইতিবাচক আলোয় দেখানো হয়েছে, তার জন্য আমি কৃত়জ্ঞ। মিডিয়াও যদি কিছু কিছু ঘটনার প্রতি আরেকটু সংবেদনশীল হতে পারে, তাহলে বোধহয় বাচ্চাদের পক্ষে খুব ভাল হয়।
পাঠ ভবন কৃতিকা সেনগুপ্তছবিটা দেখে আমার ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল। আমিও কো-এড স্কুলে পড়াশোনা করেছিলাম। অনেক দৃশ্য দেখে ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠছিল। ‘হামি’তে ব্রত আর তিয়াসার ঘটনাটা কিন্তু বাচ্চাদের মধ্যে খুবই কমন। বাচ্চারা তো সাত-পাঁচ ভেবে কাজ করে না। বরং তারা তাদের অনুভূতিগুলো নির্ভয়ে প্রকাশ করে। আমাদের স্কুলে এগুলোকে কখনও আটকাই না আমরা। বরং উৎসাহ দিই। বাবা-মা’রা তো দুশ্চিন্তা করবেনই। তাঁদের বোঝানোর দায়িত্বও আমাদের কাজের অঙ্গ হয়ে উঠেছে। বাচ্চারা যে স্কুলে নিরাপদ, সেই গ্যারান্টি আমাদেরই দিতে হয়। তবে আমি বাবা-মা’দের দোষ দিই না। এখন তো সময়টা খুব খারাপ। তাই হয়তো তাঁরা মাঝে মাঝে ওভারপ্রোটেক্টিভ হয়ে পড়েন। কিন্তু তাতে যেন বাচ্চাদের নিষ্পাপ শৈশব এবং স্বতঃস্ফূর্ততার ক্ষতি না হয়, সেটা বাবা-মা’দের বোঝা উচিত। দু’টোর মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখাটা খুবই জরুরি। নয়তো, আমরা এমন একটা প্রজন্ম গড়ে তুলব যারা সারাক্ষণ সন্দেহ করবে এবং সংকীর্ণমনা হবে। ভাগ্য ভাল যে, আমাদের স্কুলে বেশিরভাগ অভিভাবক আমাদের উপর আস্থা রাখেন। সময়টা এমনই যে স্কুলের সাহায্য না পেলে এখন কমবয়সি বাবা-মা’দের সন্তান বড় করা খুব মুশকিল হয়ে উঠেছে। দেখে ভাল লাগল যে, স্কুল নিয়ে একটা ইতিবাচক বার্তা দিতে পেরেছে ছবিটা। জটিল সমস্যাগুলোর কীভাবে সরল সমাধান করা যায়, সেটা দেখিয়েছে। তবে মানুষ কতটা সেই ইতিবাচক বার্তা পেলেন, সেটা ভবিষ্যৎই বলবে।
গোখেল মেমোরিয়াল গার্লস স্কুলইন্দ্রাণী মিত্রছবিটা বিনোদনমূলক হলেও একটা বার্তা রয়েছে। সে জন্যই দেখতে ভাল লাগল। অধ্যক্ষ হিসেবে অনেক জায়গায় নিজের সঙ্গে মেলাতে পারছিলাম। তবে ছবিতে যে ধরনের সমস্যাগুলো দেখানো হয়েছে, সেই রকম সমস্যার সম্মুখীন আমায় কখনও হতে হয়নি। আশা করি, ভবিষ্যতেও হবে না। তবে সব স্কুলে নানা ধরনের সমস্যা থাকে। আমাদের স্কুলেও রয়েছে। আমার গোটা টিম এবং ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে মিলে আমি সেগুলো মেটানোর চেষ্টা করি। ছবিটা দেখার পর অনেকের সঙ্গে কথা হল। তাদের মধ্যে অনেকে আবার আমার সমসবয়সিও নয়! তারা হয়তো আমারই ছাত্রী। তারাও ছবিটা দেখে বলছে, ‘আমরা তো এভাবে বড় হইনি। এরকম সমস্যা আমাদের সময় ছিল না’! দেখে ভাল লাগছে যে, অভিভাবকদের ভাবতে শেখাচ্ছে ‘হামি’। সেটাই ছবিটার সাফল্য। আমাদের সময় মানুষের ধৈর্য অনেক বেশি ছিল। এখন সেটা হারিয়ে যাচ্ছে। বাচ্চাদের সামনে আমরা কী বলছি, তা নিয়ে আমাদের আরও সাবধানী হওয়া উচিত। পুরুষ মানেই যে খারাপ কিংবা বিপজ্জনক, সেটা বোঝানোটা ঠিক নয়। বাচ্চারা কিন্তু অনেক পরিণত কথোপথনও ধরে ফেলে। তাই এমন পরিবেশে ওদের বেড়ে ওঠার সুযোগ করে দিতে হবে, যাতে শৈশবের সারল্যটা নষ্ট না হয়ে যায়।
বালিগঞ্জ শিক্ষা সদনসুনীতা সেন‘হামি’ দেখে মনে হল, অন্তত কেউ তো শিক্ষকদের দিকটা বুঝতে পারছেন। মন ভরে গিয়েছে। ছবিটা দেখে নিজের সঙ্গে মেলাতে পারছিলাম। প্রায় রোজই আমাদের কোনও না কোনওভাবে বিক্ষিপ্ত অভিভাবকদের সম্মুখীন হতে হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে পরিস্থিতি অস্বাস্থ্যকরও হয়ে ওঠে। স্কুল আর অভিভাবকদের মধ্যে ফাঁকটা এখন বেড়ে গিয়েছে। আগে স্কুল যা বলত, সেটাই শেষ কথা ছিল। কিন্তু এখন অনেক সময়ই স্কুলের সিদ্ধান্তকে মেনে নেওয়া হয় না। সেটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। ছবিটা দেখে হয়তো অভিভাবকরা শিক্ষকদের গুরুত্ব বুঝবেন। আমরা কিন্তু বাচ্চাদের নিজের সন্তানের মতোই ভালবাসি। ওভারপ্রোটেক্টিভ হতে গিয়ে আমরা যেন তাদের স্বাভাবিক অনুভূতিগুলোতে বাধা না দিই। তবে এ-ও বলব, বাচ্চাদের ভালবাসার পাশাপাশি শাসনটাও প্রয়োজন। মাঝে মাঝে তাদের ‘না’ শোনাটা শিখতে হবে। বাবা-মা’রা অনেক সময় বাচ্চাদের বেশি সময় দিতে পারেন না বলে, তাদের সব আবদার মিটিয়ে দেন। সেটা একদমই ঠিক নয়। এমনভাবে ভারসাম্যটা বজায় রেখে চলতে হবে যাতে বাচ্চারা সুস্থ-স্বাভাবিকভাবে বড় হয়ে ওঠে।
সুত্র-এবেলা
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- IPL নিলামে রেকর্ড বিড, ইতিহাস গড়লেন তাসকিন ও নাহিদ রানা, দেখেনিন সাকিব মুস্তাফিজের অবস্থান
- ব্রেকিং নিউজ: শান্ত’র অকালমৃত্যুতে সারা দেশে নামলো শোকের ছায়া
- জাকের-অঙ্কনের ঝড়ো ব্যাটিং ও হাসান মাহমুদ-নাহিদ রানার দুর্দান্ত বোলিংয়ে জয়ের পথে বাংলাদেশ
- চরম দু:সংবাদ: নেমে এলো শোকের কালো ছায়া মারা গেলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক
- IPL নিলামে রেকর্ড বিড, বাংলাদেশের নাহিদ রানার বাজিমাত
- ২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপ নিশ্চিত করলো চার দল, বাদ পড়তে পারে ব্রাজিল, দেখেনিন আর্জেন্টিনার অবস্থান
- IPL নিলাম: ২ কোটি বা ৫ কোটি নয় বিশাল পারিশ্রমিকে যে দলে নাহিদ রানা
- লিটন ও জাকের আলির দুর্দান্ত ব্যাটিং শেষ হলো বাংলাদেশ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার ম্যাচ, দেখেনিন ফলাফল
- IPL নিলাম: নাহিদ রানার কাছে পাত্তা পেল না মুস্তাফিজ, কোটি টাকায় দল পেলেন নাহিদ রানা
- শেষ হলো বাংলাদেশ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার ম্যাচের প্রথম দিনের খেলা, দেখেনিন সর্বশেষ ফলাফল
- ব্রেকিং নিউজ: তামিমকে অধিনায়ক করে ১৪ সদস্যের দল ঘোষণা করলো বিসিবি
- চরম উত্তেজনায় শেষ হলো বাংলাদেশ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার ম্যাচ, দেখেনিন ফলাফল
- আইপিএল নিলামের শর্টলিস্ট প্রকাশ, দেখেনিন দেখেনিন বাংলাদেশ থেকে নিলামে যাদের নাম উঠছে
- IPL নিলাম: চেন্নাই সুপার কিংসে সাকিব ও মুস্তাফিজ, কলকাতাতে তাসকিন, দেখেনিন নাহিদ রানা যে দলে
- IPL ২০২৫ : নিলামে ঝড় তুলেছেন তাসকিন,দেখেনিন সাকিবের অবস্থান